নামখানা, 24 জুলাই: বাঘের আক্রমণে মৃত্যু যেন ভবিতব্য হয়ে উঠেছে মৎস্যজীবীদের ৷ আবারও সুন্দরবনের দক্ষিণরায়ের হানায় প্রাণ গেল মৎস্যজীবীর ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার নামখানা এলাকার ঘটনা ৷ মৃত মৎস্যজীবীর নাম অনশ্বর ফকির (56) ৷ রবিবার মৃতের স্ত্রী ভগবতী ফকির ফোন করে তাঁরা স্বামীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন ৷ ঘটনার খবর এলাকায় চাউর হতেই এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া ৷
পেট যে বড় বালাই ৷ জঙ্গলে অলিতে গলিতে আত পেতে রয়েছে বিপদ । তাই বিপদ জেনেও জীবন-জীবিকার টানে প্রাণ হাতে করে বার বার জঙ্গলে যেতে হয় মৎস্যজীবীদের । সেই নদী ও খাড়িতে কাঁকড়া ধরার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন নামখানার গণেশ নগর এলাকার এক দম্পতি ৷ চলতি মাসের 9 তারিখ । সমস্ত কিছু ঠিকঠাকই চলছিল ৷ এক লহমায় বদলে গেল সবকিছু ৷ মৃতের স্ত্রী ভগবতী ফকির রবিবার রাতে বাড়িতে ফোন করে জানান, নামখানা ঠাকুর নদীর চড় এলাকায় নৌকায় করে তারা কাঁকড়া ধরছিলেন ৷ সেই সময় হঠাৎই জঙ্গল থেকে একটি বাঘ অতর্কিতে আক্রমণ করে তাঁদের নৌকাতে । অনশ্বর ফকিরের ঘাড়ে কামড় বসায় দক্ষিণরায় ৷ কিছু বোঝার আগেই তাঁর স্বামীকে টানতে টানতে জঙ্গলে নিয়ে চলে যায় ৷ চোখের সামনে এইরকম ভয়ংকর দৃশ্য দেখে সাহায্যের জন্য আর্ত চিৎকার শুরু করে দেন ভগবতী । তাতেও অবশ্য শেষরক্ষা হয়নি ৷
আরও পডু়ন: 61 দিন গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি মৎস্য দফতরের
অবশেষে ভারাক্রান্ত মনে পরিবারের লোকজনকে ফোন করে সমস্ত ঘটনার কথা বলে ভগবতী । এরপরেই পরিবারের সদস্যরা নামখানার ঠাকুর নদীর চরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ৷ পরিবারের পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় বন দফতরকে । খবর পেয়েই বন দফতরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান । পাশাপাশি কাকদ্বীপ থানা ও স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিককে গোটা বিষয় জানানো হয়েছে । বাঘের হামলায় মৃত্যুর ঘটনায় কার্যত এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে । বিপদ জেনেও গভীর জঙ্গলে নিজেদের জীবন বাজি রেখে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে হয় সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষদের । বলা যায় অঘোষিত ভাবে বাঘের হানায় মৃত্যু যেন নিয়তি সুন্দরবনবাসীর কাছে ৷