বোলপুর, 5 মে: ফের বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের । 'শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের' সম্পত্তি জবরদখল করে নেওয়ার অভিযোগ তুলে পুলিশের দারস্থ বিশ্বভারতীর এক অধ্যাপক-সহ প্রাক্তনকর্মী ও বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা ৷ শুক্রবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
প্রসঙ্গত, অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের হুঁশিয়ারির বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন বহু মানুষ। তার প্রেক্ষিতে আশ্রম এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত ও উপাচার্যের প্রাণসংশয়ের আশঙ্কায় বোলপুর মহকুমা শাসক ও শান্তিনিকেতন থানায় পৃথক চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগ নিয়ে সরব শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে আশ্রমিক, সমাজকর্মী, নাট্যকর্মী, অর্থনীতিবিদ-সহ বিদ্বজ্জনেরা । বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ভূমিকা নিয়ে সরব হতেই বোলপুর মহকুমা শাসক ও শান্তিনিকেতন থানায় দু'টি পৃথক চিঠি দেওয়া হয়েছে ৷ বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব মানবেন্দ্রনাথ সাহা বোলপুর মহকুমা শাসককে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেন, "অমর্ত্য সেনের জমি সংক্রান্ত বিষয় বিচারাধীন। এমতাবস্থায় মিছিল, ধরনা, বিক্ষোভ, আন্দোলন হলে বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে শান্তি বিঘ্নিত হবে ৷ শান্তিশৃঙ্খলার অবনতি হবে ৷ তা রুখতে এগুলো বন্ধ করা হোক ।"
শান্তিনিকেতন থানায় দেওয়া আরও একটি চিঠিতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেছে, "প্রতিবাদমূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে ৷ উপাচার্য ও বিশ্বভারতীর আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে বলা হচ্ছে ৷ এর ফলে উপাচার্য-সহ আধিকারিকদের প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা থাকছে।" এই দুই চিঠির প্রক্ষিতে এদিন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, "উপাচার্য ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন ৷ শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন হচ্ছে, প্রতিবাদ হচ্ছে ৷ উপাচার্যের উদ্দেশ্য ভারাটে গুণ্ডা এনে অশান্তি সৃষ্টি করা। তাই এই ধরনের আগাম অভিযোগ তুলছেন ৷ এছাড়া, উপাসনা গৃহ থেকে শুরু করে ছাতিমতলা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পত্তি ৷ এগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় নানা বিতর্কিত উক্তি করেছেন তিনি ৷ নিয়ম অনুযায়ী ট্রাস্টের সদস্যও হননি উপাচার্য। 'শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের' সম্পত্তি জবরদখলকারী উপাচার্য বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হোক৷"
আরও পড়ুন: অমর্ত্য সেনকে 'উচ্ছেদের হুঁশিয়ারি'র প্রতিবাদ, শান্তিনিকেতনে মানববন্ধন-পথনাটক
বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য, কর্মীসভার প্রাক্তন সভাপতি গগন সরকার, বোলপুরের বাসিন্দা তথা ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম সুনীল সিং, সুব্রত ভকত ও আমিনূল হুদা এই অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ অভিযোগকারী গগন সরকার বলেন, "উপাচার্য যে ধরনের মন্তব্য করছেন তা ভিত্তিহীন। উনি অশান্তি চান ৷ তাই আগাম এই ধরনের ইঙ্গিত দিয়ে রাখছেন ৷ এছাড়া, উনি শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সদস্য নন ৷ কিন্তু, ট্রাস্টের সম্পত্তি ব্যবহার করছেন ৷ জবরদখল করে নিয়েছেন ৷ তাই লিখিত অভিযোগ দায়ের করলাম শান্তিনিকেতন থানায়।"