জয়নগর, 14 এপ্রিল: চৈত্র সংক্রান্তি মানেই বাংলা ক্যালেন্ডারের বর্ষপূর্তি। আগামিকাল থেকে শুরু হবে বাংলার ক্যালেন্ডারের নতুন অধ্যায়। আর এই চৈত্র মাসের শেষেই গ্রাম বাংলা মেতে ওঠে গাজন উৎসবে। দক্ষিণ 24 পরগনার বেশ কিছু এলাকায় আজও সেই রীতিতে চৈত্রের শেষে গাজন উৎসবের দেখা মেলে। নাচে, গানে জমিয়ে দেন নানা সাজে সেজে ওঠা গাজন শিল্পীরা। দক্ষিণ 24 পরগনার জয়নগর থানা এলাকার শাহজাদাপুরেও ধরা পড়েছে তেমনই ছবি।
মূলত, চৈত্র সংক্রান্তির গাজন শিব ঠাকুরকে ঘিরে। তাই গ্রাম বাংলার মানুষেরা একে চইতে গাজন বলেও অভিহিত করেন। সাধারণত শিবকে নিয়েই বানানো হয় নানান ধরনের গান। নানান সাজে সেই গান পরিবেশন করেই মানুষের মধ্যে আনন্দ দিয়ে থাকেন শিল্পীরা। দক্ষিণ 24 পরগনার শাহজাদাপুরে টানা তিন দিন ধরে চলবে গাজন গান। গ্রামের পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক মানুষরাই মূলত গাজন গানকে কেন্দ্র করে শিবের উপাসনা করেন। গাজন শিল্পী অরূপ নস্কর বলেন, "অন্যান্য দিনগুলিতে দিনমজুরের কাজ করলেও বছরের শেষ চারটে দিন বিশেষ করে ছুটি নিয়ে আসি গাজন করতে। বাংলার ঐতিহ্য সংস্কৃতি থেকে গাজন গান ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বাংলার শিল্প ও সংস্কৃতিতে সাহেবী ছোঁয়া ধীরে ধীরে ধরা পড়েছে। তবে আমরা গাজনকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই চালিয়ে যাব।"
আরও পড়ুন: রুদ্রদেবের গাজন ! মানুষের খুলি নিয়ে নাচ ভক্তদের
গাজন শিল্পী বাসুদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, "টানা 20 বছর ধরে আমি এই গাজনের সঙ্গে যুক্ত। বছরের এই চারটে দিন আমি খুব আনন্দে কাটাই। গাজনের অভিনয় করার মাধ্যমে আমি মানসিক শান্তি খুঁজে পাই। সারাবছর মাঠে-ঘাটে কাজ করলেও বছরের এই চারটে দিন ছুটি নিয়ে গাজন দলে নাম লেখাই। দক্ষিণ 24 পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে আমরা শিবের গাজন গাই।"
চৈত্র সংক্রান্তি থেকে শুরু হয়ে শিবের গাজন চলবে টানা তিন-চার দিন ধরে। বাংলার লোকসংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিবের গাজন। হারিয়ে যাওয়া লোকসংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দক্ষিণ 24 পরগনার গাজন শিল্পীরা।