কুলতলি, 23 মে: আগের বছর আমফানে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কুলতলি ব্লক ৷ আবার এবছর আসছে যশ ৷ তার মোকাবিলাতেই রবিবার কুলতলিতে মাইকিং করলেন ক্যানিংয়ের বিধায়ক ৷ এদিন যশ নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে মহকুমাশাসকের দফতরেও ৷ মহকুমাশাসকের দফতরে খোলা হয়েছে 24 ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোলরুম ।
বারুইপুর মহাকুমায় আমফান ঘূর্ণিঝড়ে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কুলতলি ব্লক । নদীর উপকূলবর্তী এই এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ৷ 10 থেকে 15 দিন কুলতলির গ্রামগুলি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল । নদীর বাঁধ সংলগ্ন এলাকার কয়েক হাজার মানুষকে রাখা হয়েছিল ফ্লাড সেন্টার অথবা কোনও হাইস্কুলের সাইক্লোন সেন্টারে । করোনা পরিস্থিতিতে গতবারের আমফান ঝড়ের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে যশের মোকাবিলা করতে প্রস্তুতি শুরু হল এদিনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই ।
বারুইপুরের মহকুমাশাসক সুমন পোদ্দারের নেতৃত্বে এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট রাখী পাল, কুলতলির বিডিও বীরেন্দ্র অধিকারী ও কুলতলির বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল । এসডিও জানান, যশ মোকাবিলায় বারুইপুর মহকুমাশাসক দফতরে খোলা হচ্ছে 24 ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোলরুম । পাশাপাশি প্রতিটি ব্লকেই খোলা থাকবে বিডিওর নেতৃত্বে কন্ট্রোলরুম । বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উপরে । এছাড়াও নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য যাতে যোগাযোগের বিষয়ে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য কুলতলি ব্লকে স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে । ফ্লাড সেন্টার ও সাইক্লোন সেন্টারে থাকা প্রত্যেককে মাস্ক-স্যানিটাইজার দেওয়া হবে । সেখানে খাবারের সরকারি ব্যবস্থাও থাকবে ৷
কুলতলির বিধায়ক গণেশ মণ্ডল জানিয়েছেন, এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে রাস্তার উপর পড়ে থাকা গাছগুলি দ্রুত কাটার জন্য বেশকিছু পেট্রোল চালিত গাছ কাটার মেশিন কেনা হয়েছে । নদীবাঁধগুলির উপর কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে । বৈঠক সেরে কুলতলির বিডিও ও বিধায়ক দু'জনেই দুর্বল নদীবাঁধ এলাকা পরিদর্শনে যান । গত বছর আমফানের প্রবল ঝড়ে বাঁধ ভেঙেছিল মৈপিট কোস্টাল থানার হালদারের ঘেরি এলাকায় । গত মাসে কোটালের জলোচ্ছ্বাসে মাকড়ি নদীর বাঁধ ভেঙেছিল । সেই বাঁধ মেরামতিতে 100 দিনের কর্মীদের কাজে লাগানো হয়েছে । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে । এলাকায় কাজ করছেন সেচ দফতরের কর্মীরাও । লঞ্চে করে নদীবাঁধ পরিদর্শনের পাশাপাশি কুলতলিবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বিধায়ক ৷ ইতিমধ্যেই বিধায়ক নিজের ফোন নম্বর মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন । কোনও সমস্যা হলে বিধায়ককে সরাসরি ফোন করা যাবে । কোভিড মোকাবিলায় দু'টি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছিল । সেই হেল্পলাইনে ফোন করলেও সাহায্য মিলবে ৷
অন্যদিকে ক্যানিং পশ্চিম বিধানসভার অন্তর্গত উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচার করলেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস ৷ মাতলা নদীর উপর মৎস্যজীবীদের মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করেছেন তিনি । পাশাপাশি নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের ফ্লাড সেন্টারে যাওয়ার আবেদন করেছেন তিনি । যশের মোকাবিলায় প্রস্তুত পুলিশ-প্রশাসন ।
আরও পড়ুন : 26 মে দীঘা উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে যশ