ETV Bharat / state

Sundarbans Honey Story : মধু সংগ্রহে সুন্দরবনের জঙ্গলে স্বামী, বিধবার বেশে মউলদের স্ত্রীরা

করোনার জেরে দু’বছর বন্ধ থাকার পর বন দফতরের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ফের মধু সংগ্রহে বেরলেন মউলরা (Peoples of Sundarbans Going to Deep Forest for Finding Honey After 2 Years) ৷ আর সেই সঙ্গে নিজেদের জীবনধারা বদলে ফেললেন বাড়ির বৌয়েরা ৷ জল দেওয়া ভাত এবং বিধবার বেশ ৷ স্বামী ঘরে ফেরা না পর্যন্ত এই তাঁদের জীবন ৷ কারণ, গভীর জঙ্গলে বাঘের শিকার হতে পারেন স্বামী ৷

Peoples of Sundarbans Going to Deep Forest for Finding Honey After 2 Years
Peoples of Sundarbans Going to Deep Forest for Finding Honey After 2 Years
author img

By

Published : Apr 16, 2022, 7:04 PM IST

সুন্দরবন, 16 এপ্রিল : ‘জলে কুমির ডাঙায় বাঘ’ ৷ সাক্ষাৎ যমের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকো নিত্যদিনের কাহিনি সুন্দরবনের বাসিন্দাদের ৷ মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘ ও কুমিরের শিকার হতে হয় মৎস্যজীবী এবং মউলদের (মধু সংগ্রহ করেন যাঁরা) । করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে গত দু’বছর সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহ বন্ধ ছিল ৷ এবার বন দফতরের অনুমতি নিয়ে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন মউলরা ৷ শুক্রবার থেকেই মধু সংগ্রহ করতে জঙ্গলে ঢুকেছেন মউলেরা (Peoples of Sundarbans Going to Deep Forest for Finding Honey After 2 Years) ৷ প্রাথমিক ভাবে 15 দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে ৷

এই সময়ে সংগৃহীত মধু বন দফতরের কাছে জমা দিতে হবে মউলদের ৷ তার পর দ্বিতীয়বারের জন্য মধু সংগ্রহ করতে যেতে পারবেন মউলরা ৷ বন দফতর সূত্রের খবর, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালি ও বসিরহাট রেঞ্জ থেকে 43টি দলকে এ বার মধু সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷ প্রতিটি দলে 5-11 জন করে মউল রয়েছেন ৷ সব মিলিয়ে 340 জন মধু সংগ্রহ করবেন ৷ বসিরহাট রেঞ্জ থেকে 145 জন ও সজনেখালি রেঞ্জ থেকে 195 জন মউল ইতিমধ্যেই মধু সংগ্রহ করতে রওনা দিয়েছেন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ৷

চৈত্র-বৈশাখ মাসই সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের মরসুম ৷ এই সময়ে সুন্দরবনের খলসে গাছে ফুল আসে ৷ এই খলসে ফুলের মধুই সব থেকে সুস্বাদু বলে দাবি মউলেদের ৷ সুন্দরবনের নদী-খাঁড়ির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময়ে মৌমাছির গতিবিধি লক্ষ্য করেন মউলরা ৷ নদীর পাড়ে নৌকা বেঁধে মৌমাছির পিছু নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে মৌচাকের খোঁজ ৷ মৌচাকের সন্ধান পেলেই কাঁচা হেতাল গাছের পাতা সংগ্রহ করে, তা দিয়ে মশাল বানিয়ে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে কাটা হয় চাক ৷ রীতি অনুযায়ী, প্রথম সংগৃহীত মধু জঙ্গলের পূর্বদিকের একটি গাছের গোড়ায় বনবিবিকে নিবেদন করেন মউলরা ৷

আরও পড়ুন : Tiger in Sundarbans : লোকালয়ে বাঘ আটকাতে সুন্দরবনকে লোহার জালে ঘেরার দাওয়াই বনমন্ত্রীর

মউলদের দলের এক একজনের এক একটি দায়িত্ব থাকে ৷ যিনি চাকের খোঁজ করেন, তিনি টানা জঙ্গলের উপরের দিকে নজর রাখেন ৷ সেই সময় যাতে বাঘ বা কোনও হিংস্র জন্তু তাঁকে আক্রমণ করতে না পারে, সে দিকে খেয়াল রাখেন দলের অন্যেরা ৷ অনেক সময় জঙ্গলের মধ্যে মৌচাক খুঁজতে গিয়ে একে অন্যের থেকে দূরে চলে গেলে যোগাযোগ রক্ষায় নিজস্ব সংকেত ব্যবহার করেন মউলরা ৷

অন্যদিকে, মধু সংগ্রহে যাওয়া মউলদের স্ত্রীরা বাড়িতে নানা নিয়মকানুন পালন করেন এই সময়ে ৷ অনেকে বিধবার বেশে থাকেন এ ক’দিন ৷ স্বামী বাড়ি ফিরলে আবার সধবার বেশে সাজেন ৷ এ নিয়ে ঝড়খালির বাসিন্দা সুশীলা জানা বলেন, ‘‘বিয়ের পরে প্রায় পঁচিশ বছর কেটে গেল ৷ স্বামী জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গেলে এই ভাবেই আমরা কয়েকটা দিন কাটাই ৷ যাতে জঙ্গলে গিয়ে ওঁর কোনও বিপদ না হয় ৷ পূর্ব পুরুষের এই রীতি মেনে চলছি ৷'' সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বারবার বাঘের হামলার ঘটনা ঘটে ৷ মধু সংগ্রহের ক্ষেত্রে সেই বিপদের আশঙ্কা আরও বেশি ৷ বন দফতর সূত্রের খবর, মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে কোনও বিপদ ঘটলে 1 লক্ষ টাকা বিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷

সুন্দরবন, 16 এপ্রিল : ‘জলে কুমির ডাঙায় বাঘ’ ৷ সাক্ষাৎ যমের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকো নিত্যদিনের কাহিনি সুন্দরবনের বাসিন্দাদের ৷ মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘ ও কুমিরের শিকার হতে হয় মৎস্যজীবী এবং মউলদের (মধু সংগ্রহ করেন যাঁরা) । করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতিতে গত দু’বছর সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহ বন্ধ ছিল ৷ এবার বন দফতরের অনুমতি নিয়ে মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন মউলরা ৷ শুক্রবার থেকেই মধু সংগ্রহ করতে জঙ্গলে ঢুকেছেন মউলেরা (Peoples of Sundarbans Going to Deep Forest for Finding Honey After 2 Years) ৷ প্রাথমিক ভাবে 15 দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে ৷

এই সময়ে সংগৃহীত মধু বন দফতরের কাছে জমা দিতে হবে মউলদের ৷ তার পর দ্বিতীয়বারের জন্য মধু সংগ্রহ করতে যেতে পারবেন মউলরা ৷ বন দফতর সূত্রের খবর, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সজনেখালি ও বসিরহাট রেঞ্জ থেকে 43টি দলকে এ বার মধু সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷ প্রতিটি দলে 5-11 জন করে মউল রয়েছেন ৷ সব মিলিয়ে 340 জন মধু সংগ্রহ করবেন ৷ বসিরহাট রেঞ্জ থেকে 145 জন ও সজনেখালি রেঞ্জ থেকে 195 জন মউল ইতিমধ্যেই মধু সংগ্রহ করতে রওনা দিয়েছেন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ৷

চৈত্র-বৈশাখ মাসই সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের মরসুম ৷ এই সময়ে সুন্দরবনের খলসে গাছে ফুল আসে ৷ এই খলসে ফুলের মধুই সব থেকে সুস্বাদু বলে দাবি মউলেদের ৷ সুন্দরবনের নদী-খাঁড়ির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময়ে মৌমাছির গতিবিধি লক্ষ্য করেন মউলরা ৷ নদীর পাড়ে নৌকা বেঁধে মৌমাছির পিছু নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে মৌচাকের খোঁজ ৷ মৌচাকের সন্ধান পেলেই কাঁচা হেতাল গাছের পাতা সংগ্রহ করে, তা দিয়ে মশাল বানিয়ে ধোঁয়া দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে কাটা হয় চাক ৷ রীতি অনুযায়ী, প্রথম সংগৃহীত মধু জঙ্গলের পূর্বদিকের একটি গাছের গোড়ায় বনবিবিকে নিবেদন করেন মউলরা ৷

আরও পড়ুন : Tiger in Sundarbans : লোকালয়ে বাঘ আটকাতে সুন্দরবনকে লোহার জালে ঘেরার দাওয়াই বনমন্ত্রীর

মউলদের দলের এক একজনের এক একটি দায়িত্ব থাকে ৷ যিনি চাকের খোঁজ করেন, তিনি টানা জঙ্গলের উপরের দিকে নজর রাখেন ৷ সেই সময় যাতে বাঘ বা কোনও হিংস্র জন্তু তাঁকে আক্রমণ করতে না পারে, সে দিকে খেয়াল রাখেন দলের অন্যেরা ৷ অনেক সময় জঙ্গলের মধ্যে মৌচাক খুঁজতে গিয়ে একে অন্যের থেকে দূরে চলে গেলে যোগাযোগ রক্ষায় নিজস্ব সংকেত ব্যবহার করেন মউলরা ৷

অন্যদিকে, মধু সংগ্রহে যাওয়া মউলদের স্ত্রীরা বাড়িতে নানা নিয়মকানুন পালন করেন এই সময়ে ৷ অনেকে বিধবার বেশে থাকেন এ ক’দিন ৷ স্বামী বাড়ি ফিরলে আবার সধবার বেশে সাজেন ৷ এ নিয়ে ঝড়খালির বাসিন্দা সুশীলা জানা বলেন, ‘‘বিয়ের পরে প্রায় পঁচিশ বছর কেটে গেল ৷ স্বামী জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে গেলে এই ভাবেই আমরা কয়েকটা দিন কাটাই ৷ যাতে জঙ্গলে গিয়ে ওঁর কোনও বিপদ না হয় ৷ পূর্ব পুরুষের এই রীতি মেনে চলছি ৷'' সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বারবার বাঘের হামলার ঘটনা ঘটে ৷ মধু সংগ্রহের ক্ষেত্রে সেই বিপদের আশঙ্কা আরও বেশি ৷ বন দফতর সূত্রের খবর, মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে কোনও বিপদ ঘটলে 1 লক্ষ টাকা বিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.