ক্যানিং, 3 জুলাই: বাসন্তীতে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কড়াবার্তা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। 48 ঘণ্টার সময় কমিশনকে বেঁধে দিয়ে আনন্দের বার্তা, “আগামী 48 ঘণ্টায় আমিও দেখতে চাই হাইকোর্টের নির্দেশ কতটা পালন করা হল। বুঝতে পারছি কারা এই অশান্তির মূলে। 45 বছর প্রশাসনের বিভিন্ন পদে কাজ করার সুবাদে আমার বিষয়টি বুঝতে অসুবিধা হয়নি। সেই রিপোর্ট-কার্ডও নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেব। সংবিধানের আওতায় থেকেই কাজ করব।”
রাজ্যের ভোট পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত রাজ্যপাল। বাসন্তীতে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনা শুধু নয়, ক্যানিংয়ে দাঁড়িয়ে সোমবার রাজ্যপাল বলেন, “ রাজনৈতিক সন্ত্রাসের মধ্যে পড়ে সাধারণ মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে। ভোটের জন্য আর একবিন্দু রক্ত যাতে না ঝড়ে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই। আমি ইতিমধ্যেই ক্যানিং, ভাঙড়, বাসন্তী, কোচবিহার, দিনহাটা, সিতাই, শিলিগুড়ির মত সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় পরিদর্শন করেছি। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলেছি। তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করেছি।”
বাসন্তীর তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনা ফের একবার প্রমাণ করল পঞ্চায়েত ভোটের দিন কাছে এলেও খুনোখুনির রাজনীতি বঙ্গে চলছেই। বাসন্তীতে সকালে পৌঁছলেও নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়ি পর্যন্ত রাজ্যপালকে যেতে দেয়নি বাসন্তী থানার পুলিশ। ফলে মৃত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা না-করেই ফিরে আসতে হয় রাজ্যপালকে ৷ তবে ক্যানিংয়ে সেচ দফতরের বাংলোয় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন নিহত তৃণমূল কর্মীর মেয়ে। তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যপাল । বক্তব্যের শুরুতেই তিনি বলেন, “মানুষের রক্ত নিয়ে রাজনৈতিক হোলি খেলা বন্ধ করতে হবে। আমি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছি, যেখানে সন্ত্রাস হয়েছে। তবে স্পষ্ট করতে চাই, কোনও প্রশাসনিক গাফিলতি খুঁজতে বাংলার বিভিন্ন সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় যাচ্ছি না ৷ কেন এই সন্ত্রাস হচ্ছে সেটা জানতেই আমি ঘুরছি। দেশের সংবিধান এবং রাজ্যপালের এক্তিয়ার মেনেই এই কাজ করছি।”
আরও পড়ুন: 'বাবার খুনের বিচার চাই', রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে দাবি নিহত তৃণমূল কর্মীর মেয়ের
রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে হাইকোর্টের নির্দেশ মনে করিয়ে দিয়েই রাজ্যপাল বলেন, “আমার সহকর্মী রাজ্য নির্বাচন কমিশনার আমাকে জানিয়েছেন রাজ্যের মুষ্টিমেয় জায়গায় এই অশান্তি হচ্ছে। আমিও সেই সমস্ত সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় যাচ্ছি, কেন এই অশান্তি হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করছি।” সবমিলিয়ে বাসন্তীর ঘটনাকে সামনে রেখে ফের একবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দিকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।