দিনহাটা, 2 জুলাই: জেলায় পরিস্থিতি নিজের চোখে খতিয়ে দেখতে গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ এর মধ্যে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের গিতালদহ ৷ এবার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী খলিল হকের ছেলে রাজু হককে অপহরণের অভিযোগ উঠল ৷ তাতে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে কোচবিহারের গিতালদহ ৷ সংঘর্ষের ঘটনায় জখম তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাফুজার রহমান-সহ 6 জন ৷ গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে 3 জনকে কোচবিহারে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ রাজ্যপালের কোচবিহার সফর চলাকালীন গিতালদহ-1 গ্রামপঞ্চায়েতের ভোরাম গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে ৷
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক জানান, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে ৷ খবর পেয়ে রাতেই দিনহাটা পুলিশের এসডিপিও ত্রিদিব সরকার-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে ধড়পাকড় শুরু করেছে ৷ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি ৷ দিনহাটা শহরে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি অজয় রায় পালটা অভিযোগ করেন, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে ৷
আরও পড়ুন: কোচবিহারে ভোট সন্ত্রাসে নিহতদের বাড়িতে রাজ্যপাল, অভিযোগ জানাতে এসে পুলিশি বাধার মুখে বাম কংগ্রেস
2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৷ সেসময় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী আবু মিঞাঁকে খুন করা হয় ৷ দলের টিকিট না-পেয়ে তৃণমূল যুবর ব্যানারে দলের একটা বড় অংশ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে ৷ তারপর পঞ্চায়েত নির্বাচন চলা পর্যন্ত প্রায় প্রতি রাতেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ৷ নির্বাচনের দিন এতটাই অশান্তি ছিল যে ভোট কেন্দ্র ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল ভোটকর্মীরা ৷
পরে অশান্তি কিছুটা কমলেও এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আসতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দিনহাটা ৷ এর আগে স্ক্রুটিনি ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল দিনহাটা-2 নম্বর ব্লকের সাহেবগঞ্জে ৷ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছলে উত্তেজনা ছড়ায় ৷ চলে বোমাবাজি ৷ দুই মন্ত্রী একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ পালটা অভিযোগ করেছেন ৷ এরপর দিনহাটার গিতালদহের কোনামুক্তা গ্রামে তৃণমূল প্রার্থীর স্বামীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে ৷
আরও পড়ুন: দিনহাটায় গুলিবিদ্ধ তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রার্থীর স্বামী, অভিযোগ তির বিজেপির দিকে
এছাড়া প্রার্থী নিয়ে বিরোধের জেরে দিনকয়েক আগে দিনহাটা থানার ওকড়াবাড়িতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ৷ গুলি চলে, বোমাবাজি হয় । এরপর দিনদুয়েক আগে পুঁটিমারি-1 গ্রামপঞ্চায়েতের খারিজা বালাকুড়া গ্রামে এক নির্দল প্রার্থীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি ও ভাঙচুর করা হয় ৷ শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয় ৷ এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দিনহাটার বিভিন্ন এলাকায় ৷ এরপর গত মঙ্গলবার ভোররাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিনহাটার গিতালদহের জারিধরলা গ্রাম ৷ এটি ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত ৷ সেখানে গুলিতে নিহত হন বাবু হক নামের এক তৃণমূল কর্মী ৷ সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই শনিবার রাতে নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে ৷