সোনারপুর, 2 এপ্রিল: একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে বঙ্গ রাজনীতি । এই দুর্নীতির জালে জড়িয়ে কেউ হারিয়েছেন মোটা অংকের টাকা, আবার কেউ মোটা টাকার মালিক হয়ে বর্তমানে দিন কাটাচ্ছেন শ্রীঘরে । এগুলি বেশিরভাগই হয়েছে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগে চাকরি দেওয়ার নাম করে । আর এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগে এক পুলিশের স্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে নিল নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ ৷ ধৃতের নাম ইচ্ছা সিনহা দাস ৷
প্রসঙ্গত, ওই মহিলা আবার এই মুহূর্তে অন্য একটি মামলায় জড়িয়ে জেল হেফাজতেই ছিলেন । সোনারপুর এলাকার এক বাসিন্দার কাছ থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পারচেজ ম্যানেজার পদে চাকরি দেওয়ার অফার দেন তিনি ৷ এই কারণে একাধিকবার তাঁর কাছ থেকে মোটা টাকাও নিয়েছেন বলে অভিযোগ ৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তি নরেন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ৷ সেই অভিযোগের তদন্তে নেমেই ইচ্ছা সিনহা দাসকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ ৷
এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ মদের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা ও সরকারি নথি জাল করার অভিযোগেও তাঁকে গ্রেফতার করে সোনারপুর থানার পুলিশ ৷ সেই মামলাতেই বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতে আছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ নরেন্দ্রপুর থানায় চাকরি দেওয়ার নাম করে জালিয়াতির অভিযোগ জমা পড়লে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ ৷ অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ বারুইপুর মহকুমা আদালতে আবেদন জানালে বিচারক তা মঞ্জুর করেন ৷
সূত্রের খবর, ধৃত ইচ্ছা সিনহা দাস একজন পুলিশ অফিসারের স্ত্রী ৷ তাঁর স্বামী 2019 সালে একটি পথ দুর্ঘটনায় সোনারপুরে মারা যান ৷ অভিযুক্ত নিজেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং অফিসার পরিচয় দিয়ে এই প্রতারণা করেন বলে অভিযোগ ৷ এমনকী নিজেকে আইপিএস অফিসার বলেও পরিচয় দিতেন ইচ্ছা সিনহা দাস ৷ ধৃতকে বারুইপুর আদালতে পেশ করা হলে 10 দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক ৷ ধৃতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ ৷
এই বিষয়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার ডিএসপি মোহিত মোল্লা বলেন, "আমাদের কাছে এই বিষয়ে একজন অভিযোগ দায়ের করেছিলেন । তিনি একটি সংবাদমাধ্যমের কর্মী । নিজের নাম পরিচয় গোপন রেখে তিনি এই অভিযোগ করেছেন । তাঁর স্বপক্ষে প্রমাণও পেশ করেছেন । তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ৷"
আরও পড়ুন: চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে, সিবিআই চেয়ে মামলা হাইকোর্টে