সুন্দরবন, 15 মে: "রাজা আসে যায়, রাজা বদলায়... দিন বদলায় না ।"- কবিতার এই পঙক্তিগুলোই সারসত্য সুন্দরবনবাসীর কাছ । রাজ্যজুড়ে লোকসভা নির্বাচনের উত্তাপ এখনও এসে পোঁছায়নি জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের বাসন্তী, গোসাবা, কুলতলি, জয়নগর ব্লকে । কারণ, বারবার শাসক বদল হয়, কিন্তু সুন্দরবনের মানুষগুলোর জীবনযাপনে কোনও বদল হয় না । নেই বিকল্প কর্মসংস্থান । নেই মাথার নিরাপদ ছাদ । তাই ভোট নিয়ে মাথাব্যথা নেই জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সুন্দরবনবাসীর ।
সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার নির্বাচন বাকি । স্বাভাবিক ভাবেই নির্বাচনের প্রাক্কালে জয়নগর কেন্দ্রের প্রতিটি ব্লক, বিধানসভা এলাকায় বেড়েছে বিভিন্ন দলের নেতা-নেত্রীর ভিড় । জোরকদমে চলছে প্রচার, মিছিল । কিন্তু ভোট নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ সুন্দরবনের ঝড়খালি, লাহিড়ীপুর, পাখিরালয়, গোসাবা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মৎস্যজীবীরা । সিকান্দর সাহানির মতে, "ভোটের সময়ই নেতাদের দেখা যায় । ভোট শেষ হলেই কোনও নেতাই আমাদের আর চেনে না । শুধু প্রতিশ্রুতিই সার । নদী, খাঁড়িতে মাছ ধরে কোনওরকমে চলে সংসার ।" আরও এক মৎস্যজীবী বলেন, "কোনওরকম সুযোগ-সুবিধা পাই না । স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেই । আয়লার ক্ষতিপূরণও পাইনি । ভোট আসে, ভোট যায় তাতে আমাদের কোনও সুরাহা হয় না । ফলে নদীতে মাছ ধরে, জঙ্গলে কাঠ কেটে, কাঁকড়া ধরে পেট চালাতে হয় ।"
বেঁচে থাকার তাগিদেই প্রাণ হাতে করে রোজ প্রতি মুহূর্তে জীবনযুদ্ধে সামিল হন সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা । ভোট মিটলেই এলাকায় নেতাদের যাতায়াতও বন্ধ হয়ে যায় । যে দলই ভোটে জয়ী হোক না কেন, তাদের কাছে বিকল্প কর্মসংস্থান ও নিরাপদ আশ্রয়ের দাবি করছেন জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা ।