কলকাতা, 26 জুন : বাকি তিনজন ভয়ে বেশ খানিকটা জড়সড় । আদালতে নিজেদের যতটা সম্ভব ঢেকে রাখায় ব্যস্ত । কিন্তু চোখে মুখে ভয়ের লেশমাত্র নেই নব্য JMB জঙ্গি আল আমিনের । কয়েদিদের গরাদের ভিতরে বসে চারিদিক দেখে নিচ্ছিল । চোখমুখে যেন রাত জাগার ক্লান্তিটুকু নেই তার । বরং অনেকেই খুঁজে পাচ্ছিলেন সুরমা লাগানো চোখের আগুন।
জেরায় নব্য JMB জঙ্গিরা জানিয়েছে, এ দেশের বিরুদ্ধে টানা যুদ্ধ ঘোষণা করতে চাইছে । বড়সড় নাশকতার ছক কষেছিল তারা । উদ্দেশ্য ছিল এদেশে আরও একটা হোলি আর্টিজানের মত ঘটনা ঘটানো । সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যেত আল আমিনকে । সে নাকি জেহাদি পাঠ নেওয়ার পর অত্যন্ত নির্দয় । কলকাতা পুলিশের STF সূত্রে খবর, IS নির্দেশ দিলে আল আমিন মানব বোমা অবধি হতে প্রস্তুত । তবে কি কলকাতায় থাকা IS-এর বড় নেতা ভারতে নাশকতা কাজে ওই যুবককে ব্যবহার করত? প্রশ্ন উঠেছে তদন্তকারীদের মনে ।
সোমবার রাত এবং মঙ্গলবার ভোররাতে শিয়ালদা ও হাওড়া স্টেশন থেকে চারজনকে পাকড়াও করেছে কলকাতা পুলিশের STF । ধৃতদের নাম মহম্মদ জিয়াউর রহমান ওরফে মহসিন, মামুনুর রশিদ, মহম্মদ শাহিন আলম ওরফে আলামিন এবং রবিউল ইসলাম । প্রথমে মহম্মদ জিয়াউর রহমান ও মামুনুর রশিদকে শিয়ালদা স্টেশনের পার্কিং চত্বর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । তারা দু'জনেই বাংলাদেশের নাগরিক । জিয়াউরের বাড়ি বাংলাদেশের চাঁপাই-নবাবগঞ্জ জেলার নিজামপুরে । মানুনুর রংপুর জেলার মমিনপুরের বাসিন্দা । তাদের জেরা করেই খোঁজ মেলে রবিউল ও আলামিনের । এদের মধ্যে আলামিনের বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহীতে । আর রবিউল বীরভূমের নয়াগ্রামের বাসিন্দা । গতকাল ভোরে হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে রবিউল ও আলামিনকে পাকড়াও করে পুলিশ । ধৃতদের কাছ থেকে মোবাইলসহ জেহাদ সংক্রান্ত প্রচুর নথি উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা । মোবাইল ঘেঁটে প্রচুর ছবি ও ভিডিয়ো পাওয়া গেছে । সেইসঙ্গে পাওয়া গেছে জেহাদি মতাদর্শের বইয়ের PDF এবং লিফলেট।