কুলতলি, 10 ডিসম্বর: রাজ্যে শীতের আগমন হয়েছে সবে দু’দিন ৷ আর তার মধ্যেই সুন্দরবনের লোকালয়ে বাঘের হানা ৷ যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতংক ছড়িয়েছে কুলতলির মইপীঠের উপকূলের ভুবনেশ্বরী গৌড়ের চক এলাকায় ৷ শনিবার সকালে গ্রামবাসীরা নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পায় ৷ তবে, খবর পেয়ে নলগড়া বিট অফিসের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে যায় ৷ পুরো এলাকা গতকাল দুপুরেই জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেছিল বন দফতর ৷ আর রবিবার সকালে সেই জালের একটি অংশ ছেঁড়া অবস্থায় দেখতে পান বনকর্মীরা ৷ ফলে মনে করা হচ্ছে, বাঘটি এখন লোকালয়ের আশেপাশেই রয়েছে ৷ বাঘটিকে ধরতে খাঁচা পাতা হচ্ছে ৷ গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়েছে বন দফতরের তরফে ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে ভুবনেশ্বরী গৌড়ের চক এলাকায় নদীর চড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ বাঘের পায়ের ছাপ দেখে আতংকিত হয়ে পড়ে তারা ৷ তড়িঘড়ির খবর দেয়া হয় বনদফতর ও পুলিশ প্রশাসনকে ৷ খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় বনবিভাগের কর্মীরা ৷ শনিবারে প্রথম পর্যায়ে বন কর্মীরা বাঘের পায়ের ছাপ অনুসরণ করে বোঝার চেষ্টা করছিল সেটি পুনরায় জঙ্গলে চলে গিয়েছে, নাকি লোকালয়ের মধ্যে রয়েছে ৷ সেই সঙ্গে বাড়তি সতর্কতা হিসাবে ওই এলাকায় জঙ্গলের চারপাশে জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় ৷ প্রয়োজনে খাঁচা পাতার কথাও জানায় বন দফতরের আধিকারিকরা ৷
কিন্তু, আজ সকালে জঙ্গলের চারপাশে লাগানো ওই জালের কিছুটা অংশ ছেঁড়া অবস্থায় দেখতে পায় বনকর্মী ৷ বাঘটি দাঁত ও নখের সাহায্যে জালটি কাটার চেষ্টা করেছিল ৷ কিন্তু, তাতে সফল হয়নি বাঘটি ৷ তাই বাঘটি যে এখনও লোকালয়ের আশেপাশেই রয়েছে, তা নিয়ে নিশ্চিত বন দফতর ৷ গ্রামবাসীদের ইতিমধ্যে সতর্ক করেছে বন দফতর ৷ দিনে হোক বা রাতে বাড়ি থেকে খুব প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ না-বের হয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ পাশাপাশি, গ্রামবাসীরা লাঠি হাতে পাহারায় নেমেছেন ৷ রাতের অন্ধকারে বাড়িতে থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে ৷ বিশেষত, বাচ্চাদের একা কোথাও যাতে না-ছাড়া হয়, সেদিকে বাড়তি নজরদারির কথা উল্লেখ করেছে বন দফতর ৷
এ বিষয়ে দক্ষিণ 24 পরগনার বন দফতরের মুখ্য আধিকারিক (ডিএফও ) মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘লোকালয়ে বাঘ ঢোকার খবর পেয়ে ইতিমধ্যেই বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেছে এবং বাঘের পায়ের ছাপটি অনুসরণ করে তার অবস্থান বোঝার চেষ্টা চলছে ৷ জাল দিয়ে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে ৷ প্রয়োজনে ওই জঙ্গলে খাঁচা পাতা হবে ৷’’ ডিএফও জানিয়েছেন, সাধারণত শীতের মরশুমে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী কিংবা খালগুলিতে জল কম থাকার কারণে অনায়াসে জঙ্গল থেকে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে বাঘ ঢুকে যায় ৷ তিনি আশ্বস্থ্য করেছেন, গ্রামবাসীদের ভয়ের কোনও কারণ নেই ৷ দ্রুত বাঘটিকে ধরে গভীর জঙ্গলে ফেরানো হবে ৷
আরও পড়ুন: