ফলতা (দক্ষিণ 24 পরগনা), 6 ফেব্রুয়ারি: একটু একটু করে এগিয়ে আসছে হুগলি নদী, ধীরে ধীরে ভাঙছে নদীবাঁধ। নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে বসেছে আস্ত একটা গ্রাম। আতঙ্কে দিন গুনছেন দক্ষিণ 24 পরগনার ফলতা বিধানসভার তারাগঞ্জ জেলেপাড়ার কয়েকহাজার বাসিন্দা (Falta Villagers Living with Fear)। ফলতার পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে হুগলি নদী। ভাঙনের জেরে একের পর এক জমি চলে গিয়েছে হুগলি নদীর গর্ভে। নদীবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বর্তমানে বেহাল অবস্থা ফলতা বিধানসভার নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা।
এরইমধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ফলতার তারাগঞ্জ গ্রামের। গ্রামের মধ্যে অবস্থিত তারাগঞ্জ জেলেপাড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্র। বিদ্যালয়টি একেবারে হুগলি নদী তীরবর্তী এলাকায়। নদীবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে পৌঁছে গিয়েছে গ্রামের সীমানায়। জেলেপাড়ার সীমানাতে রয়েছে গ্রামের শিশু শিক্ষা কেন্দ্র যেখানে এলাকার শতাধিক ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে। নদীবাঁধ ভেঙে যে কোনও মুহূর্তে তারাগঞ্জ জেলেপাড়া শিশু শিক্ষা কেন্দ্রটি তলিয়ে যেতে পারে নদীগর্ভে। তাই ঝুঁকি নিয়েই চলছে স্কুলের পঠন-পাঠন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা জানান, ভরা কোটালের জোয়ার এমনকী নদী থেকে জাহাজ গেলেই জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় এলাকা। সেই সময় ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে স্কুলের দোতলায় পঠন-পাঠনের কাজ করতে হয়। নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। কিন্তু আজ পর্যন্ত নদীবাঁধ মেরামতের কোনও কাজ হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। অন্যদিকে গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ভোট আসে ভোট যায় গ্রামে জনপ্রতিনিধিরা আসেন কিন্তু তাঁদের সমস্যার কথা শুনলেও আজও কোনও সমাধান হয়নি।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার ভরা কোটালের জোয়ারের জলে নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত এলাকা
তাঁরা আরও জানান, নদীবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় হুগলি নদী থেকে যখন জাহাজ যাতায়াত করে সেই সময়ে জলোচ্ছ্বাসে ভাসতে থাকে এলাকা ৷ এমনকী ভরা কোটালেও আতঙ্কে থাকেন তারাগঞ্জ এলাকার এই বাসিন্দারা। নদীর নোনা জল ঢুকে পড়ে এলাকায় তখন ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিতে হয় অন্যত্র। অবশ্য নদীভাঙন নিয়ে ফলতা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গির খান বলেন, "ফলতা বিধানসভা নদী তীরবর্তী এলাকায় বিগত কয়েক বছর ধরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা ইতিমধ্যেই লিখিতভাবে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ দফতরকে বাঁধ মেরামতের জন্য আবেদন করেন। ইতিমধ্যেই বাঁধ মেরামতের টেন্ডার হয়ে গিয়েছে বলেও জানানো হয়। আর্থিক অনুদান এলেই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।" তবে গ্রামবাসীদের প্রশ্ন কবে হবে বাঁধ মেরামতের কাজ? সে প্রশ্ন কারও জানা নেই, তাই আতঙ্কে প্রহর গুনছেন তারাগঞ্জ এলাকার বাসিন্দারা।