শান্তিনিকেতন, 23 অক্টোবর : প্রাথমিকভাবে জট কেটেছে ৷ ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা হচ্ছে । তবে এবার আগের মতো পৌষমেলা হবে চার দিনের । এছাড়া, অনলাইনে করতে হবে স্টল বুকিং ৷ পরিবেশ আদালতের কথা মাথায় রেখে এবার পৌষমেলায় একগুচ্ছ বিধিনিষেধ থাকছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে ।
1818 সালে 8 মার্চ মহর্ষি ন্যাস বা ট্রাস্ট ডিডে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌষমেলা সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ করে যান এই যে, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট প্রতি বছর পৌষমেলা করবে । এই মেলা মূলত ব্রাহ্মমেলা হিসাবে পরিচিত । আমোদ, মদ্যপান, মাংস ব্যতীত মেলা হবে । এই মেলার লভ্যাংশ আশ্রমের উন্নয়নকল্পে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ডিড অনুযায়ী । কিন্তু, দিন দিন মেলার পরিধি বাড়তে থাকে । বর্তমানে এই মেলা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন । এত বৃহৎ মেলা পরিচালনা করার মত পরিকাঠামো শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের নেই । তাই বরাবরই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষই মেলার সমস্ত দায় নিয়ে থাকে ।
অন্যদিকে, পৌষমেলায় দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । এই মর্মে পরিবেশ আদালতে মামলা রুজু করেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত । 2016 সাল থেকে মেলা পরিচালনায় একাধিক বিধি নিষেধ আরোপ করে পরিবেশ আদালত । 2017 সাল থেকে ভাঙা মেলা রুখতে পৌষমেলাকে ছয় দিনের করে দেওয়া হয় । তবে এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ একটি বৈঠক করে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল পৌষমেলা পরিচালনা করার মত পর্যাপ্ত পরিকাঠামো বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নেই । কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ই এত বৃহৎ মেলা পরিচালনা করে না । বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলা পরিচালনা থেকে হাত তুলে নেওয়ায় প্রায় অনিশ্চয়তার মুখে ছিল মেলা । কারণ, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের মেলা পরিচালনার মত লোকবল বা পরিকাঠামো কোনওটাই নেই । তবে কী হবে পৌষমেলার ভবিষ্যৎ, সে নিয়ে জল্পনা চলছিল ৷
অবশেষে সেই জট প্রাথমিক পর্যায়ে বেশ কিছুটা কাটল । একটি বৈঠকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে পৌষমেলা হচ্ছে ৷ তবে আগের মত মেলা চলবে চার দিন ৷ ভাঙা মেলা কোনও ভাবেই রাখা যাবে না । এছাড়া মেলার স্টল বুকিং সম্পূর্ণ অনলাইনে হবে । যা বিগত পাঁচ বছর ধরে চেষ্টা করেও কর্যকরী করতে পারেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ । এবার অনলাইনে স্টলের প্লট বুকিংয়ের সিদ্ধান্ত দৃঢ়ভাবে নেওয়া হয়েছে ।