বসিরহাট, ১৬ মার্চ : "লোকসভা নির্বাচনের পর বাংলার এই সরকার ৬ মাসও চলবে না। নতুন নির্বাচন হবে রাজ্য বিধানসভার। তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায় প্রায় নিশ্চিত।" গতকাল বসিরহাটের টাকিতে দলীয় কর্মীসভায় একথা বললেন BJP নেতা রাহুল সিনহা।
গতকাল টাকি সংস্কৃতি মঞ্চে BJP-র কর্মীসভা ছিল। সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন রাহুল। কর্মীসভা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাহুল বলেন, "ধর্মের ভেদাভেদ করি না। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে যদি কোনও তফাত থাকত তবে আমরা ভেদাভেদ করতাম। কারণ আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নই, ওঁর পার্টি নই। তৃণমূল মুসলিম স্কুলের ছাত্রীদের সাইকেল দেয়। অথচ হিন্দু স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সাইকেল পায় না। এই বৈষম্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু করিয়েছিল। এই বৈষম্য আমরা ঘোচাতে চাই। গরিব, অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে চাই। তার ধর্ম, জাত, ভাষা এসব আমরা দেখতে চাই না।"
বসিরহাট কেন্দ্রে নুসরত জাহানকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো নিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি। এই বিষয়ে তিনি বলেন, "এভাবে ভোটে জেতা যায় না। নায়িকাদের দাঁড় করিয়ে কিছু লোক জড়ো করা যায়। ভোটের ময়দানে জেতা যায় না। আমরা এমন একজন ব্যক্তিকে দাঁড় করাব, যিনি মানুষের হয়ে কাজ করবেন। আরও অনেকে BJP-তে আসবেন বলে মুখিয়ে রয়েছেন। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। লোকসভা ভোট মিটলেই আরও অনেকে BJP-তে যোগ দেবেন। ভোটের পর এই সরকার ছ'মাসও চলবে না।" বসিরহাটে কেন এখনও BJP-র প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি? তাঁর উত্তরে রাহুলবাবু বলেন, "প্রার্থী সারা দেশেই ঘোষণা করা হয়নি। কোনও দলই করেনি। তৃণমূল কংগ্রেস প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সম্পত্তি। উনি একমাত্র মালিক, বাকি সব কর্মচারী। সেই কারণে ওঁর পক্ষে এসব সহজ। আমরা একটা গণতান্ত্রিক দল।"
তিনি আরও বলেন, "আজ দিকভ্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেসের লোকেরা। বিভিন্ন ক্ষেত্রের নেতা ও কার্যকর্তারা BJP-তে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যখন ভারত সংকটে, ভারতের সেনাবাহিনী গৌরবের সঙ্গে পাকিস্তানের উপর হামলা চালাল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাকিস্তানের পক্ষে, আতঙ্কবাদের পক্ষে বক্তব্য রাখছেন। যেটা দুর্ভাগ্যজনক। এই কারণের জন্য আজ সারা বাংলায় প্রশ্ন উঠেছে পাকিস্তান এগিয়ে গেলে আতঙ্কবাদীরা সবল হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কি খুশি হবে? এই প্রশ্ন আজ জনগণের মধ্যে ঘুরছে। সেই কারণের জন্য আমি বলতে চাই, তৃণমূল কংগ্রেসের ভাঙন শুরু হয়েছে। আরও প্রচুর লোক আসবে। বহু লোক লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করছে।"