ETV Bharat / state

ফিরে আসে ভয়াল স্মৃতি, খসে পড়ে কংক্রিটের চাঁই ; ভাঙা হোক ব্রিজ চাইছে পোস্তা

বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টে বলা হয় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে ভেঙে পড়েছিল পোস্তা উড়ালপুল । তাই উড়ালপুলটি ভেঙে ফেলার পক্ষেই রায় দেয় কমিটি । গত সপ্তাহেই শুরু হওয়ার কথা ছিল কাজ । কীভাবে ভাঙা হবে সেই নিয়ে আলোচনার জন্য সময় চাওয়া হয় । সেইমতো গতকাল KMDA এবং পুলিশের পক্ষ থেকে পরিদর্শন করা হয় পোস্তা ব্রিজ । তবে কবে থেকে ভাঙার কাজ শুরু হবে, তা এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়নি । তবে এলাকাবাসী চাইছেন অবিলম্বে শুরু হোক সেই কাজ ।

পোস্তা উড়ালপুল
author img

By

Published : Jul 11, 2019, 1:55 AM IST

Updated : Jul 11, 2019, 2:00 AM IST

কলকাতা, 11 জুলাই : স্মৃতি সততই সুখের নয়! পোস্তাবাসীর জন্য তো নয়ই । আজও জোরে কোনও আওয়াজ হলে পোস্তার বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে । ভেঙে পড়ল না তো ব্রিজের আরেকটা অংশ ! না চাইলেও মনে পড়ে যায়, সেই আর্তনাদ । সেই হাহাকার । রক্তে ভেজা রাজপথ । না, সেসব আর দেখতে চায় না পোস্তা । স্থানীয়রা চান, অবিলম্বে ভেঙে ফেলা হোক বিবেকানন্দ উড়ালপুল ।

দেখুন ভিডিয়ো

2016 সালের 31 মার্চ । বিধানসভা নির্বাচনের আঁচে নিজেকে সেঁকছে রাজ্য । পোস্তা অবশ্য ছিল পোস্তাতেই । পথের পাশের রাম মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি, মাল বাহকদের চিৎকার, ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা । সবই ছিল আর পাঁচটা দিনের মত । দুপুরে হঠাৎই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান ব্রিজের রবীন্দ্র সরণি লাগোয়া অংশ । নির্মীয়মান উড়ালপুলের তলা দিয়ে চলছিল শয়ে শয়ে গাড়ি । একটু আগেই সিগনালে দাঁড়িয়ে ছিল ছাত্র-ছাত্রী ভরতি স্কুল বাস । ঘটনার আকস্মিকতা বোঝার আগেই চলে গেল বেশ কিছু প্রাণ । পরে এক একটা করে লোহার বিম সরানো হচ্ছিল, আর মৃত্যুর বীভৎস ছবি হাহাকার ছড়িয়ে দিচ্ছিল গোটা এলাকায় । পোস্তার আজও মনে পড়ে যায় সেই দিনটার কথা।

সালটা 2008 । পোস্তা উড়ালপুলের জন্য রাজ্যের প্রস্তাবে কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়া যায় । টাকাও বরাদ্দ করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে । 2009 সালে হই হই করে শুরু হয়ে যায় কাজ । দুর্ঘটনার পর খড়গপুর IIT-র বিশেষজ্ঞ কমিটি বলেছিল নকশাতেই ছিল গলদ । রাজ্য সরকারের তরফে সেই সময় তৎকালীন মুখ্য সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান করে তৈরি করা হয়েছিল 8 সদস্যের কমিটি । উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ কী হবে তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল এই কমিটিকে । কমিটিতে ছিলেন IIT-র 3 সদস্য । শ্রীমান ভট্টাচার্য, স্বপন মজুমদার এবং এ কে গুপ্ত । গত বছর রিপোর্ট দেয় ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি । সূত্রের খবর, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণেই ভেঙে পড়েছিল ব্রিজ । এই উড়ালপুলের কংক্রিটের কাঠামো ভেঙে ফেলার পক্ষেই রায় দেয় কমিটি । কমিটির সেই সুপারিশ গ্রহণ করে রাজ্য সরকার । গত সপ্তাহে শুরু হওয়ার কথা ছিল উড়ালপুলের কংক্রিটের অংশ ভাঙার কাজ । সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও জারি করে কলকাতা কর্পোরেশন । কিন্তু কলকাতা পুলিশ, KMDA এবং কর্পোরেশনের বৈঠকে আপত্তি ওঠে । ভাঙার পদ্ধতি ঠিক করার জন্য চাওয়া হয় সময় । সেইমতো গতকাল KMDA এবং পুলিশের পক্ষ থেকে পরিদর্শন করা হয় পোস্তা ব্রিজ । তবে কবে থেকে ভাঙার কাজ শুরু হবে, তা এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়নি ।

কিন্তু পোস্তাবাসীর যেন তর সইছে না । কারণ, সেই আতঙ্ক । নির্মীয়মান প্রায় পরিত্যক্ত সেই ব্রিজের উপরের দিকে তাকালেই দেখা যায় ফাটল ধরেছে কংক্রিটে । স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাঝে বেশ কয়েকবার খসে পড়েছে চাঙর । খসে পড়া কংক্রিটের সেই চাঙরে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত যে কোনও সময় । বাস্তব অভিজ্ঞতা হল, বর্ষায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটাই । তাই ভাঙার কাজ পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশ পোস্তাবাসী । তাঁরা চাইছেন অবিলম্বে শুরু হোক কাজ ।

কলকাতা, 11 জুলাই : স্মৃতি সততই সুখের নয়! পোস্তাবাসীর জন্য তো নয়ই । আজও জোরে কোনও আওয়াজ হলে পোস্তার বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে । ভেঙে পড়ল না তো ব্রিজের আরেকটা অংশ ! না চাইলেও মনে পড়ে যায়, সেই আর্তনাদ । সেই হাহাকার । রক্তে ভেজা রাজপথ । না, সেসব আর দেখতে চায় না পোস্তা । স্থানীয়রা চান, অবিলম্বে ভেঙে ফেলা হোক বিবেকানন্দ উড়ালপুল ।

দেখুন ভিডিয়ো

2016 সালের 31 মার্চ । বিধানসভা নির্বাচনের আঁচে নিজেকে সেঁকছে রাজ্য । পোস্তা অবশ্য ছিল পোস্তাতেই । পথের পাশের রাম মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনি, মাল বাহকদের চিৎকার, ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা । সবই ছিল আর পাঁচটা দিনের মত । দুপুরে হঠাৎই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান ব্রিজের রবীন্দ্র সরণি লাগোয়া অংশ । নির্মীয়মান উড়ালপুলের তলা দিয়ে চলছিল শয়ে শয়ে গাড়ি । একটু আগেই সিগনালে দাঁড়িয়ে ছিল ছাত্র-ছাত্রী ভরতি স্কুল বাস । ঘটনার আকস্মিকতা বোঝার আগেই চলে গেল বেশ কিছু প্রাণ । পরে এক একটা করে লোহার বিম সরানো হচ্ছিল, আর মৃত্যুর বীভৎস ছবি হাহাকার ছড়িয়ে দিচ্ছিল গোটা এলাকায় । পোস্তার আজও মনে পড়ে যায় সেই দিনটার কথা।

সালটা 2008 । পোস্তা উড়ালপুলের জন্য রাজ্যের প্রস্তাবে কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়া যায় । টাকাও বরাদ্দ করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে । 2009 সালে হই হই করে শুরু হয়ে যায় কাজ । দুর্ঘটনার পর খড়গপুর IIT-র বিশেষজ্ঞ কমিটি বলেছিল নকশাতেই ছিল গলদ । রাজ্য সরকারের তরফে সেই সময় তৎকালীন মুখ্য সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান করে তৈরি করা হয়েছিল 8 সদস্যের কমিটি । উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ কী হবে তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল এই কমিটিকে । কমিটিতে ছিলেন IIT-র 3 সদস্য । শ্রীমান ভট্টাচার্য, স্বপন মজুমদার এবং এ কে গুপ্ত । গত বছর রিপোর্ট দেয় ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি । সূত্রের খবর, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণেই ভেঙে পড়েছিল ব্রিজ । এই উড়ালপুলের কংক্রিটের কাঠামো ভেঙে ফেলার পক্ষেই রায় দেয় কমিটি । কমিটির সেই সুপারিশ গ্রহণ করে রাজ্য সরকার । গত সপ্তাহে শুরু হওয়ার কথা ছিল উড়ালপুলের কংক্রিটের অংশ ভাঙার কাজ । সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও জারি করে কলকাতা কর্পোরেশন । কিন্তু কলকাতা পুলিশ, KMDA এবং কর্পোরেশনের বৈঠকে আপত্তি ওঠে । ভাঙার পদ্ধতি ঠিক করার জন্য চাওয়া হয় সময় । সেইমতো গতকাল KMDA এবং পুলিশের পক্ষ থেকে পরিদর্শন করা হয় পোস্তা ব্রিজ । তবে কবে থেকে ভাঙার কাজ শুরু হবে, তা এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়নি ।

কিন্তু পোস্তাবাসীর যেন তর সইছে না । কারণ, সেই আতঙ্ক । নির্মীয়মান প্রায় পরিত্যক্ত সেই ব্রিজের উপরের দিকে তাকালেই দেখা যায় ফাটল ধরেছে কংক্রিটে । স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাঝে বেশ কয়েকবার খসে পড়েছে চাঙর । খসে পড়া কংক্রিটের সেই চাঙরে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত যে কোনও সময় । বাস্তব অভিজ্ঞতা হল, বর্ষায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটাই । তাই ভাঙার কাজ পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশ পোস্তাবাসী । তাঁরা চাইছেন অবিলম্বে শুরু হোক কাজ ।

Intro:কলকাতা, ১০ জুলাই: স্মৃতি সততই সুখের নয়! পোস্তাবাসীর জন্য তো নয়ই। আজও জোরে কোনও আওয়াজ হলে পোস্তার বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে। ভেঙে পরলো না তো ব্রিজের আরেকটা অংশ! না চাইলেও মনে পড়ে যায়, সেই আর্তনাদ। সেই হাহাকার। রক্তে ভেজা রাজপথ। না, সেসব আর দেখতে চায় না পোস্তা। এলাকাবাসীরা চান, অবিলম্বে ভেঙে ফেলা হোক বিবেকানন্দ উড়ালপুল।


Body:31 মার্চ, 2016। বিধানসভা নির্বাচনের আঁচে নিজেকে সেঁকছে রাজ্য। পোস্তা অবশ্য ছিল পোস্তাতেই। পথ পাশের রাম মন্দিরের ঘন্টা ধ্বনী, মাল বাহকদের চিৎকার, ব্যবসায়ীদের ব্যস্ততা। সবই ছিল আর পাঁচটা দিনের মতোই। দুপুরে হঠাতই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মান ব্রিজের রবীন্দ্র সরণির লাগোয়া অংশ। নির্মীয়মান উড়ালপুলের তলা দিয়ে চলছিল শয়ে শয়ে গাড়ি। একটু আগেই সিগনালে দাঁড়িয়ে ছিল ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি স্কুল বাস। ঘটনার আকস্মিকতা বোঝার আগেই চলে গেল বেশ কিছু প্রাণ। এক একটা করে লোহার বিম সরানো হচ্ছিল, আর মৃত্যুর বীভৎস ছবি হাহাকার ছড়িয়ে দিচ্ছিল গোটা এলাকায়। কিছু দেখেন অবশিষ্ট কিছুই ছিল না। শুধু একটা দলা পাকানো মাংস পিণ্ড। পোস্তার আজও মনে পড়ে যায় সেই দিনটার কথা।

2008 সাল। পোস্তা উড়ালপুলের জন্য রাজ্যের প্রস্তাবের কেন্দ্রের অনুমোদন পাওয়া যায়। টাকাও বরাদ্দ করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। 2009 সালে হই হই করে শুরু হয়ে যায় কাজ। দূর্ঘটনার পর খড়গপুর IIT র বিশেষজ্ঞ কমিটি বলেছিল নকশাতেই গলদ ছিল এই ব্রিজের। রাজ্য সরকার সেসময় তৎকালীন মুখ্য সচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে চেয়ারম্যান করে তৈরি করা হয় কমিটি। কমিটি ছিল ৮ সদস্যের। উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ কি হবে তা খতিয়ে দেখতে বলা হয় এই কমিটিকে। কমিটিতে ছিলেন আই আই টির তিন সদস্য। শ্রীমান ভট্টাচার্য্য স্বপন মজুমদার এবং একে গুপ্ত। গত বছর রিপোর্ট দেয় বিশেষজ্ঞ কমিটি। সূত্র জানাচ্ছে, রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে ভেঙে পড়েছে ব্রিজ। এই উড়ালপুলের কংক্রিটের কাঠামো ভেঙে ফেলার পক্ষেই রায় দেয় কমিটি। কমিটির সেই সুপারিশ গ্রহণ করে রাজ্য সরকার। সেই সূত্রে গত সপ্তাহেই শুরু হওয়ার কথা ছিল উড়ালপুলের কংক্রিটের অংশ ভাঙার কাজ। সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও জারি করে দেয় কলকাতা কর্পোরেশন। কিন্তু কলকাতা পুলিশ, কেএমডিএ এবং কর্পোরেশনের বৈঠকে আপত্তি ওঠে। ভাঙার পদ্ধতি ঠিক করার জন্য চাওয়া হয় সময়। সেইমতো আজ KMDA এবং পুলিশের পক্ষ থেকে পরিদর্শন করা হয় পোস্তা ব্রিজ। তবে কবে থেকে ভাঙ্গার কাজ শুরু হবে, তা এখনো পর্যন্ত ঠিক হয়নি।





Conclusion:কিন্তু পোস্তাবাসীর যেন তর সইছে না। কারণ, সেই আতঙ্ক। নির্মীয়মান প্রায় পরিতক্ত সেই ব্রিজের ওপর দিকে তাকালেই দেখা যায় ফাটল ধরেছে কংক্রিটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাঝের সময়টায় বেশ কয়েকবার খসে পড়েছে চাঙর। খসে পড়া কংক্রিটের সেই চাঙরে দুর্ঘটনা ঘটতে পারত যে কোন সময়। বাস্তব অভিজ্ঞতা হল, বর্ষায় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকটাই। তাই কংক্রিট ভাঙ্গার কাজ পিছনোতে কিছুটা হতাশ পোস্তা। তালা চাইছেন অবিলম্বে শুরু হোক কাজ।
Last Updated : Jul 11, 2019, 2:00 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.