কলকাতা, 12 জুন : এখনও চোখের সামনে ভাসছে গোটা ঘটনা । দু'রাত দু'চোখের পাতা এক করতে পারেননি তিনি । সোমবারের NRS-কাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী তিনি । প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে মুখ খুললেন । বললেন কী ভাবে 15 উন্মত্ত জনতা ঘিরে ধরেছিল মাত্র দু'জন ডাক্তারকে । তাঁরা তখন অসহায়, আতঙ্কিত । দু'দিন কেটে গেলেও নিজের নাম প্রকাশ্যে আনতে চান না ওই জুনিয়র ডাক্তার । এর পিছনে রয়েছে সেই ভয়-আতঙ্ক ।
ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন ? নিজেই জানালেন পুরো কথা । বললেন ...
সোমবার NRS-এ আর পাঁচজনের মতো আমিও ছিলাম ডিউটিতে । ইন্টার্ন হিসেবেই কাজ করছি । খুবই অসুস্থ অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল । তাঁকে দেখেই আমার এক সহকর্মীকে ডেকে পাঠাই । আমরা দু'জনে মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য । কিন্তু, তারপরেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর ।
খবরটা যেন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ল । মুহূর্তে প্রায় 15 জন উন্মত্ত জনতা ঘিরে ফেলল আমাদের । আমরা অসহায় দু'জন । ভয়ে কাঁপছি । তাঁরা প্রত্যেকেই দাবি করছেন নিজেদের রোগীর আত্মীয় বলে । বাধ্য হয়ে পুলিশের সাহায্য চেয়ে চিৎকার করি । বেশ কিছুক্ষণ এই ভাবে চলার পর পুলিশ এসে উন্মত্ত জনতাকে সরানোর চেষ্টা করল । কিন্তু ততক্ষণে উত্তেজনা আরও ছড়িয়ে গেছে । রোগীর পরিবার দাবি করছে, যে ইঞ্জেকশন আমরা দিয়েছি তার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে । তাঁদের আরও দাবি ছিল, ওষুধের তালিকা জানাতে হবে । দাবি করা হয় দ্রুত ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য । এই বিষয়ে আমরা তাঁদের নিজেদের সম্মতির কথা জানাই । তবে এর জন্য আগে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও বলি আমরা ।
কিছুক্ষণের মধ্যে দেখি জড়ো হয়ে গেছেন আরও বহু মানুষ । এক তলায় সিনিয়র, জুনিয়র এবং ইন্টার্নদের ঘিরে ফেলেছেন তাঁরা । হঠাৎই দেখলাম, আমাদের জুনিয়র ডাক্তারদের উপর চড়াও হয়েছে । শুরু হয়ে গেছে মারধর । তাঁদের মারেই গুরুতর জখম আমাদের দুই সহকর্মী । যাদের মধ্যে একজন, পরিবহ মুখোপাধ্যায় গুরুতর জখম ।