জয়নগর, 3 অক্টোবর : একসময় পুজোর গান মানেই ছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান । গত শতাব্দীর পাঁচের দশক থেকে পর পর কয়েকটি দশক ধরে হেমন্তের গানেই পুজোয় মেতেছিল বাঙালি ।
জন্ম 1920 সালের 16 জুন বারাণসীতে মামার বাড়িতে । কিন্তু ছেলেবেলার একটা দীর্ঘ সময় কেটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার অন্তর্গত বহড়ুর দক্ষিণ পাড়া এলাকায় । এখানেই আদি বাড়ি সঙ্গীত শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের । শিল্পীর জন্ম শতবর্ষে তাই গ্রামের মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে চান তাঁকে । এবছর দুর্গাপুজোর সপ্তমীর দিনটি হেমন্ত দিবস হিসেবে পালিত হবে জয়নগর থানা এলাকা জুড়ে । ওই দিন জয়নগর থানা এলাকার প্রত্যেকটা পুজো মণ্ডপে বাজানো হবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান ।
জয়নগর থানা এলাকায় মোট 103 টি বারোয়ারি ও 25 টি বনেদি বাড়ির পুজো হয়। তাদের কাছে শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানানোর এই অভিনব প্রস্তাবটি প্রথম দেন জয়নগর থানার IC অতনু সাঁতরা । তাঁর এই প্রস্তাবে রাজি হন পুজোর উদ্যোক্তারা । শিল্পীর বিভিন্ন গানের থিম নিয়ে তৈরি হয়েছে ট্যাবলো । সেগুলি নিয়ে সপ্তমীতে হবে প্রভাতফেরি । এরপর জয়নগরের মুক্তমঞ্চে সাংস্কৃতির অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হবে শিল্পীকে । অনেক পুজো কমিটি অবশ্য শুধু সপ্তমী নয়, পুজোর চারদিনই হেমন্তের গান বাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । এছাড়া অনেক পুজো কমিটি শিল্পীর ছবি দিয়ে মণ্ডপ সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে । অনেক মণ্ডপে থাকছে হেমন্তের স্ট্যাচু । তার সঙ্গে সেলফি তোলার জন্য সেলফি স্ট্যান্ডও থাকছে ।
জয়নগরের বহড়ু হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় । ক্লাস সিক্স পর্যন্ত এখানেই পড়াশোনা করেন তিনি । পরে কলকাতায় চলে যান পরিবারের সঙ্গে । হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সেই পিতৃভূমি আজও আছে বহড়ুতে । জরাজীর্ণ, ভগ্নদশা তার । কলকাতায় চলে গেলেও অনেক বছর বহড়ুর সঙ্গে যথেষ্ট যোগাযোগ ছিল হেমন্তের । এখানে লাইব্রেরি তৈরির জন্য কলকাতায় শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান করে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন তিনি । 1989 সালে বহড়ুর শ্যামসুন্দর পাবলিক লাইব্রেরির অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি । সে বছরই 26 সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর ।