ETV Bharat / state

লকডাউনে 4 মাস বন্ধ বেতন, সমস্যায় একাধিক বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা

স্কুল থেকে বেতন না পেয়ে সমস্যায় অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকা ৷ কেউ জানালেন, এখন টিউশনও বন্ধ ৷ ফলে, সেখান থেকে রোজগার হচ্ছে না ৷ আবার কেউ জানালেন, তিনি অনলাইনে ক্লাস শুরু করিয়ে ছিলেন ৷ কিন্তু, সবার কাছে স্মার্টফোন থা থাকায় তা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায় ৷

Coochbehar
সমস্যায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা
author img

By

Published : Jul 24, 2020, 5:09 PM IST

কোচবিহার , 24 জুলাই : কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে মার্চ থেকে বন্ধ সরকারি ও বেসরকারি স্কুল । তবে পঠন-পাঠন বন্ধ হয়নি । অনলাইনের মাধ্যমে সরকারি স্কুলগুলিতে পড়াশোনা চলছে । সরকারি স্কুলগুলির পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলগুলিতেও অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়েছে । তবে এর মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেতন পাচ্ছেন না । ফলে অসুবিধায় পড়ছেন তাঁরা।

কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষাসংসদ ও শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলার পাঁচটি মহকুমায় অন্তত 150টি বেসরকারি স্কুল রয়েছে । এই স্কুলগুলির মধ্যে তিনটি ICSE বোর্ডের, ১৫ টি CBSE বোর্ডের অধীনে আর বাকি স্কুলগুলি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের অধীনে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কুলগুলি ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন ফি দিয়েই চলে । কিন্তু, গত মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই লকডাউন শুরু হতেই বন্ধ হয়ে যায় সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলি । আর এই পঠন-পাঠন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে অভিভাবকদের একটা বড় অংশ স্কুলগুলিতে বেতন দেওয়া বন্ধ করে দেয় । পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথম সারির স্কুলগুলিতে অনলাইনে ক্লাস চালু হলেও বাকি স্কুলগুলিতে পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে অনলাইনে ক্লাস চালু করা যায়নি বা চালুর পরেও বন্ধ হয়ে গেছে । ফলে ওইসব স্কুলগুলিতে বেতনও বন্ধ হয়ে গিয়েছে । আর এতেই সমস্যায় পড়েছেন প্রায় দুই হাজারের মতো শিক্ষক-শিক্ষিকা । অভিযোগ, স্কুলের বেতন দিয়ে সংসার চালাতে হয় এইসব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের । কিন্তু, লকডাউনের পর থেকেই বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে । তাই সংসার চালাতে চরম অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের । জেলার বিভিন্ন শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুলে আংশিক বেতন পেলেও অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রায় চার মাস ধরে কোনও বেতন পাচ্ছেন না ।

সমস্যায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা

কোচবিহারের এক বাংলা মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক তন্ময় সাহা বলেন, " লকডাউন হওয়ার কারণে বেসরকারি স্কুলগুলির তরফে কোনওরকম আর্থিক সাহায্য আমরা পাচ্ছি না । 14 মার্চ স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মার্চের বেতন পেয়েছিলাম । তারপর থেকে আজ পর্যন্ত বেতন পাইনি । গৃহ শিক্ষকতাও বন্ধ । ফলে আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয় । " আর একজন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক শশাঙ্ক দেবনাথ বলেন, "গত চারমাসের মধ্যে এক মাসের বেতন পেয়েছি । জুলাই মাসের বেতন পাব কি না জানি না । এই বেতনের উপর নির্ভর করেই আমাদের সংসার চলে । খুব টানাটানির মধ্যে দিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে আমাদের ।"

অনেকের কাছে স্মার্ট ফোন নেই । ফলে অনলাইনে ক্লাস চালু করেও বন্ধ করে দিতে হয়েছে । এই প্রসঙ্গে দিনহাটার এক বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক হীরক সরকার বলেন , "প্রথম দিকে অনলাইনে ক্লাস শুরু করেছিলাম । অনেকেরই স্মার্ট ফোন না থাকায় ক্লাস বেশিদিন চলেনি । ফলে অভিভাবকরাও বেতন দিচ্ছেন না ।" এক বেসরকারি স্কুলের কর্ণধার সুবর্ণশেখর সাহা বলেন, "সরকারি যে নির্দেশিকা রয়েছে, সেই অনুযায়ী লকডাউনের কারণে স্কুল খোলেনি । বন্ধ আছে । আমরা অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করছি । তবে নানা সমস্যা থাকায় অনেকের অসুবিধা হচ্ছে । সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে বেতন দেওয়ার ব্যাপারে অভিভাবকদের মধ্যে অনীহা তৈরি হচ্ছে । যোগাযোগ করতে চাইছে না । বেতনও দিতে চাইছে না । আমরা শিক্ষকদের বেতন দিতে পাচ্ছি না । একটা বাজে পরিস্থিতির মধ্যে কাটাতে হচ্ছে আমাদের । আর এতে ছাত্রদের ভবিষ্যত কী হবে সেটা নিয়েও আমাদের সন্দেহ হচ্ছে ।"

পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা কেউ জানে না । এই সময়ে পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা । এই বিষয়ে শিক্ষক হীরক সরকার বলেন , "আমরা চাইছি যত বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আছেন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী যেন একবার তাদের দিকটা ভেবে দেখেন । না হলে আমরা খুবই অসুবিধার মধ্যে আছি । "

কোচবিহার , 24 জুলাই : কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে মার্চ থেকে বন্ধ সরকারি ও বেসরকারি স্কুল । তবে পঠন-পাঠন বন্ধ হয়নি । অনলাইনের মাধ্যমে সরকারি স্কুলগুলিতে পড়াশোনা চলছে । সরকারি স্কুলগুলির পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলগুলিতেও অনলাইনে পড়াশোনা শুরু হয়েছে । তবে এর মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেতন পাচ্ছেন না । ফলে অসুবিধায় পড়ছেন তাঁরা।

কোচবিহার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষাসংসদ ও শিক্ষাদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলার পাঁচটি মহকুমায় অন্তত 150টি বেসরকারি স্কুল রয়েছে । এই স্কুলগুলির মধ্যে তিনটি ICSE বোর্ডের, ১৫ টি CBSE বোর্ডের অধীনে আর বাকি স্কুলগুলি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের অধীনে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্কুলগুলি ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন ফি দিয়েই চলে । কিন্তু, গত মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই লকডাউন শুরু হতেই বন্ধ হয়ে যায় সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলি । আর এই পঠন-পাঠন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে অভিভাবকদের একটা বড় অংশ স্কুলগুলিতে বেতন দেওয়া বন্ধ করে দেয় । পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রথম সারির স্কুলগুলিতে অনলাইনে ক্লাস চালু হলেও বাকি স্কুলগুলিতে পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে অনলাইনে ক্লাস চালু করা যায়নি বা চালুর পরেও বন্ধ হয়ে গেছে । ফলে ওইসব স্কুলগুলিতে বেতনও বন্ধ হয়ে গিয়েছে । আর এতেই সমস্যায় পড়েছেন প্রায় দুই হাজারের মতো শিক্ষক-শিক্ষিকা । অভিযোগ, স্কুলের বেতন দিয়ে সংসার চালাতে হয় এইসব স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের । কিন্তু, লকডাউনের পর থেকেই বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে । তাই সংসার চালাতে চরম অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁদের । জেলার বিভিন্ন শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুলে আংশিক বেতন পেলেও অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রায় চার মাস ধরে কোনও বেতন পাচ্ছেন না ।

সমস্যায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা

কোচবিহারের এক বাংলা মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক তন্ময় সাহা বলেন, " লকডাউন হওয়ার কারণে বেসরকারি স্কুলগুলির তরফে কোনওরকম আর্থিক সাহায্য আমরা পাচ্ছি না । 14 মার্চ স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মার্চের বেতন পেয়েছিলাম । তারপর থেকে আজ পর্যন্ত বেতন পাইনি । গৃহ শিক্ষকতাও বন্ধ । ফলে আমাদের অবস্থা খুবই শোচনীয় । " আর একজন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক শশাঙ্ক দেবনাথ বলেন, "গত চারমাসের মধ্যে এক মাসের বেতন পেয়েছি । জুলাই মাসের বেতন পাব কি না জানি না । এই বেতনের উপর নির্ভর করেই আমাদের সংসার চলে । খুব টানাটানির মধ্যে দিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে আমাদের ।"

অনেকের কাছে স্মার্ট ফোন নেই । ফলে অনলাইনে ক্লাস চালু করেও বন্ধ করে দিতে হয়েছে । এই প্রসঙ্গে দিনহাটার এক বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক হীরক সরকার বলেন , "প্রথম দিকে অনলাইনে ক্লাস শুরু করেছিলাম । অনেকেরই স্মার্ট ফোন না থাকায় ক্লাস বেশিদিন চলেনি । ফলে অভিভাবকরাও বেতন দিচ্ছেন না ।" এক বেসরকারি স্কুলের কর্ণধার সুবর্ণশেখর সাহা বলেন, "সরকারি যে নির্দেশিকা রয়েছে, সেই অনুযায়ী লকডাউনের কারণে স্কুল খোলেনি । বন্ধ আছে । আমরা অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করছি । তবে নানা সমস্যা থাকায় অনেকের অসুবিধা হচ্ছে । সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে বেতন দেওয়ার ব্যাপারে অভিভাবকদের মধ্যে অনীহা তৈরি হচ্ছে । যোগাযোগ করতে চাইছে না । বেতনও দিতে চাইছে না । আমরা শিক্ষকদের বেতন দিতে পাচ্ছি না । একটা বাজে পরিস্থিতির মধ্যে কাটাতে হচ্ছে আমাদের । আর এতে ছাত্রদের ভবিষ্যত কী হবে সেটা নিয়েও আমাদের সন্দেহ হচ্ছে ।"

পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা কেউ জানে না । এই সময়ে পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা । এই বিষয়ে শিক্ষক হীরক সরকার বলেন , "আমরা চাইছি যত বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আছেন, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী যেন একবার তাদের দিকটা ভেবে দেখেন । না হলে আমরা খুবই অসুবিধার মধ্যে আছি । "

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.