ETV Bharat / state

Cyclone Yaas : যশে সর্বস্ব হারিয়ে নদীবাঁধে আশ্রয়, সরকারি সাহায্যের আশায় বৃদ্ধ দম্পতি - Cyclone Yaas : যশে সর্বস্ব হারিয়ে নদীবাঁধের উপরে বাস বৃদ্ধ দম্পতির, আশা সরকারি সাহায্যের

ঘূর্ণিঝড় যশের তাণ্ডবে ভিটে-মাটি সব গিয়েছে নদীগর্ভে ৷ তাই এখন ঠিকানা নদীর বাঁধ ৷ সেখানেই বাঁধের উপর ত্রিপলের ছাউনিতে বাস করতে হচ্ছে অশীতিপর এক দম্পতিকে ৷ জানালেন, সরকারি সাহায্য তেমন কিছু মেলেনি ৷ তবে আশা রাখছেন যদি সরকারের তরফে সাহায্য কিছু পাওয়া যায় ৷ খবর পেয়েছেন বিডিও ৷ তিনি বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ৷

নামখানায় ঘূর্ণিঝড় যশের তাণ্ডব
নামখানায় ঘূর্ণিঝড় যশের তাণ্ডব
author img

By

Published : Jun 28, 2021, 6:13 PM IST

নামখানা, 28 জুন : নদীর ধারে বাস, চিন্তা বারো মাস । কথাটি যেন সুন্দরবনের মানুষের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে । সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজন একাধিক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়ে একটু একটু করে হারিয়েছে তাঁদের ভিটেমাটি ।

গত 26 মে সুন্দরবনের আছড়ে পড়েছিল বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় যশ । ঘূর্ণিঝড় যশ ও পূর্ণিমার ভরা কোটালের জেরে সুন্দরবনের নদীগুলি মুহূর্তের মধ্যে রুদ্ররূপ ধারণ করে ৷ স্বমহিমায় সুন্দরবনের একাধিক গ্রামকে ভাসিয়ে দিয়েছিল । সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী কোনও নদীবাঁধ না থাকায় প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় হারাতে হয় শেষ সম্বলটুকুও । একই গল্প নামখানার বাসিন্দা অশীতিপর এক দম্পতির ৷

নাদাভাঙার বেরাঘেরী গ্রামের বাসিন্দা খগেন ভুঁইয়া (95) বয়সের ভারে ঠিকমতো চলতেও পারেন না । বেশ কয়েক বছর আগে পারিবারিক বিবাদের জেরে একমাত্র ছেলে তাঁদের ঘরছাড়া করে । যশ ধেয়ে আসার আগে আশ্রয় নিয়েছিলেন সরকারি ত্রাণ শিবিরে ৷ সুপার সাইক্লোনের শেষে ফিরে দেখেন যশের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি সব গিয়েছে নদীগর্ভে ৷ ঘর নেই, তাই কোনওমতে ত্রিপল ঘিরে স্ত্রী আঙ্গুরাবালাকে নিয়ে বাস করতে হচ্ছে নদীবাঁধের উপরেই ৷ বৃদ্ধ দম্পতির জীবিকা বলতে নদীর মাছ ধরে তা পাড়া-গাঁয়েই বিক্রি করা ৷ নদীতে জলস্ফীতির পর এখন সেটাও বন্ধ ৷ ভরসা সরকারি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির ত্রাণ ৷ এই ত্রাণের ভরসাতেই দিন কাটছে তাঁদের ।

নামখানায় ঘূর্ণিঝড় যশের তাণ্ডব
নদীবাঁধের উপর ত্রিপলের ছাউনিতে আঙ্গুরবালা এবং খগেন ভুঁইয়া ৷

খগেন ভুঁইয়া বলেন, "মাসখানেক আগের ঘূর্ণিঝড় যশের সময় শেষ সম্বলটুকুরও মায়া ত্যাগ করে ত্রাণ শিবিরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম । ত্রাণ শিবির থেকে ফিরে এসে দেখলাম ঘরবাড়ি বলতে আর কিছুই নেই । সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে । যশের তাণ্ডবের জেরে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় গোটা গ্রাম । নদীগর্ভে চলে গিয়েছে ঘরবাড়ি । সেই থেকেই এই বাঁধের উপর ত্রিপলের ছাউনিতেই আছি ৷"

আঙ্গুরাবালা জানান, আয়লা থেকে আমফান, বুলবুল থেকে যশ বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় যখনই সুন্দরবনের হানা দিয়েছে তখনই নদীগর্ভে একটু একটু করে বিলীন হয়েছে সুন্দরবনের মানুষের জমি থেকে ঘরবাড়ি । সেই আয়লার সময় থেকে তাঁদের সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত তেমন কিছু পাননি ৷ নদী ভাঙন নিয়ে ভয়মুক্ত থাকার কোনও জায়গাই নেই ৷ তবে সময়মতো সরকারি সাহায্য পেলে দিনযাপনে সুবিধা হয় ৷

সরকারি সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন দুঃস্থ দম্পতি

আরও পড়ুন : এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা ! যশের ঘা শুকোনোর আগেই ভরা কোটালের ভ্রুকুটি

খবর পেয়ে বৃদ্ধ দম্পতির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন । নামখানা ব্লকের বিডিও শান্তনু ঠাকুর বলেন, "বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে । রাজ্য সরকারের দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের মাধ্যমে বৃদ্ধ দম্পতির ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি সব রকমের সাহায্যে করতে পারব আমরা । খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে । প্রশাসনের আশ্বাসে পর বৃদ্ধা দম্পতির চাতকের মতো চেয়ে রয়েছে কবে মিলবে সাহায্য ।"

আরও পড়ুন : শনিবার ভরা কোটাল, অশনি সংকেত দেখছে সুন্দরবন

একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা । ঠিক এক মাস পরই শনিবার প্রশাসনের তরফ থেকে আবারও জারি করা হয় সর্তকতা । পূর্ণিমার কোটালের জেরে নদীগুলির জলস্ফীতি বাড়বে ৷ ফের বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ৷ ফের ভয়েই কাঁটা হয়ে ছিল উপকূলবর্তী বসতিগুলি ৷ সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল । কিন্তু আশঙ্কা থাকলেও কিছু না হয় খানিকটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সুন্দরবনবাসী ।

আরও পড়ুন : Sundarbans : ত্রাণের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা নোনা জলে, বাড়ছে স্ত্রীরোগ

নামখানা, 28 জুন : নদীর ধারে বাস, চিন্তা বারো মাস । কথাটি যেন সুন্দরবনের মানুষের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে । সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজন একাধিক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়ে একটু একটু করে হারিয়েছে তাঁদের ভিটেমাটি ।

গত 26 মে সুন্দরবনের আছড়ে পড়েছিল বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় যশ । ঘূর্ণিঝড় যশ ও পূর্ণিমার ভরা কোটালের জেরে সুন্দরবনের নদীগুলি মুহূর্তের মধ্যে রুদ্ররূপ ধারণ করে ৷ স্বমহিমায় সুন্দরবনের একাধিক গ্রামকে ভাসিয়ে দিয়েছিল । সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে স্থায়ী কোনও নদীবাঁধ না থাকায় প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় হারাতে হয় শেষ সম্বলটুকুও । একই গল্প নামখানার বাসিন্দা অশীতিপর এক দম্পতির ৷

নাদাভাঙার বেরাঘেরী গ্রামের বাসিন্দা খগেন ভুঁইয়া (95) বয়সের ভারে ঠিকমতো চলতেও পারেন না । বেশ কয়েক বছর আগে পারিবারিক বিবাদের জেরে একমাত্র ছেলে তাঁদের ঘরছাড়া করে । যশ ধেয়ে আসার আগে আশ্রয় নিয়েছিলেন সরকারি ত্রাণ শিবিরে ৷ সুপার সাইক্লোনের শেষে ফিরে দেখেন যশের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি সব গিয়েছে নদীগর্ভে ৷ ঘর নেই, তাই কোনওমতে ত্রিপল ঘিরে স্ত্রী আঙ্গুরাবালাকে নিয়ে বাস করতে হচ্ছে নদীবাঁধের উপরেই ৷ বৃদ্ধ দম্পতির জীবিকা বলতে নদীর মাছ ধরে তা পাড়া-গাঁয়েই বিক্রি করা ৷ নদীতে জলস্ফীতির পর এখন সেটাও বন্ধ ৷ ভরসা সরকারি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির ত্রাণ ৷ এই ত্রাণের ভরসাতেই দিন কাটছে তাঁদের ।

নামখানায় ঘূর্ণিঝড় যশের তাণ্ডব
নদীবাঁধের উপর ত্রিপলের ছাউনিতে আঙ্গুরবালা এবং খগেন ভুঁইয়া ৷

খগেন ভুঁইয়া বলেন, "মাসখানেক আগের ঘূর্ণিঝড় যশের সময় শেষ সম্বলটুকুরও মায়া ত্যাগ করে ত্রাণ শিবিরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম । ত্রাণ শিবির থেকে ফিরে এসে দেখলাম ঘরবাড়ি বলতে আর কিছুই নেই । সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে । যশের তাণ্ডবের জেরে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় গোটা গ্রাম । নদীগর্ভে চলে গিয়েছে ঘরবাড়ি । সেই থেকেই এই বাঁধের উপর ত্রিপলের ছাউনিতেই আছি ৷"

আঙ্গুরাবালা জানান, আয়লা থেকে আমফান, বুলবুল থেকে যশ বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় যখনই সুন্দরবনের হানা দিয়েছে তখনই নদীগর্ভে একটু একটু করে বিলীন হয়েছে সুন্দরবনের মানুষের জমি থেকে ঘরবাড়ি । সেই আয়লার সময় থেকে তাঁদের সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত তেমন কিছু পাননি ৷ নদী ভাঙন নিয়ে ভয়মুক্ত থাকার কোনও জায়গাই নেই ৷ তবে সময়মতো সরকারি সাহায্য পেলে দিনযাপনে সুবিধা হয় ৷

সরকারি সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন দুঃস্থ দম্পতি

আরও পড়ুন : এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা ! যশের ঘা শুকোনোর আগেই ভরা কোটালের ভ্রুকুটি

খবর পেয়ে বৃদ্ধ দম্পতির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন । নামখানা ব্লকের বিডিও শান্তনু ঠাকুর বলেন, "বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে । রাজ্য সরকারের দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পের মাধ্যমে বৃদ্ধ দম্পতির ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি সব রকমের সাহায্যে করতে পারব আমরা । খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে । প্রশাসনের আশ্বাসে পর বৃদ্ধা দম্পতির চাতকের মতো চেয়ে রয়েছে কবে মিলবে সাহায্য ।"

আরও পড়ুন : শনিবার ভরা কোটাল, অশনি সংকেত দেখছে সুন্দরবন

একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন সুন্দরবনের উপকূল তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা । ঠিক এক মাস পরই শনিবার প্রশাসনের তরফ থেকে আবারও জারি করা হয় সর্তকতা । পূর্ণিমার কোটালের জেরে নদীগুলির জলস্ফীতি বাড়বে ৷ ফের বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ৷ ফের ভয়েই কাঁটা হয়ে ছিল উপকূলবর্তী বসতিগুলি ৷ সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল । কিন্তু আশঙ্কা থাকলেও কিছু না হয় খানিকটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন সুন্দরবনবাসী ।

আরও পড়ুন : Sundarbans : ত্রাণের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা নোনা জলে, বাড়ছে স্ত্রীরোগ

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.