সিউড়ি, 3 এপ্রিল : জীবন সংগ্রাম দেবাশিসের ৷ সে বীরভূমের সিউড়ি 1 নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিপুর গ্রামের বাসিন্দা ৷ গতকাল থেকে শুরু হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক ৷ দেবাশিস দাস এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ৷ কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র সে (Life Struggle Of HS Examinee) ।
সে ভোরে উঠে আড়ত থেকে মাছ এনে সাইকেলে ফেরি করে বিক্রি করে ৷ শুধু তাই নয়, রাতে ক্যাটারিংয়েরও কাজ করে ৷ রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে ৷ বাবা-মা না থাকায় সে দিদার কাছে থাকে ৷ দিদাই তাকে মানুষ করেছে ।
দিদার বয়স এখন অনেক, বার্ধক্যের কারণে রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন তিনি। তাই অগত্যা সংসারের হাল ধরতে দেবাশিস মাছ বিক্রি করার পথ বেছে নিয়েছে। মাছ বিক্রি করা ছাড়াও রাতে যেদিন ক্যাটারিংয়ের কাজ পায়, সেখানেই ছুটে যায় কিছু বাড়তি টাকা রোজগারের তাগিদে। তবে এর পাশাপাশি চালিয়ে যায় তার পড়াশোনা।
এইভাবেই পড়াশোনা করে এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে সে। করোনাকালে লকডাউন জারি হলে চরম আর্থিক অনটন শুরু হয় তাদের পরিবারে। তখন পড়াশোনা ছেড়ে দেবাশিস এই রোজগারের পথকে বেছে নেয়।
আরও পড়ুন : সরকারি সাহায্য না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়েই চলে গেলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শোলা শিল্পী অনন্ত মালাকার
প্রতিদিন ভোররাতে ঘুম থেকে উঠে সিউড়িতে আড়তে ছুটে যায়। সেখান থেকে 12 থেকে 15 কিলো মাছ কিনে নিয়ে এসে সেগুলি পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করে। সেখান থেকেই যা রোজগার হয় তা দিয়েই চলে সংসার। ইতিমধ্যে করোনার অতিমারি কেটে যাওয়ায় রাজ্যে সর্বত্রই স্কুল খোলে ৷
এরপরই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানতে পারেন, দেবাশিস পড়াশোনা ছেড়ে মাছ বিক্রি করছে। এরপর স্কুলের শিক্ষকরা তার বাড়িতে গিয়ে তাকে এবং তার দিদাকে বোঝান। এরপরই দেবাশিস পুনরায় স্কুলে আসা শুরু করে এবং মাছ বিক্রির পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে ।