গোসাবা, 26 জুন: একবিংশ শতাব্দীতেও কুসংস্কারের কালো ছায়া গোসাবায় ৷ সাপের কামড়ে মৃত 10 বছরের শিশুকন্যাকে প্রাণ ফিরে পাওয়ার আসায় নদীর জলে ভাসাল গ্রাম ৷
মনসামঙ্গল কাব্যে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয় লখিন্দরের । বেহুলাকে সহ লখিন্দরের মৃতদেহ কলার ভেলায় নদীতে ভাসিয়েছিলেন চাঁদ সওদাগর । সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল গোসাবায় ৷ সাপের কামড়ে মৃত নিজের শিশুকন্যাকে নদীর জলে ভেলায় ভাসিয়ে দিলেন গোসাবা ব্লকের ছোট মোল্লাখালি কালিদাসপুর গ্রামের আর এক চাঁদ সওদাগর দীপ মৃধা ।
ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাবে জঙ্গলের খানাখন্দ ডুবে গিয়েছিল । বিষধর সাপ থেকে পোকামাকড় চলে আসে লোকালয়ে । গতকাল রাত সাড়ে দশটা নাগাদ চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী 10 বছরের পূজা বাবার গলা জড়িয়ে ঘুমাচ্ছিল । তখন এক বিষধর সাপ তার পায়ে কামড়ায় । কালবিলম্ব না করে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করে পূজার পরিবার ও প্রতিবেশীরা ৷
কিন্তু রাস্তা খারাপ থাকার হাসপাতালে না গিয়ে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয় পুজাকে । ঝাড়ফুঁক চলে প্রায় তিন ঘণ্টা । কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে পূজা । এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে ৷
আরও পড়ুন : সুন্দরবনের ভাঙন কবলিত দ্বীপগুলি থেকে সরানো হল বাসিন্দাদের
কিন্তু কুসংস্কারের নির্দশন রেখে সকালে সূর্যের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে তাকে কলার মান্দাসে শুইয়ে গোসাবার সারসা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় ৷ ভেলাতে ধূপ, প্রদীপ ও মশারিও খাটানো হয় ৷ তবে এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল এখনও কতটা কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানবজাতি ৷