কলকাতা, 16 জুলাই : মুস্তাবসেরা রউফ । বয়স 61 । দীর্ঘদিন ধরেই থাকেন পার্ক সার্কাস এলাকার 7 মেহের আলি রোডে । তাঁর অন্য পরিচয় সাহিত্যিক আব্দুর রউফের বিবি তিনি । কয়েকদিন আগে দক্ষিণ কলকাতার নির্বাচনী দপ্তর থেকে একটি চিঠি পান । তার পরই আকাশ থেকে পড়েন সাহিত্যিক পত্নী । ওই চিঠিতে বলা হয়, কমিশনের কাছে খবর আছে তিনি উক্ত ঠিকানায় থাকেন না । পাশাপাশি জানানো হয় প্রমাণ দিতে যেতে হবে আলিপুরের সার্ভে বিল্ডিংয়ে ।
কলকাতার অনেক বাসিন্দাই এই চিঠি পেয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে । আর তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়ের বাতাবরণ । তবে, কি এবার শহরের নির্দিষ্ট ঠিকানায় থেকে, নির্দিষ্ট ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ পড়বে ? শুধু তাই নয় অভিযোগ উঠেছে, অনেকে জীবিত থেকেও কমিশনের সংশয়ের তালিকায় চলে গেছেন ।
মুস্তাবসেরারকে 14 জুলাই হিয়ারিংয়ের জন্য আলিপুর সার্ভে বিল্ডিংয়ে হাজির হতে বলা হয়েছিল । সেই মতো ভোটার কার্ড নিয়ে হাজির হয়েছিলেন তিনি । অভিযোগ, প্রথমেই নির্বাচন কমিশন তরফে জানানো হয় তাঁর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়ার কথা । পরে অবশ্য সিনিয়র কর্তা ভুল স্বীকার করে নেন । মুস্তাবসেরা বলেন, "আমি পুরোটা জানানোর পর ভুল স্বীকার করে নেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র অফিসার ।" কিন্তু এর পরেও শহরবাসীর একাংশের সংশয় কাটছে না ।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে অবশ্য মিলেছে অন্য ব্যাখ্যা । কমিশন জানায়, প্রতি বছরই এই সময় ভোটার লিস্ট সংশোধনের কাজ চলে । নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌরসভা ও পঞ্চায়েতগুলি থেকে আসে তালিকা । যেখানে মৃত্যুর পরিসংখ্যান দেওয়া থাকে । সেই অনুযায়ী তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয় । নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ব্যক্তি যেখানে রাত্রি যাপন করেন সেটাই তার ঠিকানা । কোনও এলাকার বাসিন্দা হয়ে যদি সেই ঠিকানায় রাত্রি যাপন না করেন তবে, তার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে পারে ।
কমিশনকে প্রশ্ন করা হয় মুস্তাবসেরা তো তাঁর ভোটার কার্ডে থাকা ঠিকানাতেই থাকেন? কমিশনের ব্যাখ্যা, কলকাতায় ভোটার লিস্ট সংশোধনের কাজ সত্যিই একটা বড় চ্যালেঞ্জ । সাধারণভাবে বুথ লেভেল অফিসাররা নানা সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন । অনেক সময় আবার বাড়িতেও যান । কলকাতার ক্ষেত্রে অনেক সময় কমপ্লেক্সে ঢুকতে পারেন না বুথ লেভেল অফিসাররা । সেক্ষেত্রে অনেক সময় ভুল হয়ে যায় । তবে ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য বলে জানায় কমিশন ।