কলকাতা, ৬ মে : ভোটপর্ব দক্ষিণবঙ্গে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অশান্তি। চতুর্থ দফায় আসানসোল, বীরভূমের একাধিক জায়গায় ভোটগ্রহণ ঘিরে হিংসা ছড়ায়। আজ পঞ্চম দফাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বরং, ভোটের উত্তাপে আরও তপ্ত বাংলা। কিন্তু, কার্যত বিরোধী-শূন্য রাজ্যে ভোটগ্রহণ করতে কেন এত বেগ পেতে হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে? পঞ্চায়েত, লোকসভা, বিধানসভা সব স্তরে যখন তৃণমূলের রমরমা, তখন বিরোধিতার জায়গাটা কোথায়? তবে, কি পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছে শাসকদল? পাশাপাশি এই প্রশ্নও উঠছে, অধিকাংশ জায়গায় তৃণমূলের বিরোধিতার মুখে কেন BJP-কেই পড়তে হচ্ছে? তবে কি BJP-তে "সিঁদুরে মেঘ" দেখছেন তৃণমূল নেত্রী? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্যজুড়ে।
রাজ্যে খুব দ্রুত বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে আসছে BJP। এমনটা কট্টর BJP বিরোধীদের অনেকেও বলছেন। তৃণমূলের বিকল্প শক্তি হিসেবে BJP-র এই গ্রহণযোগ্যতা বাড়ার কথা এবার মানলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা বিশিষ্ট আইনজীবী অরুণাভ ঘোষও। তাঁর মতে, "নিচুস্তরের বিশাল সংখ্যক CPI(M) কর্মী এবং কংগ্রেসের ভোটাররা BJP-র দিকে ঝুঁকে যাচ্ছেন(মোদিকে ভালোবাসেন বলে নয়)। মমতাকে কে পেটাতে পারবে সেই হিসেবে। সেক্ষেত্রে BJP ভালো জায়গায় আছে। BJP অবশ্য জিতবে কি না জানি না। শিক্ষিত লোকের মতামত এখন ভয়ানক তৃণমূল-বিরোধী হয়ে গেছে। এই ভোটটা কোথায় যাবে সেটা বলা কঠিন। কিন্তু, বেশিরভাগ লোকই বলছেন, তৃণমূলকে যে পেটাতে পারবে তার দিকে যাব। একই কথা বলা CPI(M), কংগ্রেস বা SUCI-র ক্ষেত্রে এগুলো কতটা কাজ করবে জানি না। মুর্শিদাবাদ, মালদা বা পুরুলিয়ার মতো স্ট্রং হোল্ড জায়গাগুলি ছাড়া।"
গতবারেও যেখানে রাজ্যের একাধিক লোকসভা আসনে BJP প্রার্থীর নামই অনেকের কাছে অজানা ছিল, সেখানে এবার হুগলি বা ব্যারাকপুর বা বনগাঁ-র মতো কেন্দ্রে কারা BJP প্রার্থী হয়েছেন তা মানুষ অনায়াসে বলতে পারছেন। এটাকেই BJP-র গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি বলে ব্যাখ্যা করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ। সেই বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতেই কি ময়দানে নামতে হচ্ছে তৃণমূলকে? তবে কি "উন্নয়ন" নামক হাতিয়ারে আস্থা হারাচ্ছে রাজ্যের শাসকশিবির?