বাসন্তী, 5 অগাস্ট : কয়েকবছর আগেও হাত দুটি এগিয়ে আসত ৷ বায়না করত কোলে নেওয়ার ৷ রাতে বাবার হাতে ভাত খেয়ে মায়ের কোলে শুয়ে রূপকথার গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যেত সে ৷ আজও সেই একইভাবে এগিয়ে আসে হাত দুটো ৷ তবে, স্নেহের পরশ পাওয়ার জন্য নয় ৷ আজ হাত দুটি ওঠে বাবা-মা'কে মারার জন্য ৷ কোনও সময় আবার ছেলের কাছ থেকে খুনেরও হুমকি পেতে হয় তাঁদের ৷ এইভাবেই চলছিল বেশ কিছুদিন ৷ এই নিয়ে ছেলেকে কিছু না বললেও মনে আশা নিয়ে তাঁরা ভেবেছিলেন, "এদিনটাও হয়ত কেটে যাবে ৷ ঠিক ও নিজের ভুল বুঝতে পারবেন ৷" কিন্তু, নিজের বাড়িতে ফেরার জন্য ছেলে বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ করতে হবে এটা কখনই ভাবতে পারেননি তাঁরা ৷
হরিদাসী ও কার্তিক নায়েক ৷ বাসন্তী থানার শিবগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা । আপন বলতে নিজেদের একমাত্র ছেলে পরিমল ৷ প্রত্যেক বাবা-মার মতো দু'চোখে স্বপ্ন নিয়ে মানুষ করেছিলেন তাকে ৷ কিন্তু, হয়ত কোনও দিনই তাঁরা ভাবেননি সেই ছেলের বিরুদ্ধে একদিন থানায় যেতে হবে তাদের ৷ দীর্ঘদিন ধরে বাবা-মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠছিল পরিমলের বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ, মূলত সম্পত্তির লোভে সে প্রায়দিনই মদ্যপান করে মারধর করত মা ও বাবাকে ৷ গতকাল তা চরমে ওঠে ৷ পরিমল বাড়ি এসে মায়ের গলা টিপে খুন করতে যায় ৷ কার্তিকবাবু বাধা দিলে তাদের দু'জনকে সে বাড়ি থেকে বের করে দেয় বলে অভিযোগ ৷ নিরুপায় হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে বাসন্তী থানায় অভিযোগ জানায় তাঁরা ৷
হরিদাসী বলেন, "প্রায়দিনই মদ খেয়ে বাড়ি এসে আমাদের মারধর করত পরিমল ৷ গতকাল বাড়িতে এসে ও আমার গলা টিপে ধরে ৷ এরপর আমাদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ৷" দম্পতির অভিযোগের ভিত্তিতে হরিদাসী ও কার্তিকবাবুকে সঙ্গে করে বাড়ি নিয়ে যায় বাসন্তী থানার পুলিশ ৷ আটক করা হয় পরিমলকে ৷ তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ৷ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ৷