ETV Bharat / state

Deucha Pachami Coal Mine Project in Bengal: কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিতে নারাজ দেউচা-পাচামির গ্রামবাসীরা

কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিতে নারাজ দেউচা-পাচামির গ্রামবাসীরা (Deucha Pachami Coal Mine project in Bengal)৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত পুনর্বাসন প্যাকেজের উপর আস্থা নেই অনেকেরই ৷

local residents do not want Deucha Pachami coal mine project
কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিতে নারাজ দেউচা-পাচামির গ্রামবাসীরা
author img

By

Published : Dec 9, 2021, 5:08 PM IST

Updated : Dec 9, 2021, 10:34 PM IST

দেউচা-পাচামি, 9 ডিসেম্বর : আমেরিকার উত্তর এন্টিলোপ রোচেল কয়লা খনির পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম কয়লা খনি হতে চলেছে বীরভূমের দেউচা-পাচামি (Deucha Pachami coal mine project in Bengal)৷ ছোট নাগপুর মালভূমির অন্তর্গত এই এলাকা খনিজ সম্পদে ভরপুর ৷ অনুমান, 3400 একর জমিজুড়ে 210 কোটি 20 লক্ষ টন কয়লা মাটির নীচে মজুত রয়েছে । এছাড়া কয়লার উপরের স্তরে আগ্নেয়গিরিজাত 1148 হেক্টর ব্যাসল্ট শিলা রয়েছে ৷ মাত্র 200 মিটার গভীর থেকেই কয়লার স্তর মিলবে এই অঞ্চলে ৷ এই বিপুল পরিমাণ কয়লা ও পাথর উত্তোলন হলে স্বাভাবিক ভাবেই শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের অর্থনীতি বিকশিত হবে ৷ তবে এই শিল্পের জন্য জমি দিতে রাজি নন অনেকেই ৷

দেউচা-পাচামি ও দেওয়ানগঞ্জ-হরিণসিঙ্গা এই দুটি কোল ব্লক ভাগ করা হয়েছে ৷ 3400 একর জমির মধ্যে 1000 একর সরকারি জমি । প্রথমে সরকারি জমিতেই খোলামুখ কয়লা খনির কাজ শুরু করা হবে ৷ দেওয়ানগঞ্জ-হরিণসিঙ্গা কোল ব্লক থেকেই কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে ৷ এই এলাকায় 4 থেকে 5টি জায়গায় 20 বর্গফুট করে গর্ত করা হবে ৷ কোথায়, কত নীচে কয়লার স্তর রয়েছে তা নির্ণয় করেই উত্তোলনের কাজ শুরু হবে ৷ কয়লা উত্তোলনের কাজ করবে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম লিমিটেড (WBPDCL)। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার 35 হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে । এরই মধ্যে থেকে পুনর্বাসনের জন্য 10 হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে ।

কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিতে নারাজ দেউচা-পাচামির গ্রামবাসীরা

আরও পড়ুন: Deucha Pachami Coal Block : দেউচা-পাচামির জমি অধিগ্রহণ নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ রাজ্যের

পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই এলাকায় কমপক্ষে 20টি গ্রামে 4314টি বাড়িতে 21 হাজারেরও বেশি মানুষের বাস ৷ এই অঞ্চলে অধিকাংশ গ্রাম আদিবাসী অধ্যুষিত ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee on Deucha Pachami coal mine project) ঘোষণা করেছেন, পুনর্বাসন হিসাবে একজন ব্যক্তি বিঘা প্রতি 100 থেকে 13 লক্ষ টাকা পাবেন । এছাড়া স্থান পরিবর্তন, বসতি স্থাপনের জন্য আরও 5 লক্ষ টাকা পাবেন ৷ জমিহারা পরিবার পিছু একজন করে সরকারি চাকরি পাবেন ৷ এই অঞ্চলে প্রায় 285 জন ক্রাশার মালিক রয়েছেন । তাঁরাও পুনর্বাসন (Compensation for Deucha Pachami people) পাবেন ৷ সঙ্গে 6 মাস প্রতিদিন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে 10 ট্রাক করে ব্যাসল্ট শিলা পাবেন ।

local residents do not want Deucha Pachami coal mine project
শুরু হবে কয়লা উত্তোলনের কাজ

মুখ্যমন্ত্রীর এই পুনর্বাসন তালিকা অলচিকি, বাংলা ও ইংরেজিতে লিফলেট বানিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দিয়েছে জেলা প্রশাসন ৷ বেশ কয়েকবার ক্রাশার মালিক, আদিবাসী সংগঠনগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক বিধান রায় ।

কিন্তু অধিকাংশ গ্রামের মানুষজন কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিতে চান না ৷ এর কারণ হিসাবে তাঁদের মনে বেশ কয়েকটি সংশয় কাজ করছে ৷ যেমন - মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত পুনর্বাসন তাঁদের কাছ সম্পূর্ণ রূপে পৌঁছবে কি না তা নিয়ে তাঁদের সংশয় রয়েছে ৷ তাঁরা যে প্রাকৃতিক পরিবেশে জীবন যাপন করেন, সেই পরিবেশ পুনর্বাসনে পাবেন না ৷ বহু মানুষ ভিটেহারা, কর্মহারা হয়ে পড়বেন - এই সব বিষয়গুলিও তাঁদের ভাবাচ্ছে । ক্রাশার মালিকেরা অবশ্য কয়লা শিল্প চাইলেও তাঁদের মধ্যেও সংশয় রয়েছে ৷ তাঁরা বলছেন, "পাথর শিল্পে বহু শ্রমিক কাজ করেন ৷ কয়লা শিল্পে তাঁরা কাজ পাবেন তো ?"

local residents do not want Deucha Pachami coal mine project
দেউচা-পাচামি কয়লা খনি প্রকল্প

আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : সিঙ্গুর মডেলে দেউচা-পাচামিতে জমি অধিগ্রহণ নয়, ঘোষণা মমতার

প্রসঙ্গত, এই 3400 একর জমির মধ্যে যে শুধু বসতি রয়েছে তা নয় ৷ কয়েক শত হেক্টর বনাঞ্চল রয়েছে ৷ জলাভূমি রয়েছে ৷ সে সবই ধ্বংস হয়ে যাবে ৷ বৃহৎ এলাকা জুড়ে খোলামুখ কয়লা খনির কাজ শুরু হলে ভূ-প্রকৃতি বদলে যাবে ৷ বাড়বে ভূমিকম্পের প্রবণতা । কোথাও ভূগর্ভস্থ ভৌমজল স্তর নেমে যাবে ৷ কোথাও আবার জলস্তর উঠে আসবে ৷ এর ফলে দূষিত হবে ভৌমজল ।

সব মিলিয়ে দেউচা-পাচামির খোলামুখ কয়লা শিল্পের জমি জট অব্যাহত । এই জট কাটিয়ে শিল্পের ভবিষ্যৎ যে এখানকার বাসিন্দাদের হাতেই, তা বলাই যায় ৷

দেউচা-পাচামি, 9 ডিসেম্বর : আমেরিকার উত্তর এন্টিলোপ রোচেল কয়লা খনির পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও এশিয়া মহাদেশের বৃহত্তম কয়লা খনি হতে চলেছে বীরভূমের দেউচা-পাচামি (Deucha Pachami coal mine project in Bengal)৷ ছোট নাগপুর মালভূমির অন্তর্গত এই এলাকা খনিজ সম্পদে ভরপুর ৷ অনুমান, 3400 একর জমিজুড়ে 210 কোটি 20 লক্ষ টন কয়লা মাটির নীচে মজুত রয়েছে । এছাড়া কয়লার উপরের স্তরে আগ্নেয়গিরিজাত 1148 হেক্টর ব্যাসল্ট শিলা রয়েছে ৷ মাত্র 200 মিটার গভীর থেকেই কয়লার স্তর মিলবে এই অঞ্চলে ৷ এই বিপুল পরিমাণ কয়লা ও পাথর উত্তোলন হলে স্বাভাবিক ভাবেই শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের অর্থনীতি বিকশিত হবে ৷ তবে এই শিল্পের জন্য জমি দিতে রাজি নন অনেকেই ৷

দেউচা-পাচামি ও দেওয়ানগঞ্জ-হরিণসিঙ্গা এই দুটি কোল ব্লক ভাগ করা হয়েছে ৷ 3400 একর জমির মধ্যে 1000 একর সরকারি জমি । প্রথমে সরকারি জমিতেই খোলামুখ কয়লা খনির কাজ শুরু করা হবে ৷ দেওয়ানগঞ্জ-হরিণসিঙ্গা কোল ব্লক থেকেই কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে ৷ এই এলাকায় 4 থেকে 5টি জায়গায় 20 বর্গফুট করে গর্ত করা হবে ৷ কোথায়, কত নীচে কয়লার স্তর রয়েছে তা নির্ণয় করেই উত্তোলনের কাজ শুরু হবে ৷ কয়লা উত্তোলনের কাজ করবে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম লিমিটেড (WBPDCL)। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার 35 হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে । এরই মধ্যে থেকে পুনর্বাসনের জন্য 10 হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হচ্ছে ।

কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিতে নারাজ দেউচা-পাচামির গ্রামবাসীরা

আরও পড়ুন: Deucha Pachami Coal Block : দেউচা-পাচামির জমি অধিগ্রহণ নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ রাজ্যের

পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই এলাকায় কমপক্ষে 20টি গ্রামে 4314টি বাড়িতে 21 হাজারেরও বেশি মানুষের বাস ৷ এই অঞ্চলে অধিকাংশ গ্রাম আদিবাসী অধ্যুষিত ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee on Deucha Pachami coal mine project) ঘোষণা করেছেন, পুনর্বাসন হিসাবে একজন ব্যক্তি বিঘা প্রতি 100 থেকে 13 লক্ষ টাকা পাবেন । এছাড়া স্থান পরিবর্তন, বসতি স্থাপনের জন্য আরও 5 লক্ষ টাকা পাবেন ৷ জমিহারা পরিবার পিছু একজন করে সরকারি চাকরি পাবেন ৷ এই অঞ্চলে প্রায় 285 জন ক্রাশার মালিক রয়েছেন । তাঁরাও পুনর্বাসন (Compensation for Deucha Pachami people) পাবেন ৷ সঙ্গে 6 মাস প্রতিদিন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে 10 ট্রাক করে ব্যাসল্ট শিলা পাবেন ।

local residents do not want Deucha Pachami coal mine project
শুরু হবে কয়লা উত্তোলনের কাজ

মুখ্যমন্ত্রীর এই পুনর্বাসন তালিকা অলচিকি, বাংলা ও ইংরেজিতে লিফলেট বানিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দিয়েছে জেলা প্রশাসন ৷ বেশ কয়েকবার ক্রাশার মালিক, আদিবাসী সংগঠনগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক বিধান রায় ।

কিন্তু অধিকাংশ গ্রামের মানুষজন কয়লা শিল্পের জন্য জমি দিতে চান না ৷ এর কারণ হিসাবে তাঁদের মনে বেশ কয়েকটি সংশয় কাজ করছে ৷ যেমন - মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত পুনর্বাসন তাঁদের কাছ সম্পূর্ণ রূপে পৌঁছবে কি না তা নিয়ে তাঁদের সংশয় রয়েছে ৷ তাঁরা যে প্রাকৃতিক পরিবেশে জীবন যাপন করেন, সেই পরিবেশ পুনর্বাসনে পাবেন না ৷ বহু মানুষ ভিটেহারা, কর্মহারা হয়ে পড়বেন - এই সব বিষয়গুলিও তাঁদের ভাবাচ্ছে । ক্রাশার মালিকেরা অবশ্য কয়লা শিল্প চাইলেও তাঁদের মধ্যেও সংশয় রয়েছে ৷ তাঁরা বলছেন, "পাথর শিল্পে বহু শ্রমিক কাজ করেন ৷ কয়লা শিল্পে তাঁরা কাজ পাবেন তো ?"

local residents do not want Deucha Pachami coal mine project
দেউচা-পাচামি কয়লা খনি প্রকল্প

আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : সিঙ্গুর মডেলে দেউচা-পাচামিতে জমি অধিগ্রহণ নয়, ঘোষণা মমতার

প্রসঙ্গত, এই 3400 একর জমির মধ্যে যে শুধু বসতি রয়েছে তা নয় ৷ কয়েক শত হেক্টর বনাঞ্চল রয়েছে ৷ জলাভূমি রয়েছে ৷ সে সবই ধ্বংস হয়ে যাবে ৷ বৃহৎ এলাকা জুড়ে খোলামুখ কয়লা খনির কাজ শুরু হলে ভূ-প্রকৃতি বদলে যাবে ৷ বাড়বে ভূমিকম্পের প্রবণতা । কোথাও ভূগর্ভস্থ ভৌমজল স্তর নেমে যাবে ৷ কোথাও আবার জলস্তর উঠে আসবে ৷ এর ফলে দূষিত হবে ভৌমজল ।

সব মিলিয়ে দেউচা-পাচামির খোলামুখ কয়লা শিল্পের জমি জট অব্যাহত । এই জট কাটিয়ে শিল্পের ভবিষ্যৎ যে এখানকার বাসিন্দাদের হাতেই, তা বলাই যায় ৷

Last Updated : Dec 9, 2021, 10:34 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.