ফলতা, 18 জুন: সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট । আর এটাই 24-এর লোকসভা ভোটের আগে কার্যত অ্যাসিড টেস্ট রাজ্যের সবক'টি রাজনৈতিক দলের কাছে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের সঙ্গেই সুযোগ বুঝে লোকসভা ভোটের প্রস্তুতিও ঝালিয়ে নিচ্ছে তৃণমূল-বিজেপি সবপক্ষই ৷ রবিবার ডায়মন্ডহারবারের ফলতা অর্থাৎ নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে 'নিঃশব্দ বিপ্লব' অনুষ্ঠানে সেই লোকসভাতেই লড়াইয়ের ডাক দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে যে তৃণমূল যথেষ্ট ভালো ফল করবে, সে ব্যাপারে প্রত্যয় ঝরে পড়ল তৃণমূলের 'সেকেন্ড ইন কমান্ড'-এর গলায় ৷
এদিন ফলতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক সাফ জানান, একুশের ভোটে যে ব্যবধান ছিল, তা 23-এর পঞ্চায়েত ভোটে বাড়বে তৃণমূলের ৷ আর আগামী বছর অর্থাৎ চব্বিশের লোকসভা ভোটে সেই ব্যবধান আরও বাড়বে। 2014 সাল থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রে তৃণমূলের সাংসদ। 2019-এ দ্বিতীয়বার সাংসদ হওয়ার পর থেকে তিনি প্রতি বছর নিজের কাজের খতিয়ান প্রকাশ করেন কেন্দ্রে। অনেকটা রিপোর্ট কার্ড স্টাইলে ৷ এই ধরনের খতিয়ান পেশ জনগণের স্বার্থেই বলে জানান সাংসদ।
এবারও ফলতা থেকে 'নিঃশব্দ বিপ্লব' নামে একটি বই প্রকাশ করলেন সাংসদ অভিষেক। গত এক বছরে কী কাজ হয়েছে তাঁর কেন্দ্রে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে ওই বইয়ে। এদিন অভিষেকের সঙ্গে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সামিল হলেন এলাকার সকল তৃণমূল বিধায়ক। সেই মঞ্চ থেকেই অভিষেক এদিন সামনে যে বড় রাজনৈতিক লড়াই রয়েছে, তার ইঙ্গিত দেওয়ার পাশাপাশি লড়াইয়ের ডাকও দিলেন। বিজেপি বিরোধিতায় শান দিলেন আরও খানিকটা। এদিন তিনি বলেন, "বিজেপির সঙ্গে তো টাকা-ইডি-সিবিআই আছে। আর আমাদের সঙ্গে আছে মানুষ। মনে রাখবেন, ইডি-সিবিআইরা ভোট দেয় না। ভোট দেয় জনতা-জনার্দন। আর আমি জানি সেই ভোট, সেই সমর্থন আমাদের সঙ্গেই আছে। এবার জেলা পরিষদের সবক'টি আসনে জিতবে তৃণমূল।”
আরও পড়ুন: ধুতি-পাঞ্জাবীতে 'শূন্য'র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, তীব্র কটাক্ষ কুণালের
পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে স্বাগত জানিয়ে অভিষেকের বক্তব্য, "হাইকোর্ট আমাদের খুব সুবিধা করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা বলে। সব জায়গায় থাকুক কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবু সব জায়গাতেই জিতবে তৃণমূল।”এদিন স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সন্তানদের বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া নিয়েও এদিনের সভায় গর্জে ওঠেন অভিষেক। তিনি বলেন, "আমার তিন বছরের ছেলে আর নয় বছরের মেয়েকেও বাইরে যেতে দিচ্ছে না ইডি। এত প্রতিহিংসা! সবকিছুতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা। কিন্তু এভাবে আমাকে দমানো যাবে না। যতদিন রাজনীতিতে আছি, মাথা উঁচু করে লড়াই করব। যখন রাজনীতি ছেড়ে দেব, তখন ছেড়েই দেব। অন্যভাবে জনগণের সেবা করব।” তবে তাঁর বক্তব্যের এই অংশ নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেরিয়ারের এমন সফলতম সময়ে কেন যুব নেতার মুখে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার কথা? জল্পনা রাজনৈতিক মহলে ৷