লাভপুর, 20 জুলাই : দিতে হয়েছিল চরম মূল্য ৷ বছর আটেক আগে ভিনজাত-ধর্মের ছেলেকে ভালবাসার 'অপরাধে' গণধর্ষিত হতে হয় ৷ তবে তারপরও যেন কিছুটা আশা ছিল নতুন করে জীবন শুরু করার ৷ প্রশাসনও সাহায্য করেছিল ৷ তবে শেষ অবধি আর হয়ে উঠল না ৷ বিষ খেয়ে আত্মহত্যাই করতে হল ৷
2012 সালের শেষের দিকে ভিন্ন সম্প্রদায়ের এক যুবকের সঙ্গে প্রমের সম্পর্ক তৈরি হয় বীরভূমের সুবলপুর গ্রামের আদিবাসী এক তরুণীর ৷ সেই সম্পর্কের কথা জানাজানি হতেই গ্রামে বসল সালিশি সভা ৷ 2013 সালের 20 জানুয়ারি সেই সালিশি সভায় গ্রামের মোড়ল তরুণীকে গণধর্ষণের নিদান দেন ৷ কাঁটায় কাঁটায় তা আবার পালনও করা হয় ৷ তারপর থানা-পুলিশ, কোর্ট-কাছারি সবই হয় ৷ নিন্দার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে ৷ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মামলার তদন্ত চালাতে থাকে পুলিশ । হাইকোর্ট নির্দেশে সুবলপুর গ্রাম থেকে 15 কিলোমিটার দূরে চৌহাট্টা গ্রামে বাড়ি করে নির্যাতিতার থাকার ব্যবস্থা করে জেলা প্রশাসন । 2014 সালে মামলায় 31 জনের সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে মোড়ল-সহ 13 জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয় বোলপুর মহকুমা আদালত । নির্যাতিতাকেও নিরাপত্তা দেওয়া হয় ৷
দীর্ঘদিন গ্রামের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না তাঁর । কথা ছিল তিনি আর তাঁর প্রেমিক বিয়ে করবেন ৷ তবে কথা রাখেননি প্রেমিক ৷ বিয়েতে আর রাজি হলেন না ৷ তাই 'উপায়' না পেয়ে আত্মহত্যার পথই সহজ বলে মনে হয়েছে ৷ সোমবারই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন নির্যাতিতা ৷ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায় ৷ খবর পেয়ে লাভপুর থানার পুলিশ যায় ৷ তারাই মৃতদেহ উদ্ধার করে ৷ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য ।
আরও পড়ুন : নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে বিক্ষোভ