কোচবিহার, 16 জুলাই: ভোট মিটলেও রাজ্যে হিংসার আগুন জ্বলছেই ৷ সেই হিংসার আবহে ফের গুলি চালনার অভিযোগ দিনহাটায় ৷ এক্ষেত্রে গুলিবিদ্ধ হয়েছে 12 বছরের এক কিশোর। অভিযোগের তির বাবার দিকে ৷ যদিও গুলি চালানোর কারণ নিয়ে পরস্পর বিরোধী মন্তব্যে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা ৷ আপাতত বেসরকারি এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে গুলিবিদ্ধ ওই কিশোর ৷
পঞ্চায়েত ভোটের শুরু থেকেই অশান্তি এবং সন্ত্রাসের বিভিন্ন ছবি দেখেছে রাজ্যের মানুষ ৷ দেদার চলেছে গুলি-বোমা ৷ কিন্তু ভোট শেষে ফল প্রকাশের পরও সেই অশান্তি অব্য়াহত ৷ তালিকায় নয়া সংযোজন দিনহাটা 2 নম্বর ব্লকের ভবানীপ্রসাদ গ্রাম ৷ কিশোরের বাবা মাহাবুব আলমই গুলি চালিয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে। কিন্তু বাবা কেন তার ছেলের উপর গুলি চালাবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, স্থানীয় সূত্রে খবর, কিশোরের বাবা সম্ভবত বন্দুক নাড়াচাড়া করছিল ৷ সেসময় অসাবধানতাবশত বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে জখম হয়েছে ওই কিশোর। যদিও গুলিবিদ্ধ ওই কিশোরের বাবা মাহাবুব আলম জানান, বাজার থেকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ করেই গুলি চলে বলে দাবি তাঁর।
কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানিরাজ বলেন, "মাহাবুব আলমই তাঁর ছেলে গুলি করেছে। গুলিতে কিশোর গুরুতর জখম হয়েছে।" ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কোচবিহার জেলার বিভিন্ন গ্রাম। গ্রামের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে লাগাতার রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেও চলছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব থেকে এখন পর্যন্ত জেলায় এক ভোটার-সহ মোট সাত জনের মৃত্যু হয়েছে।
পঞ্চায়েত ভোট শেষ হয়েছে। ভোটের ফলও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে ৷ তবুও হিংসায় লাগাম টানা যাচ্ছে না ৷ যদিও তুলনায় গ্রাম এখন অনেকটাই শান্ত বলছেন সাধারণ মানুষ। বোমার শব্দও আর শোনা যাচ্ছে না বলেও জানাচ্ছেন তারা ৷ এই পরিস্থিতিতে রবিবার বিকেলে দিনহাটার ভবানীপ্রসাদ গ্রামে ফের চলল গুলি। রক্তাক্ত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ ওই কিশোরকে উদ্ধার করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় প্রথমে ৷ সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে কোচবিহারে স্থানান্তর করা হয় ৷
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক প্রতিহংসায় বাবাকে খুন! পলাতক ছেলে ; চাঞ্চল্য মালদায়
কিশোরের মা মাম্পি খাতুন বিবি জানান, বাজার থেকে বাবার সঙ্গেই বাড়ি ফিরছিল ছেলে। হঠাৎই বাড়ির সামনে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে বলে জানাচ্ছেন কিশোরের মা। তবে কে বা কারা গুলি চালিয়েছে তা তিনি জানেন না বলেই দাবি করছেন মাম্পি খাতুন ৷ এদিকে গুলিকাণ্ডের পর অভিযুক্ত মাহাবুব আলমের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র কীভাবে এল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।