ETV Bharat / state

Falta Murder Case Verdict: মিষ্টি ব্যবসায়ীকে খুন, 9 বছর পর অভিযুক্তদের যাবজ্জীবনের সাজা শোনাল আদালত - Falta Murder Case Verdict

ফলতার মিষ্টি ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় 8 অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা শোনাল ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালত ৷ আজ থেকে প্রায় 9 বছর আগে ঠিক কী ঘটেছিল ?

Etv Bharat
ধৃতদের নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ
author img

By

Published : May 30, 2023, 10:54 PM IST

নিহতের মেয়ে ও অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য

ডায়মন্ড হারবার, 30 মে: 2014 সালে মিষ্টি ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় প্রায় 9 বছর পর আজ মঙ্গলবার 7 দোষীকে যাবজ্জীবন সাজা শোনাল আদালত ৷ ঘটনার সূত্রপাত 2014 সালের 29 মার্চ শনিবার ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার ফলতার সাধুরহাটের মোড়ে অবস্থিত একটি মিষ্টির দোকানে রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ ক্রেতা সেজে ঢুকে দই খেয়ে 6 জন দুষ্কৃতী দোকান মালিক কার্তিক ঘোষকে গুলি করে কুপিয়ে খুন করে ৷ খবর পেয়ে তদন্ত নামে দক্ষিণ 24 পরগনা পুলিশ জেলা ৷ দোকানের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পরেরদিনই দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের অফিসাররা ফলতার তেলিয়া গ্রাম থেকে কাদের শেখ, মথুরাপুরের লালপুর গ্রাম থেকে মুজফ্ফর মিস্ত্রি ও সেলিম মিস্ত্রি, রামনগরের বাংলা গ্রাম থেকে আখতার মোল্লা ও ডায়মন্ড হারবারের আমিরা গ্রাম থেকে সাহদাত পাইক নামে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পরবর্তীতে আরও 4 জনকে অর্থাৎ এই ঘটনায় মোট 9 জনকে গ্রেফতার করে । এর মধ্যে একজন আসামী বিচার চলাকালীন মারা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতেরা অপরাধের কথা স্বীকার করে জানায়, ওই মিষ্টি ব্যবসায়ীর সঙ্গে আর্থিক কারণে বিবাদের জেরে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী তাদের খুনের জন্য 'সুপারি' দেয় । তদন্তকারীদের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মুজফ্ফর কার্তিককে গুলি করছে । তারপরে কাদের চপার দিয়ে কোপায় । এর পিছনে কারণ হিসেবে তদন্তকারীরা জানান, মাসখানেক আগে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন কার্তিক। ওই ব্যবসায়ী মাসখানেক আগে তাঁকে খুনের হুমকি দেন । কাদের ফলতার দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ফলতা থানায় ব্যাঙ্ক ডাকাতি-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। এই ঘটনার মাসছয়েক আগে সে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিল ।

কাদের কবুল করে, ওই ব্যবসায়ী তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন । কার্তিককে খুনের জন্য কাদের-সহ 6 জনকে এক লক্ষ 80 হাজার টাকা দেওয়ার কথা দেওয়া হয়েছিল । অগ্রিম 19 হাজার টাকা দেওয়া হয় কাদেরকে। এই খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার 8 আসামীকে সাজা শোনায় ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালত। এর মধ্যে কাদের শেখ বিচার চলাকালীন মারা যায় । বাকি 8 জন অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে আকবর উদ্দিন মোল্লা, সাহজাদ পাইক, মুজাফ্ফর মিস্ত্রি, সহদেব আলি শেখ, উত্তম দলুই, সাইদুল সেখ, রাজা খান, সেলিম মিস্ত্রি এই আটজনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে ফলতা থানার পুলিশ । মঙ্গলবার 8 জনের মধ্যে সাতজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও রাজা খানকে 14 বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালত ।

এই বিষয়ে সরকারি আইনজীবী স্বপন পাইক বলেন, "29 মার্চ 2014 সালে ফলতা থানার এক প্রসিদ্ধ মিষ্টি ব্যবসায়ী কার্তিক ঘোষকে গুলি করে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা । এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে 11 জনের বিরুদ্ধে ফলতা থানাতে অভিযোগ দায়ের করে পরিবারের লোকজনেরা । তদন্তে নেমে ফলতা থানার পুলিশ 9 জনকে গ্রেফতার করে । এই ঘটনার অন্যতম দুই অভিযুক্ত শামিম মোল্লা ও গোপাল সর্দার ঘটনার পর থেকেই পলাতক । দীর্ঘ কয়েকবছরের আইনি লড়াই ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ধৃত 9 জন অভিযুক্তের মধ্যে 8 জনকে আজ সাজা শোনাল আদালত ৷ এর মধ্যে একজন অভিযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া চলার সময়ই মারা যায় । আটজন অভিযুক্তকে মহামান্য বিচারপতি জয়প্রকাশ সিংয়ের এজলাসে মোট 35জন সাক্ষীকে পেশ করা হয় মহামান্য আদালতে ।"

আরও পড়ুন : স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা সাজা! পনেরো বছর পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড স্বামীর

ডায়মন্ড হারবার আদালতের এই নির্দেশে খুশি নন মৃতের পরিবারের লোকজনেরা । এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে মৃতের পরিবারের সদস্যরা ৷ এই বিষয়ে নিহত কার্তিক ঘোষের মেয়ে মোনালিসা ঘোষ বলেন, "যারা আমার বাবাকে নৃশংসভাবে খুন করল তাদের এই শাস্তি কাম্য নয় । আমরা চেয়েছিলাম এই অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিক আদালত । আমরা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করব ।"

নিহতের মেয়ে ও অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য

ডায়মন্ড হারবার, 30 মে: 2014 সালে মিষ্টি ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় প্রায় 9 বছর পর আজ মঙ্গলবার 7 দোষীকে যাবজ্জীবন সাজা শোনাল আদালত ৷ ঘটনার সূত্রপাত 2014 সালের 29 মার্চ শনিবার ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার ফলতার সাধুরহাটের মোড়ে অবস্থিত একটি মিষ্টির দোকানে রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ ক্রেতা সেজে ঢুকে দই খেয়ে 6 জন দুষ্কৃতী দোকান মালিক কার্তিক ঘোষকে গুলি করে কুপিয়ে খুন করে ৷ খবর পেয়ে তদন্ত নামে দক্ষিণ 24 পরগনা পুলিশ জেলা ৷ দোকানের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পরেরদিনই দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের অফিসাররা ফলতার তেলিয়া গ্রাম থেকে কাদের শেখ, মথুরাপুরের লালপুর গ্রাম থেকে মুজফ্ফর মিস্ত্রি ও সেলিম মিস্ত্রি, রামনগরের বাংলা গ্রাম থেকে আখতার মোল্লা ও ডায়মন্ড হারবারের আমিরা গ্রাম থেকে সাহদাত পাইক নামে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পরবর্তীতে আরও 4 জনকে অর্থাৎ এই ঘটনায় মোট 9 জনকে গ্রেফতার করে । এর মধ্যে একজন আসামী বিচার চলাকালীন মারা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতেরা অপরাধের কথা স্বীকার করে জানায়, ওই মিষ্টি ব্যবসায়ীর সঙ্গে আর্থিক কারণে বিবাদের জেরে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী তাদের খুনের জন্য 'সুপারি' দেয় । তদন্তকারীদের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মুজফ্ফর কার্তিককে গুলি করছে । তারপরে কাদের চপার দিয়ে কোপায় । এর পিছনে কারণ হিসেবে তদন্তকারীরা জানান, মাসখানেক আগে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন কার্তিক। ওই ব্যবসায়ী মাসখানেক আগে তাঁকে খুনের হুমকি দেন । কাদের ফলতার দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ফলতা থানায় ব্যাঙ্ক ডাকাতি-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। এই ঘটনার মাসছয়েক আগে সে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিল ।

কাদের কবুল করে, ওই ব্যবসায়ী তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন । কার্তিককে খুনের জন্য কাদের-সহ 6 জনকে এক লক্ষ 80 হাজার টাকা দেওয়ার কথা দেওয়া হয়েছিল । অগ্রিম 19 হাজার টাকা দেওয়া হয় কাদেরকে। এই খুনের ঘটনায় মঙ্গলবার 8 আসামীকে সাজা শোনায় ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালত। এর মধ্যে কাদের শেখ বিচার চলাকালীন মারা যায় । বাকি 8 জন অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে আকবর উদ্দিন মোল্লা, সাহজাদ পাইক, মুজাফ্ফর মিস্ত্রি, সহদেব আলি শেখ, উত্তম দলুই, সাইদুল সেখ, রাজা খান, সেলিম মিস্ত্রি এই আটজনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে ফলতা থানার পুলিশ । মঙ্গলবার 8 জনের মধ্যে সাতজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও রাজা খানকে 14 বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালত ।

এই বিষয়ে সরকারি আইনজীবী স্বপন পাইক বলেন, "29 মার্চ 2014 সালে ফলতা থানার এক প্রসিদ্ধ মিষ্টি ব্যবসায়ী কার্তিক ঘোষকে গুলি করে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা । এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে 11 জনের বিরুদ্ধে ফলতা থানাতে অভিযোগ দায়ের করে পরিবারের লোকজনেরা । তদন্তে নেমে ফলতা থানার পুলিশ 9 জনকে গ্রেফতার করে । এই ঘটনার অন্যতম দুই অভিযুক্ত শামিম মোল্লা ও গোপাল সর্দার ঘটনার পর থেকেই পলাতক । দীর্ঘ কয়েকবছরের আইনি লড়াই ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ধৃত 9 জন অভিযুক্তের মধ্যে 8 জনকে আজ সাজা শোনাল আদালত ৷ এর মধ্যে একজন অভিযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া চলার সময়ই মারা যায় । আটজন অভিযুক্তকে মহামান্য বিচারপতি জয়প্রকাশ সিংয়ের এজলাসে মোট 35জন সাক্ষীকে পেশ করা হয় মহামান্য আদালতে ।"

আরও পড়ুন : স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা সাজা! পনেরো বছর পর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড স্বামীর

ডায়মন্ড হারবার আদালতের এই নির্দেশে খুশি নন মৃতের পরিবারের লোকজনেরা । এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে মৃতের পরিবারের সদস্যরা ৷ এই বিষয়ে নিহত কার্তিক ঘোষের মেয়ে মোনালিসা ঘোষ বলেন, "যারা আমার বাবাকে নৃশংসভাবে খুন করল তাদের এই শাস্তি কাম্য নয় । আমরা চেয়েছিলাম এই অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিক আদালত । আমরা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চতর আদালতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করব ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.