জয়নগর, 27 নভেম্বর: দলুয়াখাকি গ্রামের মানুষদের বাড়ি জ্বালানোর ঘটনায় সঙ্গে যুক্তদের গ্রেফতারির দাবি নিয়ে সোমবার জয়নগর থানা ঘেরাও কর্মসূচি নিয়েছিল বাম নেতৃত্ব। সোমবার বিকেলে সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা সুজন চক্রবর্তী ও কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কয়েকশো বাম কর্মী সমর্থকরা জয়নগর থানা ঘেরাও করে। বামেদের দাবি, দলুয়াখাকিতে বাড়ি জ্বালানো ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে ও সর্বস্বান্ত মানুষদের সমস্ত রকম ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব নিতে হবে প্রশাসনকে। এছাড়া নিরপেক্ষ তদন্ত করে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের প্রকৃত খুনীদের গ্রেফতার করে কঠোরভাবে সাজা দিতে হবে।
এই বিষয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "আমরা এই খুনের ঘটনার নিন্দা করি। জয়নগরে যে তৃণমূল নেতা খুন হয়েছে সে মাফিয়া নেতা পুলিশের ডাক মাস্টার। আজ তৃণমূলের নেতা-নেতৃত্ব নিরাপদ নয়। পুলিশি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। একটা ফোনকে কেন্দ্র করে গোটা গ্রাম পুড়িয়ে দিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশ এখনও কেন চুপ করে রয়েছে। আমরা এসেছি পুলিশ যাতে নিরপেক্ষ তদন্ত করে অভিযুক্ত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিক।"
গত 13 নভেম্বর ভোর পাঁচটার সময় বাড়ির কাছে স্থানীয় মসজিদে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয় জয়নগর থানার বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্করের (47)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,পাঁচ জন দুষ্কৃতীর ছোড়া গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাঁর শরীর। পালানোর সময় একজনকে ধরে ফেলেন ক্ষিপ্ত জনতা। অভিযোগ, গণপিটুনির জেরে মৃত্যু হয় সাহাবুদ্দিন লস্কর নামে ওই অভিযুক্তের। এরপর অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে ওঠে বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের দলুয়াখাকি গ্রাম।
গ্রামে প্রায় 20-25টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় হামলাকারীরা। শুধু আগুন নয় 20-25টি বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়। এরপরও গোটা গ্রাম কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে যায়। গ্রামের মহিলা ও শিশুরা আশ্রয় নেন দক্ষিণ বারাসাতের সিপিএমের দলীয় কার্যালয়। গ্রামবাসীদের আভিযোগ, তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করের খুনের ঘটনায় পর গ্রামের মধ্যে থাকা সিপিএম কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে বেছে বেছে হামলা ও আগুন লাগায় হামলাকরীরা।এরপর কেটে গিয়েছে কয়েকটা দিন ৷
ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে জয়নগরের দলুয়াখাকি গ্রাম। এরপর গ্রামের অসহায় মানুষদের সাহায্য জন্য এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। গ্রামে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছনোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সিপিএম। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সামগ্রী বিতরণ করা হয়। দলুয়াখাকিতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে জয়নগর থানার পুলিশ। কিন্তু এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: