কলকাতা, 25 ফেব্রুয়ারি: প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সাহায্যে বাংলা শস্য বিমার আওতায় 9 লক্ষেরও বেশি কৃষককে 351 কোটি টাকা দিল রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের অক্টোবরের শেষে ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়া শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’-র প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। বিশেষত, অতিবৃষ্টির কারণে ধান চাষের ক্ষতি হয়েছিল হাওড়া, হুগলি ও বর্ধমান জেলায়। ডিভিসি থেকে ছাড়া জলের ফলেও ওই জেলাগুলির বহু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন।
সরকারি তথ্য অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য যেখানে ইসরোর (ISRO) উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে ফসলের ক্ষতির মাত্রা নির্ধারণের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে ৷ এর ফলে দ্রুত কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করা সম্ভব হচ্ছে ৷ দ্রুত ক্ষতিপূরণও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে বলে দাবি নবান্নের। সম্প্রতি মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের নেতৃত্বে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। সেই বৈঠকে জানা যায়, রবি ও বোরো মরশুমের জন্য বাংলা শস্য বিমায় এখনও পর্যন্ত 71 লক্ষ 98 হাজার কৃষক নাম নথিভুক্ত করেছেন। এর মধ্যে আলু চাষির সংখ্যা 12 লক্ষ 13 হাজার ৷
উল্লেখযোগ্যভাবে, 2024-25 অর্থবর্ষ থেকে রাজ্যের আলু ও আখ চাষিদের জন্য বিমার প্রিমিয়াম বাবদ কোনও অর্থ দিতে হবে না। 2019 সালে এই প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে অন্যান্য ফসলের জন্য কৃষকদের কোনও প্রিমিয়াম দিতে হয়নি, তবে আলু ও আখের জন্য সামান্য পরিমাণ প্রিমিয়াম ধার্য করা হয়েছিল। 2023 সালের বাজেটে ঘোষণা করা হয়, সেটিও আর দিতে হবে না।
সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলা শস্য বিমার জন্য 2022-23 অর্থবর্ষে বাজেট বরাদ্দ ছিল 1022 কোটি টাকা, যা 2023-24 অর্থবর্ষে বাড়িয়ে 1125 কোটি টাকা করা হয়। 2025-26 সালে এই বরাদ্দ আরও বাড়িয়ে 1313 কোটি 18 লক্ষ টাকা করা হয়েছে।
বাংলা শস্য বীমা প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত 1 কোটি 12 লক্ষ কৃষক মোট 3562 কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। কৃষকদের জন্য এই বিমা প্রকল্প রাজ্যের কৃষি ব্যবস্থাকে আরও স্থিতিশীল করছে বলেই মনে করছে নবান্ন।
পড়ুন: জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যে GST বাবদ আয় বাড়ল 10%, ইঙ্গিত নতুন রেকর্ডের