মন্দিরবাজার, 30 জানুয়ারি : মন্দিরবাজারের এক নাবালিকাকে অপহরণ ও ধর্ষণ ঘটনার তদন্তে নেমে মন্দির বাজার থানার পুলিশ নারী পাচার চক্রের পর্দা ফাঁস করল । ধৃত পাচার চক্রের দুই পান্ডাকে মুম্বাইয়ের থানে এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে মন্দিরবাজার থানার তদন্তকারী অফিসাররা । ধৃতদের নাম বালেশ্বর গুপ্ত (38) ও রাদিক কুমার যাদব(36) । দুজনেরই বাড়ি ঝাড়খণ্ডে । ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ, নারী পাচার সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ ।
শনিবার ধৃতদের ডায়মন্ড হারবার এসিজেএম আদালতে পেশ করা হবে । পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, বাজার করতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল মন্দিরবাজারের কারবালা এলাকার এক নাবালিকা । 22 জুন থেকে নিখোঁজ হয় সে । নাবালিকার পরিবার মন্দিরবাজার থানাতে লিখিত অভিযোগ করে ।
9 সেপ্টেম্বর বাড়িতে ফোন করে নাবালিকা জানায় মুম্বইয়ে তাঁকে পাচার করা হয়েছিল ৷ নিখোঁজের দিন মন্দিরবাজারে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর কালী মন্দিরের কাছে শাহরুখ নামের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর । মোটা টাকার চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নাবালিকাকে মুম্বই নিয়ে যায় সে । এরপর সালামত নামে এক ব্যক্তির কাছে তাঁকে রাখা হয় । তাঁকে লাগাতার ধর্ষণ করার পাশাপাশি দেহ ব্যবসার কাজে নামানো হয় । পরে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নাবালিকাকে উদ্ধার করে । সেখান থেকেই বাড়িতে ফোন করেন সেই নাবালিকা ৷
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা নাবালিকাকে বাড়ি ফেরত পাঠানোর পর 1 জানুয়ারি মন্দিরবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নাবালিকার বাবা । ঘটনার তদন্তের জন্য সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার বৈভব তিওয়ারির নির্দেশে মন্দিরবাজার থানার এসআই সাকিব সাহাব সহ একটি তদন্তকারী দল গঠন করা হয় । এরপর 7 জানুয়ারি ঢোলাহাট থানার রায়পুর এলাকা থেকে শাহারুক হোসেন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । এবং 8 জানুয়ারি মন্দিরবাজারের দাদপুর এলাকা থেকে সালামত গায়েনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ।
আরও পড়ুন : দেড় বছর পর্যন্ত কৃষি আইন স্থগিত করতে এখনও রাজি কেন্দ্র : প্রধানমন্ত্রী
দুই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করে ৷ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে মিঠু নামে এক দুষ্কৃতীর নাম জানতে পারে পুলিশ । পরে হাওড়ার সাঁকরাইলের ধূলাগড় থেকে মিঠু নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । জেরায় মিঠু জানায়, নারী পাচারের একটি বড় চক্র সক্রিয় রয়েছে মুম্বইয়ে । সেই চক্র পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিলাদের প্রাচার করে বিক্রি করে দেয় । সারা ভারত জুড়েই এই চক্র জাল বিছিয়ে রেখেছে বলেও জানতে পারে পুলিশ । এরপর কালবিলম্ব না করে মন্দিরবাজার থানার 5 সদস্যের তদন্তকারী দল 24 জানুয়ারি মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় । এরপর মহারাষ্ট্র পুলিশের সহযোগিতায় গত মঙ্গলবার বালেশ্বর গুপ্ত এবং রাদিক কুমার যাদবকে গ্রেপ্তার করা হয় । এরপর ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতদেরকে নিয়ে শুক্রবার রাতে ফিরে আসে মন্দিরবাজার থানার তদন্তকারী দলটি । ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ, নারী পাচার সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ ।