কোচবিহার, 2 এপ্রিল: আবারও নিরপরাধ নাগরিককে খুনের অভিযোগ উঠল বিএসএফের বিরুদ্ধে ৷ এবারের ঘটনাস্থল কোচবিহারের শীতলকুচি থানা এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গিদালদহ মরিচা গ্রাম ৷ নিহত ব্যক্তির নাম জলাল মিঞা ৷ তিনি পেশায় একজন কৃষক ছিলেন ৷ জলাল বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শনিবার সন্ধ্যায় ৷ তারপর আর বাড়ি ফেরেননি ৷ রবিবার সকালে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে তাঁর নিথর দেহের সন্ধান পান পরিবারের সদস্যরা ৷ তাঁদের দাবি, সেই সময় জলালের শরীরে পরানো ছিল বিএসএফের পোশাক ! যা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ৷ পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বিএসএফ জওয়ানরাই জলালকে খুন করেছেন ! প্রশ্ন হল, সেটাই যদি হয়ে থাকে, তাহলে বিএসএফ জওয়ানরা কেন তাঁকে নিজেদের পোশাক পরাবেন ! এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ ৷ তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশ ৷
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নিহত কৃষকের আত্মীয় সইদুল জানান, শনিবার সন্ধে থেকেই আকাশের অবস্থা ভালো ছিল না ৷ যেকোনও সময় ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি নামতে পারত ৷ এদিকে জলালের জমিতে তামাক কাটা হয়ে পড়ে ছিল ৷ বৃষ্টিতে ভিজে গেলে সেই ফসল নষ্ট হয়ে যেত ৷ তাই তিনি তড়িঘড়ি মাঠে যান ৷ উদ্দেশ্য ছিল, বৃষ্টি আসার আগেই ফসল ভালো করে ঢেকে রেখে বাড়িতে ফিরে আসা ৷ কিন্তু, সন্ধে গড়িয়ে রাত, রাত কেটে ভোর হয়ে গেলেও আর বাড়ি ফেরেননি জলাল ! পরিবারের তরফে স্থানীয় শীতলকুচি থানায় এই ঘটনার কথা জানানো হয় ৷
পরে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, জলালকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শীতলকুচি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছেন বিএসএফের 75 নম্বর ব্য়াটেলিয়নের জওয়ানরা ৷ কিন্তু, অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে মাথাভাঙ্গা মহকুমা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় ৷ এরপর মাথাভাঙ্গা হাসপাতালের চিকিৎসক জলাল মিঞাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷ তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিএসএফ জওয়ানরাই জলালকে পিটিয়ে খুন করেছেন !
আরও পড়ুন: বিএসএফের মহিলা কনস্টেবলকে ধর্ষণে অভিযুক্ত ইনস্পেক্টর, বিজেপিকে নিশানা কুণালের
এ নিয়ে বিএসএফের তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি ৷ তবে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা জানিয়েছেন, জলাল মিঞার দেহের ময়নাতদন্ত করা হলেই তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ প্রসঙ্গত, এর আগেও এই এলাকায় একাধিকবার বিএসএফের বিরুদ্ধে সাধারণ নাগরিকদের খুন করার অভিযোগ উঠেছে ৷ বিএসএফ অবশ্য এইসব অভিযোগ মানতে নারাজ ৷