গঙ্গাসাগর, 8 জানুয়ারি: গঙ্গাসাগরে গিয়ে একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এ ছাড়াও ভারত সেবাশ্রম সংঘে পৌঁছে প্রণবানন্দজির বিগ্রহে আরতিও করেন তিনি ।
গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে ও মেলার উদ্বোধন করতে সোমবার বেলা আড়াইটে নাগাদ গঙ্গাসাগরে পৌঁছন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেখানে গিয়ে তিনি দক্ষিণ 24 পরগনা জেলার নামখানা পাথর প্রতিমা সাগর-সহ বিভিন্ন বিধানসভার প্রকল্পের শিলান্যাস করেন । শিলান্যাসের পাশাপাশি, গঙ্গাসাগরের ভারত সেবাশ্রম সংঘের বেশ কিছু প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ।
গঙ্গাসাগর মেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয় করে গঙ্গাসাগর মেলায় কপিলমুনি মন্দির প্রাঙ্গণ আলোকসজ্জায় রাঙিয়ে তোলা হয়েছে । গঙ্গাসাগরে এখন সব কিছু তৈরি করা হয়েছে । তিনটি হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছে । মেলার সময় থাকছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা । দশ হাজার বায়োমেট্রিক টয়লেট থাকবে গঙ্গাসাগর মেলার সময় । পুণ্যার্থীদের জন্য 5 লক্ষ টাকার বিমা থাকছে । লট এইট জেটি ঘাটে নতুন করে বেশকিছু জেটি নির্মাণ করা হয়েছে । গঙ্গাসাগর মেলার আগে কপিলমুনি মন্দিরের সামনে যে সমুদ্র বাঁধে ধস নেমেছিল, সেটি মেরামতের কাজ সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে ।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, সাগর ও আশপাশের এলাকায় 61 কোটি 50 লাখ টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে । উদ্বোধন করা হয়েছে সাগর ব্লকে একটি বড় পানীয় জল প্রকল্পের । খরচ হয়েছে 43 কোটি 30 লাখ টাকা । মেলায় কারওকে প্ররোচনায় পা না দেওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন, "ছোটখাটো কোনও ঘটনাকে নিয়ে যেন উত্তেজনা না ছড়ায়। কেউ কোনও প্ররোচনায় পা দিলেও আপনারা ছড়াতে দেবেন না । আমি মনে করি যেখানে আশি লাখ-নব্বই লাখ মানুষ আসেন, সেখানে মানুষের নিরাপত্তাটা সবচেয়ে বড় । একটা খবরকে কেন্দ্র করে অনেক সময় পদপিষ্টও হয়ে যায় ।"
এ বছর মেলায় 21টি জেটি ব্যবহার করা হবে, আড়াই হাজার বাস ব্যবহার করা হবে। থাকছে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা । দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণে মোতায়েন থাকবেন 2400 সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা । মেলার জন্য 300 আসনের একটি অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে । মেলার সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা কর্মী থাকবেন । পুণ্যার্থীদের পারাপারের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে । পদপিষ্টের মতো বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য পুণ্যার্থীদের বিশেষ গেটের মাধ্যমে আটকানো হবে । ভাটার সময় হুড়োহুড়ি করে নদী পারাপারের সময় যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, সেই জন্য ড্রপ গেটের ব্যবস্থা থাকবে । কুম্ভ মেলার পরেই এই গঙ্গাসাগর মেলা । গঙ্গাসাগর মেলায় আসা তীর্থযাত্রীদের যাতে কোনওরকম অসুবিধা না হয়, সেদিকে সব রকম ব্যবস্থা রেখেছে রাজ্য সরকার । কেন্দ্র সরকার কুম্ভ মেলার জন্য অর্থ বরাদ্দ করে ৷ কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলার জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করে না কেন্দ্র । গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন সমস্তটাই রাজ্য সরকার করে ।
আরও পড়ুন: