ক্যানিং, 18 জানুয়ারি : শনিবার দেশজুড়ে টিকাকরণের প্রথম ডোজ় দেওয়া হয় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের । রাজ্যেও একইভাবে ভ্যাকসিন নেন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকরা । কিন্তু, চিকিৎসক না হওয়া সত্ত্বেও তৃণমূলের কয়েকজন বিধায়ক প্রথম দিনেই ভ্যাকসিন নেওয়ার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে । অবশ্য সে সম্পর্কে কিছুই জানা নেই বলে জানান দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় । রবিবার বিকেলে ক্যানিং রেলমাঠে তৃণমূল যুবর ডাকে প্রকাশ্য জনসভায় এসে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “ আমি খবরের কাগজ দেখে জানলাম । ভ্যাকসিন নিতে চাইছেন না অনেকে । ওঁরা নিয়েছেন এটা তো একটা খবর । আমাদের রাজ্যে তো ভ্যাকসিনের সাফল্য খুব ভালো ।”
শনিবার দেশজুড়ে কোরোনা টিকাকরণের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । কেন্দ্রের তরফ থেকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, প্রথম দিনে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকরা । কিন্তু, ভ্যাকসিনেশনের প্রথম দিনেই রাজ্যে কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ককে নিয়ম ভাঙতে দেখা গিয়েছে । চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী না হওয়া সত্ত্বেও ভ্যাকসিন নিতে দেখা গেছে তাঁদের । কোনও বিধায়কের তো আবার ভ্যাকসিন নেওয়ার তালিকায় সবার প্রথমে নাম ছিল । যদিও সেই বিধায়ক ভ্যাকসিন নিচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন । কিন্তু, কাটোয়ার বিধায়ক ও আসানসোলের তৃণমূল নেতাকে ভ্যাকসিন নিতে দেখা যায় । আসানসোলের ওই তৃণমূল নেতা জানিয়ে দেন, তিনি মানুষকে সচেতন করার জন্য ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন । আর এই নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি বিজেপি ।
বাবুল সুপ্রিয় বলেন, "একটা দল যখন আর্দশগতভাবে একদম তলানিতে গিয়ে পৌঁছায়, তাঁরা যখন জানেন যে চারদিকে মানুষ তাঁদের উপর এত রেগে আছে, তাঁরা টিকা নিজেরা না নিলে, মানুষই তাঁদের ইঞ্জেকশন দিয়ে দেবেন । সেই ভয় থেকেই নির্লজ্জভাবে আগে এঁরা টিকা নিচ্ছেন ।" এই বিতর্ক ও সমালোচনার মধ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গতকাল ক্যানিংয়ে গিয়ে বিধায়কদের ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়ে জানেনই না বলে দাবি করেন । যদিও বা বিধায়করা ভ্যাকসিন নিয়ে থাকেন, তাহলে সেটা একটা উল্লেখযোগ্য খবর বলেও মন্তব্য করেন তিনি ।
আরও পড়ুন, তৃণমূল বিধায়ক-কাউন্সিলরদের টিকাকরণ নিয়ে বাবুুলের নিন্দা
এছাড়াও মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে একাধিকবার তোপ দাগেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় । বিজেপি বাংলার সংস্কৃতি জানে না, যাযাবরের দল বলে আক্রমণ করেন তিনি । সেইসঙ্গে, কেন্দ্রীয় সরকার বেকারদের চাকরি দেয়নি, উলটে আরও বেকার বাড়িয়েছে বলে দাবি করেন পার্থ । পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী, তৃণমূল যুবর সভাপতি শওকত মোল্লা, জেলার কো-অর্ডিনেটর পরেশরাম দাস, রাজ্যের মন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম সহ অন্যান্য জেলা নেতৃত্ব ।