ETV Bharat / state

দেবেন্দ্রনাথের হাতে সূচনা, 175 বছর পেরিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পৌষমেলা - 175 years

175 বছর পেরিয়ে আজ অস্তিত্ব সংকটে পৌষমেলা । বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়ানোয় প্রায় বন্ধের মুখে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা।

175 বছর পেরিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পৌষমেলা
author img

By

Published : Jun 6, 2019, 6:15 AM IST

Updated : Jun 6, 2019, 7:48 AM IST

শান্তিনিকেতন, 6 জুন : বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়ানোয় প্রায় বন্ধের মুখে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা। মেলা কি আদৌও হবে? এই নিয়ে রীতিমতো জল্পনা শুরু হয়ে গেছে পড়ুয়া, আশ্রমিক থেকে শুরু করে বোলপুরবাসী, ব্যবসায়ীদের মধ্যে। 175 বছর পেরিয়ে আজ অস্তিত্ব সংকটে পৌষমেলা ।

1843 সালের 21 ডিসেম্বর (7 পৌষ) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রহ্মধর্মে দীক্ষিত হন। এরপরেই ব্রহ্মধর্মের প্রসার ও প্রচার বৃদ্ধি পায়। দীক্ষিত হওয়ার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ও ব্রহ্মধর্মের প্রসারের স্বার্থে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর 1845 সালে কলকাতার গোরিটির বাগানে উপাসনা, ব্রহ্ম মন্ত্রপাঠের করেন। এটিই পৌষমেলার সূচনা বলে ধরা হয়। পরবর্তীকালে 1862 সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে আশ্রম প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে শুরু করেন। 1891 সাল (7 পৌষ) ব্রহ্ম মন্দির বা উপাসনা গৃহ প্রতিষ্ঠা হয়। এটিকে শান্তিনিকেতনে পৌষ উৎসব সূচনার সময় হিসাবে ধরা হয়। 1894 সালে এই পৌষ উৎসবের পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় পৌষমেলা।

এই বিষয়ে, বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডঃ অভ্র বসু বলেন, "1888 সালের 8 মার্চ মহর্ষি ন্যাস বা ট্রাস্ট ডিডে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌষমেলা সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ করে যান যে, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট প্রতি বছর একটি মেলা বসাবে। এই মেলা সকল ধর্মের মানুষের মিলন ক্ষেত্র হবে । কোনওপ্রকার মূর্তি পুজো হবে না । কুৎসিত আমোদ উল্লাস হবে না । মদ, মাংস বর্জিত এই মেলায় সকল প্রকার খাদ্যদ্রব্য কেনা-বেচা হবে। আরও বলা হয়, যদি এই মেলা থেকে কোনও প্রকার আয় হয় সেই টাকা আশ্রমের উন্নতি কল্পে ব্যয় করা হবে।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

1941 সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহাপ্রয়াণে মেলা বসলেও তা প্রাণহীন ছিল। 1943 সালে দেশে দুর্ভিক্ষের জন্য পৌষমেলা বন্ধ ছিল। 1944 সাল থেকে মেলার সময় সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হয়। 1950 সালে মেলার পরিসর বাড়তে থাকায় ব্রহ্ম মন্দিরের পরিবর্তে ছাতিমতলায় উপাসনা শুরু হয়। এরপরে 1961 সালে এই পৌষমেলার স্থান পরিবর্তন হয়। মন্দির সংলগ্ন মাঠ থেকে মেলা পূর্বপল্লির মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকেই এই মাঠেই চলে আসছে মেলা।

1967 সালে বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির উপস্থিতিতে আম্রকুঞ্জে সমাবর্তন অনুষ্ঠান চলাকালীন বিস্ফোরণ হয়। সেই থেকে দাবি ওঠে মেলার সময় সমাবর্তন অনুষ্ঠান করা যাবে না। দিন দিন মেলা আধুনিক হতে থাকে। বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। ভিন রাজ্য থেকেও দোকানিরা আসতে শুরু করেন। ক্রমে শান্তিনিকেতনে এই পৌষমেলা আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করে।

2017 সাল থেকে ভাঙামেলা রুখে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী 6 দিনের পৌষমেলা শুরু হয়েছে। মাঝে যদিও, 1961 সালে পড়ুয়াদের বার্ষিক ভ্রমণ বন্ধ থাকায় 3 দিনের পরিবর্তে 5 দিনের পৌষমেলা হয়েছিল। এবার কার্যত বন্ধের মুখে এই ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। দীর্ঘ বৈঠক করে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় এই বৃহৎ পৌষমেলা পরিচালনা করতে সক্ষম নয় তারা । শান্তিনিকেতন ট্রাস্টে লোকবল কম থাকায় এবার পৌষমেলাও অনিশ্চয়তার মুখে।

শান্তিনিকেতন, 6 জুন : বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়ানোয় প্রায় বন্ধের মুখে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা। মেলা কি আদৌও হবে? এই নিয়ে রীতিমতো জল্পনা শুরু হয়ে গেছে পড়ুয়া, আশ্রমিক থেকে শুরু করে বোলপুরবাসী, ব্যবসায়ীদের মধ্যে। 175 বছর পেরিয়ে আজ অস্তিত্ব সংকটে পৌষমেলা ।

1843 সালের 21 ডিসেম্বর (7 পৌষ) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রহ্মধর্মে দীক্ষিত হন। এরপরেই ব্রহ্মধর্মের প্রসার ও প্রচার বৃদ্ধি পায়। দীক্ষিত হওয়ার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ও ব্রহ্মধর্মের প্রসারের স্বার্থে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর 1845 সালে কলকাতার গোরিটির বাগানে উপাসনা, ব্রহ্ম মন্ত্রপাঠের করেন। এটিই পৌষমেলার সূচনা বলে ধরা হয়। পরবর্তীকালে 1862 সালে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে আশ্রম প্রতিষ্ঠার কথা ভাবতে শুরু করেন। 1891 সাল (7 পৌষ) ব্রহ্ম মন্দির বা উপাসনা গৃহ প্রতিষ্ঠা হয়। এটিকে শান্তিনিকেতনে পৌষ উৎসব সূচনার সময় হিসাবে ধরা হয়। 1894 সালে এই পৌষ উৎসবের পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় পৌষমেলা।

এই বিষয়ে, বিশ্বভারতীর বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডঃ অভ্র বসু বলেন, "1888 সালের 8 মার্চ মহর্ষি ন্যাস বা ট্রাস্ট ডিডে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌষমেলা সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ করে যান যে, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট প্রতি বছর একটি মেলা বসাবে। এই মেলা সকল ধর্মের মানুষের মিলন ক্ষেত্র হবে । কোনওপ্রকার মূর্তি পুজো হবে না । কুৎসিত আমোদ উল্লাস হবে না । মদ, মাংস বর্জিত এই মেলায় সকল প্রকার খাদ্যদ্রব্য কেনা-বেচা হবে। আরও বলা হয়, যদি এই মেলা থেকে কোনও প্রকার আয় হয় সেই টাকা আশ্রমের উন্নতি কল্পে ব্যয় করা হবে।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

1941 সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহাপ্রয়াণে মেলা বসলেও তা প্রাণহীন ছিল। 1943 সালে দেশে দুর্ভিক্ষের জন্য পৌষমেলা বন্ধ ছিল। 1944 সাল থেকে মেলার সময় সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হয়। 1950 সালে মেলার পরিসর বাড়তে থাকায় ব্রহ্ম মন্দিরের পরিবর্তে ছাতিমতলায় উপাসনা শুরু হয়। এরপরে 1961 সালে এই পৌষমেলার স্থান পরিবর্তন হয়। মন্দির সংলগ্ন মাঠ থেকে মেলা পূর্বপল্লির মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকেই এই মাঠেই চলে আসছে মেলা।

1967 সালে বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির উপস্থিতিতে আম্রকুঞ্জে সমাবর্তন অনুষ্ঠান চলাকালীন বিস্ফোরণ হয়। সেই থেকে দাবি ওঠে মেলার সময় সমাবর্তন অনুষ্ঠান করা যাবে না। দিন দিন মেলা আধুনিক হতে থাকে। বাড়তে থাকে মানুষের ভিড়। ভিন রাজ্য থেকেও দোকানিরা আসতে শুরু করেন। ক্রমে শান্তিনিকেতনে এই পৌষমেলা আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করে।

2017 সাল থেকে ভাঙামেলা রুখে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী 6 দিনের পৌষমেলা শুরু হয়েছে। মাঝে যদিও, 1961 সালে পড়ুয়াদের বার্ষিক ভ্রমণ বন্ধ থাকায় 3 দিনের পরিবর্তে 5 দিনের পৌষমেলা হয়েছিল। এবার কার্যত বন্ধের মুখে এই ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। দীর্ঘ বৈঠক করে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় এই বৃহৎ পৌষমেলা পরিচালনা করতে সক্ষম নয় তারা । শান্তিনিকেতন ট্রাস্টে লোকবল কম থাকায় এবার পৌষমেলাও অনিশ্চয়তার মুখে।

sample description
Last Updated : Jun 6, 2019, 7:48 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.