নামখানা, ২২ জুন : জীবিকার তাগিদে বাড়ি ছেড়ে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন দাস পরিবারের তিনভাই । দীর্ঘ ৪ বছর ধরে এভাবেই জীবিকার তাগিদে নামখানার গণেশনগরের ২-এর ঘেরির বাসিন্দা শুকদেব দাস, শান্তিরাম দাস ও সুশান্ত দাস কেরালার একটি ট্রলারে কাজ করতেন । এতদিন পর্যন্ত তাঁদের সব ঠিকঠাকই চলছিল ।
২০২১ সালে তাঁরা বিধানসভা নির্বাচনের সময় নিজেদের নাগরিকত্বের অধিকার প্রয়োগ করতে বাড়িতে এসেছিলেন । নিজেদের ভোটদান করে আবারও তিন ভাই পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর কেরালায় । এরপর ৫ মে তাঁরা ট্রলারে করে মাছ ধরার জন্য সমুদ্রে বেরিয়ে যান । সমুদ্রে যাওয়ার আগে তিন ভাই মোবাইলে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন । একটি ট্রলারে করে ১৬ জন মৎস্যজীবী গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলেন । তারপর থেকেই তাঁরা নিখোঁজ ৷ ১৪ মে তারিখে কেরালা উপকূলে আরব সাগরে তৈরি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় তখতে ৷ তার ফলেই কী তাঁদের কোনও হদিশ পাওয়া যাওয়া যায়নি ? বারবার বাড়ি থেকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে কাজের জায়গায় ৷ বলা হয়েছে, দু'দিন-তিনদিন পর ফিরবেন । এভাবেই কেটে গিয়েছে প্রায় দু'মাস ।
আরও পড়ুন...পায়রা ধরতে গিয়ে নিখোঁজ শিশু, পরদিন দেহ উদ্ধার পুকুর থেকে
কিন্তু আজ পর্যন্ত দাস পরিবারের তিন ভাইয়ের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি । কেরালায় কি ঘটেছে, তাও পরিষ্কার নয় দাস পরিবারের কাছে । তাঁরা শুধু শুনেছেন, ওই ট্রলারটির কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি । কেটে গিয়েছে বহুদিন । আজও অন্ধকারে রয়েছেন দাস পরিবারের সদস্যরা । প্রতিবেশীরাও বাকরুদ্ধ ।
এই পরিস্থিতিতে প্রতিবেশীরা প্রতিদিন শুকদেব, শান্তিরাম ও সুশান্তর বাড়িতে এসে খোঁজ নিয়ে যান । আর শেষে তাঁদের দিয়ে যান একরাশ সান্তনা । নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শুকদেব, শান্তিরাম ও সুশান্ত বাড়িতে ফিরবেন, এই আশাতেই আজও দোরগোড়ায় বসে তাঁদের পরিবার ।
পরিবারের বক্তব্য, করোনাকালে তাঁদের কেরলে যাওয়ার কোনও উপায় নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে পরিবারের কাতর আর্জি, সরকার যদি কোনওভাবে সাহায্য করে তাহলে খুবই ভালো হয় ।