সাগর, 8 জুন : টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে লক্ষ্মীর ভাঁড়ে অল্প অল্প করে টাকা জমাত বছর বারোর এক পড়ুয়া । ইচ্ছে ছিল ওই টাকা দিয়ে মজার কিছু গল্পের বই কিনবে সে । কিন্তু, ঘূর্ণিঝড় যশ ও ভরা কোটলের জেরে প্লাবিত হয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনার সুন্দরবন ও তার আশেপাশের বহু গ্রাম ৷ বাড়িঘর হারিয়ে অসহায় মানুষরা আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে ৷ এবার তাঁদের পাশে দাঁড়াতে লক্ষ্মীর ভাঁড় নিয়ে হাজির হল ওই বালক ৷ আশ্রয় শিবিরের দায়িত্বে থাকা এলাকার এক শিক্ষকের হাতে ভাঁড়টি তুলে দিয়ে সে বলে, ‘‘ছোট ছোট ভাই বোনদের কিছু বিস্কুট কিনে দেবেন স্যার ৷’’
দক্ষিণ 24 পরগনার সাগরের কীর্তনখালি এলাকার বাসিন্দা শান্তম ভূঁইয়া স্থানীয় মনসাদ্বীপ সুরেন্দ্রনাথ অ্যাকাডেমি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র । তার বাড়ির কাছাকাছি অধিকাংশ এলাকায় জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল । তাই দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে শুক্রবার সকালে নিজের টিফিনের টাকা থেকে বাঁচানো অর্থ নিয়ে হাজির হয় মহিষামারী আইসিডিএস সেন্টারের ত্রাণ শিবিরে । দায়িত্বে থাকা শিক্ষক পলাশ দাসের হাতে তুলে দেয় ভাঁড়টি । সেখান থেকে 412 টাকা পাওয়া গিয়েছে । সেই টাকায় বিস্কুট ও শুকনো খাবার কিনে তুলে দেওয়া হয় ত্রাণ শিবিরের ছোটদের হাতে । শান্তম জানায়, ‘‘স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকারা সবসময় অসহায়দের সাহায্য করার জন্য বলতেন । টাকা জমিয়েছিলাম কিছু গল্পের বই কিনব বলে । কিন্তু জলমগ্ন সাগরের অসহায় মানুষের অবস্থা দেখে আর চুপ করে বসে থাকতে পারিনি । তাই ভাঁড়ে যা জমেছে সেটাই দিয়েছি ৷ যাতে ছোট ছোট ভাই বোনেরা বিস্কুট খেতে পারে ৷’’
আরও পড়ুন : সুন্দরবন এলাকায় ত্রাণ ডায়মন্ডহারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের
সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শান্তমের ভাঁড়ে জমানো টাকা দিয়ে বিস্কুট ও শুকনো খাবার কিনে অসহায় শিশুদের হাতে তুলে দিলেন শিক্ষক পলাশ দাস । তিনি বলেন, ‘‘ক্লাস সেভেনের পড়ুয়া যে কাণ্ড ঘটিয়েছে তা নজিরবিহীন । এই বিপদের দিনে যেভাবে সে এগিয়ে এসেছে, তা আমাদের কাছে শিক্ষণীয় ৷’’