ডায়মন্ড হারবার, 6 অগস্ট : যশ পরবর্তী সময়ে ধান চাষের ক্ষেত্রে কৃষকদের নতুন দিশা দেখাচ্ছে রাজ্য সরকার । কৃষি দফতরের উদ্যোগে উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি মেশিনের সাহায্যে ইতিমধ্যেই ধান রোপণ করার কাজ শুরু হয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনার বিভিন্ন ব্লকে । অন্যান্য জেলায় এইভাবে চাষ করে ব্যাপক সাফল্য মেলায় এই জেলাতেও স্বয়ংক্রিয় ধান রোপণ মেশিন দেওয়া হয়েছে কয়েকজন কৃষকের হাতে ।
ইতিমধ্যেই ডায়মন্ডহারবার-1 নম্বর ব্লকের 100 একর জমিতে যন্ত্রের সাহায্যে চারা রোপণের কাজ চলছে । মেশিনের সাহায্যে চাষ করলে অনেক কম সময়েই অধিক জমিতে চারা রোপণ করা সম্ভব বলে জানান কৃষি আধিকারিকরা । আগামী দিনে সুন্দরবন ও উপকূল এলাকাতেও এই স্বয়ংক্রিয় ধান রোপণ মেশিন পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তাঁরা ।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, 'আত্মা' প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর বিভিন্ন মরশুমে কৃষকদের কাছে বীজ ও কীটনাশক-সহ বিভিন্ন চাষের সামগ্রী পৌঁছে দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার । জেলার প্রতিটি ব্লকে এই নিয়ে একটি করে কমিটিও তৈরি করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন : Traffic congestion : ডায়মন্ড হারবারকে যানজটমুক্ত করতে কঠোর পদক্ষেপ পুলিশ প্রশাসনের
এ বছর ডায়মন্ডহারবার-1 ব্লকের দিয়ারক ও বাসুলডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় স্বয়ংক্রিয় মেশিনের সাহায্যে প্রায় 100 একর জমিতে ধানের চারা রোপণের কাজ শুরু হল । মেশিনের সাহায্যে 1 বিঘা জমিতে চাষ করতে 20 থেকে 22 ট্রে ধান লাগে । ডিজেল ও কেরোসিন চালিত এই মেশিনের সাহায্যে খুব সহজেই ধান রোপণ করতে পারবেন কৃষকরা । মেশিনের সাহায্যে এক বিঘা জমি চাষ করতে মাত্র 20 মিনিট সময় লাগে ।
সরকারের এই উদ্যোগে স্বাভাবিকভাবেই খুশি চাষিরা ৷ কম সময়ে অধিক জমি চাষ করে আগের থেকে বেশি লাভবান হবেন বলেই আশা তাঁদের ৷
ডায়মন্ডহারবার মহকুমার কৃষি অধিকর্তা সুদীপ কুমার গিরি বলেন, ‘‘এই পদ্ধতিতে চাষ এই জেলার কৃষকদের কাছে তেমন পরিচিত ছিল না । তবে জেলায় এই চাষ শুরু হতেই বহু কৃষক আগ্রহ দেখাচ্ছেন । আমরা প্রত্যেক মহকুমায় একটি করে কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া দেওয়ার জন্য বিশেষ কেন্দ্র তৈরি করছি । প্রশিক্ষণ নিয়ে যে কোনও কৃষক সেই যন্ত্র ব্যবহার করে কম সময়ে দ্রুত চাষ করতে পারবেন । উৎসাহিত কৃষকরা ইচ্ছুক থাকলে কৃষি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ।’’
যশে প্লাবিত হয়েছিল সুন্দরবন ও উপকূল এলাকার চাষের জমি । নোনাজল ঢুকে পড়ায় বহু চাষের জমির ফলন ক্ষমতা নষ্ট হয়েছে ৷ সেই জমিতেও মেশিনের সাহায্যে চারা রোপণ করা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন কৃষি আধিকারিকরা । আপাতত ডায়মন্ডহারবার এবং গোসাবা ব্লকে এই পদ্ধতিতে চাষ শুরু হয়েছে । আগামী দিনে সুন্দরবনের কৃষকদের কাছেও এই স্বংয়ক্রিয় ধান রোপণ মেশিন পৌঁছে দেওয়ার ভাবনা চিন্তা করছে কৃষি দফতর । কৃষি দফতরের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরই এই মেশিন সংগ্রহ করতে পারবে ন্যূনতম পাঁচজনের এক একটি কৃষক দল ।
আরও পড়ুন : প্রয়াত বিধায়কের ইচ্ছেয় দুর্গত মানুষের পাশে মা ও ছেলে