কোচবিহার, ২৭ এপ্রিল : কোরোনা মোকাবিলায় গোটা দেশে চলছে লকডাউন । আর এর জেরে অন্য জেলা ও রাজ্যে রপ্তানি করা যাচ্ছে না । ফলে কোচবিহার জেলায় উৎপাদিত সবজির দাম তলানিতে । কেউ বাজারে এনে কম দামে বিক্রি করছেন । দাম মিলবে না বলে আবার কেউ জমিতেই সবজি রেখে দিয়েছেন ।
কোচবিহার জেলার দিনহাটা-১, কোচবিহার-১, সিতাই, শীতলকুচি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় সবজি চাষ হয় । উত্তরবঙ্গের সবজির চাহিদার সিংহভাগই এখান থেকেই রপ্তানি করা হয় । পাশাপাশি এখানকার উৎপাদিত সবজি অসম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ ও বিহারেও যায় । বিভিন্ন পাইকারি সবজি বাজার থেকে ট্রাকে করে অথবা বিভিন্ন স্টেশন থেকে ট্রেনে চাপিয়ে গন্তব্যস্থলে নিয়ে যাওয়া হয় সবজি।
কিন্তু লকডাউনের জেরে বন্ধ পরিবহন ব্যবস্থা । ফলে ভিনরাজ্যে যাচ্ছে না সবজি । ফসল বেচতে কার্যত স্থানীয় বাজারের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে চাষিদের । কিন্তু স্থানীয় বাজারে এই বিপুল পরিমাণ সবজি বিক্রি হচ্ছে না । চাহিদা অনুপাতে বেশি সবজি উৎপাদিত হওয়ায় দামও মিলছে না । মাঠে উৎপাদিত সবজি বাজারে নিয়ে এলে পাইকাররাও আর তা কিনছেন না । কিনলেও ঠিকমতো দাম পাচ্ছেন না চাষিরা । ফলে দিশেহারা তাঁরা ।
এলাকার এমনই এক করলা চাষি সিরাজুল হক । সংসার চালাতে এই চাষবাসের উপরই নির্ভরশীল তিনি । এই বছর সবজির ফলনও ভালো হয়েছে । তাই মুখে হাসি ফুটেছিল তাঁর । কিন্তু লকডাউন কাল হল । ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, "এই সময় আমাদের ফসলতো বাজারে বিক্রিই হয় না । বেগুন কেউ নেয়না বলে গাছ কেটে ফেলেছি । করলা মাঠেই পেকে যাচ্ছে দাম নেই তাই তুলতে পারছি না ।"
ওই এলাকারই আর এক সবজি চাষি আহমদ আলি । তিনি চালকুমড়ো চাষ করেন । তিনি বলেন, "আগে ১৫ টাকা কিলো দরে চালকুমড়ো বিক্রি করেছি । কিন্ত এখন তা ৫ টাকাতেও কেউ কিনছে না । আমরা খাব কী । কৃষক তো না খেয়েই মারা যাবে । লকডাউন যদি আরও বাড়ে তো এই সবজি আর কেউ কিনবে না । ফলে কৃষকরা বাজারেই সবজি ফেলে দিয়ে আসছে ।"