নরেন্দ্রপুর, 23 সেপ্টেম্বর: কামালগাজিতে যুবক খুনের ঘটনায় অবশেষে পুলিশের জালে এক অভিযুক্ত । তাঁকে গ্রেফতার করল নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ । অভিযুক্তের নাম অভিজিৎ নস্কর । অভিযুক্তকে শনিবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে তাকে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুন ও অস্ত্র আইনে রুজু হয়েছে মামলা।
পুলিশ সূত্রে দাবি, অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসা করে এই ঘটনার সঙ্গে আর অন্য কেউ জড়িত আছে কি না, তা জানার চেষ্টা করা হবে । তবে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ব্যবসায়ী সাহিদ মণ্ডলকে খুন করার জন্য অন্য কেউ এই অভিযুক্তকে সুপারি দিয়েছিল । তবে সেই ব্যাপারে এখনও পুলিশের হাতে স্পষ্ট কোনও তথ্য প্রমাণ আসেনি । অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের পর কী কারণে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে, তা জানা যাবে ।
বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, "আমরা ঘটনার তদন্ত করছি ৷ একজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ সে ঘটনার কথা স্বীকার করেছে এবং বাকিদের নাম বলেছে ৷ আমরা তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের খোঁজ করব ৷" শাহিদের বাবা শাহজাহান মণ্ডল বলেন, "এই ঘটনার যারা জড়িত তারা ধরা পড়েনি ৷ তারা ধরা না-পড়লে আমরা শান্তি পাব না ৷ আসল আসামিরা ধরা পড়লে তবেই খুশি হব ৷ আমরা আদালতে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছি ৷ আশা করি আদালত সেই দাবি মঞ্জুর করবে ৷"
প্রসঙ্গত, 14 অগস্ট রাতে নরেন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত কামালগাছি এলাকা থেকে দেহ উদ্ধার হয় 26 বছরের শাহিদ মণ্ডলের । পেশায় ব্যবসায়ী শাহিদ প্রতিদিনের মতোই ব্যবসার কাজ করে বাড়ি ফিরছিলেন ৷ অভিযোগ, পথে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতীরা বাইকে করে এসে শাহিদের পথ আটকায় এবং তাঁর উপর গুলি চালানো হয় । ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শাহিদের ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল ।
শাহিদের পরিবার মৃত্যুর ঘটনায় নরেন্দ্রপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিল ৷ এরপর তদন্ত শুরু করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ । এরপর কেটে গিয়েছে কয়েক সপ্তাহ । এক সপ্তাহ পরেও অভিযুক্তরা অধরা ছিল ৷ তারপরেই পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলা হয় । নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে নরেন্দ্রপুর থানাতে পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভও দেখায় এবং পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে এই বিক্ষোভ আন্দোলনকে আরও তীব্র ও জোরাল করে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকী ।
আরও পড়ুন: বারুইপুরে ব্যবসায়ীর ছেলের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য এলাকায়
দোষীদের শাস্তি ও সিবিআই তদন্তের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয় শাহিদের পরিবার । এমনকী এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চায় মৃত যুবকের বাবা শাহজাহান মণ্ডল । তবে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ নিজেদের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিল নীরবে । এরপর অবশেষে মিলল সাফল্য ৷ একটি ছুরি ছিনতায়ের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এক ব্যক্তি । ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নরেন্দ্রপুরের শাহিদ খুনের কিনারা করে পুলিশ । নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানতে পারে এই ঘটনায় অভিজিৎ নস্কর নামে এক যুবক যুক্ত রয়েছেন । যুবকের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি । অবশেষে কুলতলি থানা এলাকা থেকে ওই যুবককে গ্রেফতার করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ ।