নামখানা, 25 নভেম্বর: শ্বশুরবাড়িতে বর্বরতার শিকার এক গৃহবধূ! মহিলাকে মারধর ও মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে ৷ শ্বশুরবাড়ির অভিযোগ, ওই মহিলা টাকা চুরি করেছেন, আর সেই কারণেই নাকি এই শাস্তি ৷ শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ 24 পরগনার কাকদ্বীপের নারায়ণপুর গ্রামে ৷ ঘটনায় প্রতিবেশীদের মদতে উদ্ধার করা হয় নির্যাতিতা মহিলাকে ৷ পুলিশ অভিযুক্ত শাশুড়ি এবং ননদকে গ্রেফতার করেছে ৷
প্রতিবেশীরা অভিযোগ করেছেন, গতকাল রাতে ওই বাড়ি থেকে চিৎকারের আওয়াজ শোনা যায় ৷ প্রথমে নিত্যদিনের ঝগড়া মনে করে সবাই বিষয়টিকে এড়িয়ে যান ৷ কিন্তু, রাত গড়াতে তা ক্রমশ বাড়তে থাকে ৷ এরপর গৃহবধূর ননদ পাড়ার দোকানে ব্লেড কিনতে যায় ৷ তাকে দেখে সন্দেহ হয় দোকানদারের ৷ তিনি প্রশ্ন করায়, বিষয়টি এড়িয়ে যায় গৃহবধূর অভিযুক্ত ননদ ৷ এরই মধ্যে রাতের দিকে ওই বাড়িতে মহিলার চিৎকার ও কান্নার শব্দ আরও বাড়তে থাকে ৷ তখনই প্রতিবেশীরা সেখানে উপস্থিত হয় ৷ তারা দেখেন মহিলাকে বিবস্ত্র করে তাঁর শাশুড়ি এবং ননদ মিলে মারধর করছেন ৷ মাথার চুলও কেটে দেওয়া হয়েছে ৷ তৎক্ষণাৎ মহিলাকে উদ্ধার করেন তারা ৷ খবর দেওয়া হয় পুলিশে ৷ রাতেই পুলিশ মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেই সঙ্গে অভিযুক্ত দু’জনকে আটক করা হয় ৷
এ দিন সকালে অভিযুক্ত শাশুড়ি এবং তাঁর ননদকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতা মহিলার স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন ৷ বাড়িতে শাশুড়ি ও ননদের সঙ্গেই মহিলা থাকতেন ৷ মাঝেমধ্যেই অশান্তি ও ঝামেলা চলত ৷ কিন্তু, শুক্রবার রাতে তা চরম আকার নেয় ৷ জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, মহিলার বিরুদ্ধে টাকা চুরির অভিযোগ তোলে তাঁর শাশুড়ি ৷ মহিলার একটি সন্তান রয়েছে বলেও জানা গিয়েছে ৷ সন্তানকে খাওয়ানোর জন্যই নির্যাতিতা টাকা নিয়েছিলেন ঘর থেকেই ৷ সেই কারণেই নাকি এই বর্বরোচিত আচরণ বলে অভিযোগ ৷
কাকদ্বীপ কোর্টের সরকারি আইনজীবী সব্যসাচী দাস জানান, মহিলা তাঁর বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য তিনশো টাকা নিয়েছিলেন ৷ শাশুড়ি তা জানতে পেরে তাঁর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মহিলাকে মারধর শুরু করেন ৷ তাঁর মাথা ন্যাড়া করে দেন ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 327-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: