দিনহাটা, 24 অক্টোবর: পরকীয়া নিয়ে সন্দেহ স্ত্রীকে । তার জেরে মারাত্মক কাণ্ড ঘটালেন এক ব্যক্তি । স্ত্রী এবং তাঁর আগের পক্ষের ছেলেকে খুন করে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কোচিবহারের দিনহাটায় । পেশায় শ্রমিক, শান্ত স্বভাবের ওই ব্যক্তি এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন বলে বিশ্বাস হচ্ছে না এলাকাবাসীর । বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ ।
রবিবার সকালে দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের কিশামত দশগ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত টিয়াদহ গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার হয় । গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় একটি ঘর থেকে মনোরঞ্জন সরকার (৫২)-কে উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা । অন্য ঘর থেকে তাঁর স্ত্রী শান্তনা বর্মন সরকার (২২) এবং শান্তনার আগের পক্ষের ছেলে রনি সরকার (৫)-এর ক্ষতবিক্ষত দেহ পাওয়া যায় ।
সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন এলাকাবাসী । প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে এই কাণ্ড ঘটান মনোরঞ্জন । ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে শোওয়ার ঘরে স্ত্রী এবং সৎ ছেলেকে কুপিয়ে খুন করেন । তার পর পাশের ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিজে আত্মঘাতী হন । পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে শান্তনার সঙ্গে অশান্তির জেরেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন মনোরঞ্জন ।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বছর খানেক আগে বুড়িরহাট ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা শ্যামল বর্মনের মেয়ে শান্তনার সঙ্গে বিয়ে হয় মনোরঞ্জনের । এটি শান্তনার দ্বিতীয় পক্ষের বিয়ে । আগের পক্ষের ছেলে রনিকে নিয়েই তাঁকে বিয়ে করেন মনোরঞ্জন । কিন্তু বিয়ের পর শান্তনা অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে জানতে পারেন মনোরঞ্জন । তা নিয়ে প্রায়শই অশান্তি হত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ।
আরও পড়ুন: Lost Young Boy Returned Home : 22 বছর পর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহায়তায় মা-ছেলের মিলন
শান্তনার মা রত্না বর্মন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘বছর খানেক আগেই জাঁকজমক করে বিয়ে দিয়েছিলাম ৷ ভালই সংসার করছিল ৷ গত শুক্রবারই শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিল মেয়ে-জামাই ৷ প্রথমে জামাই একা বাড়ি ফিরে আসে ৷ তার পর শনিবার ছেলেকে নিয়ে ফিরে আসে মেয়েও ৷ তার পর রাত গড়াতেই এই খবর ৷ শুনেই ছুটে এসেছি ৷’’ সন্দেহের বশেই জামাই মেয়ে এবং নাতিকে খুন করেছেন বলে মত রত্নাদেবীর ৷
মনোরঞ্জনের ভাই বিপুল সরকার বলেন, ‘‘দাদা মুম্বইয়ে কাজ করত ৷ বিয়ের পর এ বাড়িতে সেভাবে থাকেননি ৷ শ্বশুরবাড়ির সঙ্গেও ভাল সম্পর্কই ছিল ৷ হঠাৎ এমন খবর শুনে আমি তো আশ্চর্য ৷’’
কোচবিহার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানিরাজ জানিয়েছেন, ঘর থেকে মনোরঞ্জনের সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে ৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।