বোলপুর, 20 মার্চ: উত্তরাধিকার সূত্রে অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) নামে জমি রেকর্ড হওয়ায় আপত্তি নেই বিশ্বভারতীর (Visva-Bharati University)। তবে বিশ্বভারতী 1.25 একর জমি ইজারা দিয়েছে, 1.38 একর নয়। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাত। তিনি আরও জানান, 29 মার্চ জমির নথি নিয়ে সশরীরে অমর্ত্য সেন বা তাঁর প্রতিনিধি না-পাঠান তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে উচ্ছেদ বা আইনি পথেই হাঁটবে বিশ্বভারতী।
প্রয়াত আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী জমি রেকর্ড করে দেওয়ার জন্য যে আবেদন অমর্ত্য সেন করেছিলেন, তা খণ্ডন করতে পর্যাপ্ত নথি, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে জমা দিতে পারেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাই সম্পূর্ণ জমি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের নামে রেকর্ড করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। শান্তিনিকেতনে অমর্ত্য সেনের 'প্রতীচী' বাড়ির জমি বিতর্ক দীর্ঘ দিন ধরে চলছে ৷
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর অভিযোগ, ভারতরত্ন অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর 13 ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন। 1.25 একর জমি 2005 সালে অমর্ত্য সেনকে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। অমর্ত্য সেন পালটা জানিয়ে দিয়েছিলেন 1.38 একর জমিই তাঁর পিতা আশুতোষ সেনের নামে ছিল। উইল অনুযায়ী, উত্তরাধিকার সূত্রে সেই জমি বর্তমানে অমর্ত্য সেনের ৷ জমি নিজ নামে রেকর্ড করার জন্য আইনজীবী মারফত বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে আবেদন করেছিলেন অধ্যাপক সেন ৷
বিশ্বভারতী আধিকারিক ও আইনজীবীদের উপস্থিতিতে, দু'দিন এই মামলার শুনানি হয়। 17 মার্চ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অমর্ত্য সেনকে জমি ফেরতের হুঁশিয়ারি দিয়ে নোটিশ দেয় ৷ তাতে বলা হয়, বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে 29 মার্চ জমির নথি নিয়ে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে অমর্ত্য সেনকে ৷ তবে তিনি মনে করলে প্রতিনিধিও পাঠাতে পারেন।
নির্দেশ না-মানলে পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে উচ্ছেদ ও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে ৷ বিশ্বভারতীর এই নোটিশের পরেই দেখা গেল সম্পূর্ণ জমি নোবেলজয়ীর নামেই রেকর্ড করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইট করে নথি দিয়ে সেকথা জানিয়েছেন ৷ তারপরে এদিন বিকেলে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাত। এছাড়াও ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে জট অব্যাহত, উঠে এল নতুন তথ্যও
কর্মসচিব বলেন, "জমির মালিক বিশ্বভারতী। যে নথি আমরা সংবাদমাধ্যম সূত্রে পেয়েছি তাতে জমির লিজের মালিকানার নাম পরিবর্তন হয়েছে। অর্থাৎ আশুতোষ সেনের জায়গায় অমর্ত্য সেন হয়েছে । এতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই । আমাদের আপত্তি 13 ডেসিমেল জমি দখল করে রাখা নিয়ে।" তিনি আরও বলেন, "29 মার্চ হাজিরা এড়ালে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বিশ্বভারতী। এর আগেও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বহু দখলকৃত জমি উদ্ধার করেছে, উচ্ছেদ করেছে ৷ অমর্ত্য সেনের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।" যদিও বীরভূম জেলা শাসক বিধান রায় বলেন, "অমর্ত্য সেনের আবেদনের ভিত্তিতে বিএল অ্যান্ড এলআরও অফিসে শুনানি হয়েছে । তারপর আশুতোষ সেনের নাম পরিবর্তন করে অমর্ত্য সেনের নাম করা হয়েছে।"