নামখানা, 15 জুন : প্রাক বর্ষাতেই শুরু ইলিশের মরশুম । বাঙালির রসনা তৃপ্তি করতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতেই মঙ্গলবার ভোররাত থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে সাগর মোহনায় পাড়ি জমিয়েছে কয়েক হাজার ট্রলার । 14 এপ্রিল থেকে 15 জুন পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে । তারপর দিনই গত কয়েক বছরের আর্থিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে রুপোলি শস্যের খোঁজে বঙ্গোপসাগরে পাড়ি দিল দক্ষিণ 24 পরগনার মৎস্যজীবীরা (trawler started journey in the middle of the sea for catching hilsa fish)।
দিনভর দক্ষিণ 24 পরগনার বিভিন্ন বন্দরগুলিতে প্রস্তুতি চলেছে পুরোদমে । যাত্রার আগে ট্রলারে-ট্রলারে চলছে পুজো । মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, দক্ষিণ 24 পরগনায় ছোট-বড় সব মিলিয়ে প্রায় চার হাজার ট্রলার রয়েছে । অর্ধেক ট্রলার মরশুমের শুরুতে সমুদ্রে পাড়ি দেবে । গত কয়েক বছরে ইলিশ শিকারে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে । সেই কথা মাথায় রেখে এবার প্রথম ধাপে ইলিশের পরিমাণ দেখে তবেই বাকি অর্ধেক ট্রলার সমুদ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রলার মালিকরা । প্রত্যেকটি ট্রলারে থাকবেন 15 জন মৎস্যজীবী ।
আরও পড়ুন : Hilsa Fish: রুপালি শস্যের খোঁজে গভীর সমুদ্র পাড়ি দেবেন মৎস্যজীবীরা, বন্দর গুলিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে
এই বিষয়ে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, "মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই গভীর সমুদ্রে ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে । ইতিমধ্যেই সাগর মোহনায় পাড়ি দিয়েছে বহু মৎস্যজীবীদের ট্রলার । বেশ কয়েক বছর ইলিশ না পাওয়ায় চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে মৎস্যজীবী ও ট্রলার মালিকরা । এবার আশা করছি ভাল ইলিশ হবে । রাজ্যে সঠিক সময়ে প্রবেশ করছে বর্ষা । পাহাড়ের মিষ্টি জল যখন সাগরের মোহনার দিকে আসে, তখন ইলিশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয় । তবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন ট্রলার মালিকেরা । তবে লাভের জন্য অনেকটা লোকসানেই তাঁরা ট্রলার ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন ৷"
মনে আশঙ্কা থাকলেও হাসি মুখে ট্রলার পুজো করে আশায় বুক বেঁধে মাঝ সমুদ্রে পাড়ি দিচ্ছেন বহু মৎস্যজীবী ৷ আশা একটাই, যদি ইলিশ ভাগ্যে লক্ষ্মী আসে ঘরে ৷ ট্রলার মালিক থেকে শুরু করে মৎস্যজীবী ও ইউনিয়ন ৷ সকলেই আশা করছেন গঙ্গা বুড়ি এবার নিশ্চয় হাল ফেরাবে তাঁদের ৷ রুপোলি শস্যে ওঁদের ভাগ্য ফিরলে তবেই তো বাঙালির পাতে পড়বে মাছের রাজা ৷