গোসাবা, 28 নভেম্বর: তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার আট । গোসাবায় গতকালই খুন হন রাধানগর তারানগর এলাকার বুথ সভাপতি মুছাকলি মোল্লা। গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই খুন বলে দাবি মৃতের পরিবারের। তদন্তে নেমে পুলিশ এখনও পর্যন্ত আট জনকে গ্রেফতার করেছে। পথশ্রীর রাস্তা তৈরি করাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় দক্ষিণ 24 পরগনার গোসাবার রাধানগর এলাকায় ৷
সোমবার তৃণমূল নেতা খুন হওয়ার পর থমথমে এলাকা। গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন কোস্টাল থানার অন্তর্গত রাধানগর তারানগর গ্রামে রাস্তাশ্রী প্রকল্পের আওতায় একটি রাস্তা তৈরি হচ্ছিল ৷ সেখানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বুথ সভাপতি মুছাকালি ৷ এই নিয়ে তৃণমূলের অপর গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাধে তাঁর বলে খবর।
গণ্ডগোলের মধ্যেই মুছাকলি মোল্লাকে মারধর শুরু করে একদল দুষ্কৃতী ৷ লাঠি, লোহার রড ও বাঁশের মুগুর দিয়ে পেটানো হয় তাঁকে ৷ এমনকী বাঁশের মুগুর দিয়ে নিহত তৃণমূল নেতার মাথায় আঘাত করা হয় ৷ এরপর ঘটনাস্থলেই অচৈতন্য হয়ে পড়েন ওই তৃণমূল নেতা ৷ স্থানীয়রা তড়িঘড়ি গুরুতর জখম মুছাকলি মোল্লাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ তাঁকে সংকটজনক অবস্থায় কলকাতার একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় মুছাকলি মোল্লার ৷
এই ঘটনা তদন্ত নেমে ইতিমধ্যেই সুন্দরবন উপকূল থানার পুলিশ 8 জনকে গ্রেফতার করেছে ৷ নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে খুন হতে হয়েছে মুছাকলি মোল্লাকে ৷ নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী তানজিলা মোল্লা বলেন, "আমার স্বামী তৃণমূল করতেন ৷ আক্রমণকারীরা যুব তৃণমূলের সদস্য ৷ রাস্তা তৈরিতে কম সামগ্রী দেওয়ায় প্রতিবাদ করেছিলেন স্বামী ৷ তাই তাঁর মাথায় মুগুর দিয়ে মেরে দেহ জলে ফেলে দিয়েছিল ৷ এই ঘটনার সঙ্গে বাকিবুর আর তাঁর দলবল জড়িত আছে ৷"
বাকিবুর গোসাবার তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ ৷ নিহত তৃণমূল নেতার ছেলে মোরসেলিম মোল্লা বলেন, "আমার বাবা তৃণমূলের মূল সংগঠনে ছিলেন ৷ আর যাঁরা আমার বাবাকে মেরেছে, তারা যুব তৃণমূল করে ৷ আমার বাবা দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ অনিমেষ মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ ৷ আমার বাবাকে যারা মেরেছে, তারা গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ ৷ তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই আমার বাবাকে খুন হতে হল ৷ এই খুনের সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে, তাদের শাস্তি চাই আমরা ৷"
এই অবস্থায় বিরোধীদের প্রশ্ন, মাথার উপর তৃণমূলের হাত থাকলে কি পুলিশকে আর ভয় করছে না দুষ্কৃতীরা ? তাই কি তৃণমূলের হাতেই খুন হতে হচ্ছে একের পর এক তৃণমূল নেতাকে ? দুষ্কৃতীরা কি জানে কাউকে খুশি করতে পারলে আর কোনও ভয় নেই ?
আরও পড়ুন: