গোসাবা, 18 এপ্রিল: সোমবার ভোররাতে গোসাবা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার চার দুষ্কৃতী ৷ জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় চার যুবক হোসেন মোল্লা, শামসুল সরদার, রহিদুল মোল্লা ও সঞ্জয় দাস দুটি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বাইকে করে বেলতলী বাজার থেকে শম্ভুনগরের দিকে যাচ্ছিল । যাওয়ার পথে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তাদের গাড়ি আটকায় পুলিশ । এরপরেই তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় দুটি বড় বন্দুক ও সাত রাউন্ড গুলি ।
পাশাপাশি দুষ্কৃতীদের তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু অস্ত্র তৈরির যন্ত্রাংশ । শুধু তাই নয়, তাদের থেকে নগদ 50 হাজার টাকাও উদ্ধার করেছে পুলিশ । পঞ্চায়েত ভোটের আগে শম্ভুনগর এলাকায় ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতেই তারা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঢুকছিল বলে অভিযোগ পুলিশের। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। গোসাবা থানার পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে । ধৃতদের মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হয় ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার ভোররাতে গোসাবা থানা একটি গোপন তথ্য পায়, যে চারজন অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত দুটি মোটরসাইকেলে চেপে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে কামাক্ষ্যাপুর এলাকায় কিছু অপরাধমূলক কাজের উদ্দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে । পুলিশ খবর পেয়ে কামাক্ষ্যাপুরের নগেন দাস মোড়ের কাছে আসে ৷ সেখানে এসে দেখতে পায় যে দুটি মোটরবাইক বেলতলীর দিকে আসছে । হঠাৎ মোটর বাইকের হেড লাইটের ফোকাস পুলিশের উপর পড়লে বাইক দুটি তাদের দিক পরিবর্তন করতে থাকে । পুলিশ তাদের পিছনে ধাওয়া করে এবং দুটি মোটরবাইক এবং উভয় বাইকের চার আরোহীকে আটক করতে সক্ষম হয় ।
এদিকে, ভোটের আগে আগে এই ধরনের অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পুলিশের । কিছুদিন আগেই বারুইপুরের একটি এলাকা থেকে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র সমেত পাঁচ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । তাদের থেকে একটি অত্যাধুনিক রিভলভারও পাওয়া যায় । এরপর ফের এদিন চারজন গ্রেফতার হল ৷ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে । শুধু তাই নয়, তাদের বিরুদ্ধে আর কোনও অভিযোগ আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ । এই চারজনকে জেরা করে কে এদের চালনা করছে, সেই তথ্য পেতে চাইছে পুলিশ ।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, "আমাদের পাড়া থেকেই মধ্যরাত নাগাদ পুলিশ ওই চারজনকে গ্রেফতার করে । হঠাৎ পাড়াতে রটে যায় যে পুলিশ এসেছে। আমরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখি চারজনকে ধরে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তারপরেই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি বেরিয়ে আসে।" যদিও এই এলাকায় রাজনৈতিক হানাহানির ইতিহাস খুব একটা নেই বলেই জানিয়েছেন ওই স্থানীয় বাসিন্দা। তবে বিরোধীদের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই অশান্তি ও গণ্ডগোল পাকানোর জন্য শাসকদলের কিছু নেতা ওই সমস্ত দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করছে। তবে পুলিশের তরফ থেকে কোনওরকম রাজনৈতিক মদত রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট করে বলা হয়নি ৷ তবে এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এমনটাই জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে ফেরার পথে ব্যাগ ছিনতাই মহিলার