কলকাতা, 11 এপ্রিল: প্রাক্তন মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ওরফে বিক্রমের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট। 2009 শিলদা পুলিশ ক্যাম্পে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে 2012 সালে অর্ণবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তারপর থেকে জেলেই রয়েছেন অর্ণব। আজ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চ শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। উল্লেখ্য, অর্ণব কিছুদিন আগেই জেল থেকে পরীক্ষা দিয়ে SET (স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট) পাশ করেছিলেন।
"2012 সালে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অর্ণব দামকে। এখনও পর্যন্ত মামলায় 5-6 জন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তাহলে আপনার কী করছেন?" আজ রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবীকে প্রশ্ন করে ডিভিশন বেঞ্চ। আদালত আরও বলে, "এখনও পর্যন্ত 40 জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন আপনারা, কিন্তু তারা কেউ মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে পারেনি। অভিযোগ প্রমাণ করতে এখনও মূল সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠতে পারলেন না। আমরা কী উত্তর দেব সেই মৃত 24 জন পুলিশ অফিসারের পরিবারকে? কী বা বলব অর্ণব দামকে? আসলে আপনারা এই ধরনের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক সেটা চাইছেন না। সেই জন্যই আমরা অর্ণব দামের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করছি।"
অর্ণবের জামিনের শর্ত হিসেবে আদালত জানিয়েছে, মোট 50 হাজার টাকার 5 জনের লোকাল সিয়োরিটি বন্ড দিতে হবে অর্ণবকে। সোনারপুর থানার অধীনে থাকতে হবে তাঁকে। এলাকা ছাড়তে পারবেন না তিনি। একদিন অন্তর সোনারপুর থানায় দেখা করতে হবে তাঁকে। কোনও প্রমাণ নষ্ট করা চলবে না। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত মামলা আগামী 6 মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে।
অর্ণবের বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সুভাষগ্রামে। 2012 সালের জুলাইয়ে পুরুলিয়ার বিরামডি রেল স্টেশনের কাছে অর্ণব দামকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। প্রথমে তাঁকে রাখা হয়েছিল আলিপুর জেলে। মাস কয়েক আগেই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল প্রেসিডেন্সি জেলে। তাঁর বিরুদ্ধে শুধু পুরুলিয়া জেলাতেই 80 টির বেশি নাশকতার মামলা রয়েছে। ঝাড়খণ্ডও বেশ কিছু নাশকতার ঘটনায় সে জড়িত বলে অভিযোগ। তাঁর কাছ থেকে একটি AK47 রাইফেল, 30 রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিন ও একটি ডিজিটাল ক্যামেরা পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া মিলেছিল মাওবাদীদের পুস্তিকা ও কয়েকটি বিজ্ঞপ্তি। খড়্গপুর IIT-র মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন অর্ণব।