বোলপুর, 11 জানুয়ারি: ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ শান্তিনিকেতনে নদীবক্ষে কংক্রিটের পিলার বসিয়ে চলছে নির্মাণ । দখল হয়ে যাচ্ছে কবিগুরুর লেখনীতে স্থান পাওয়া ঐতিহ্যবাহী 'আমাদের ছোট নদী' কোপাই । তৃণমূল নেতাদের মদতে 'হাঁসুলি বাঁকের উপকথা' খ্যাত কোপাই নদী দখল হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ৷ যা নিয়ে ক্ষুব্ধ ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ প্রশাসনের কোনও স্তরের অনুমতি ছাড়াই কীভাবে নির্মাণ হতে পারে, এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ আর কোপাই বেদখলে নির্বিকার প্রশাসন ৷
যদিও বোলপুর পৌরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বাপি বীরবংশী বলেন, "কোপাইয়ে একটা নির্মাণ হচ্ছে দেখে আমরা বিএল অ্যান্ড আরও-কে লিখিত ভাবে জানতে চেয়েছিলাম ৷ তারা জানায়, ব্যক্তিগত জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে । তাই কিছু বলতে পারিনি ৷"
সদ্য ইউনেস্কো থেকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেয়েছে শান্তিনিকেতন । আর সেই শান্তিনিকেতনে বেদখল হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী কোপাই নদী ৷ গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহু লেখনীতে স্থান পেয়েছে 'আমাদের ছোট নদী'। পাশাপাশি, 'হাঁসুলি বাঁকের উপকথা' খ্যাত এই কোপাই বহু ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক ৷
অভিযোগ, তৃণমূল নেতাদের মদতে শান্তিনিকেতনের গোয়ালপাড়ার কাছে সেই কোপাই নদীর বক্ষে কংক্রিটের পিলার বসিয়ে চলছে নির্মাণ । এখনও পর্যন্ত প্রায় 38টা বড় কংক্রিটের পিলার গাঁথা হয়ে গিয়েছে । ইটের বড় প্রাচীর তুলে দেওয়া হয়েছে । অথচ এত বড় নির্মাণ হলেও প্রশাসনের কোনও স্তরের কোনও রূপ অনুমতি নেই ৷ প্রশ্ন উঠেছে, একে অনুমতি ছাড়া নির্মাণ, অন্যদিকে নদীবক্ষে নির্মাণ, তা সত্ত্বেও কেন নির্বিকার প্রশাসন ।
প্রসঙ্গত, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী মিষ্টি জলের নদীর তীর চারণভূমি হয় ৷ নদীর তীরের 500 মিটার পর্যন্ত কোনও নির্মাণ করা যায় না ৷ অথচ কোপাই নদীতে তীর শুধু নয়, নদীবক্ষ দখল করে নির্মাণ শুরু হয়ে গিয়েছে ।
এই প্রসঙ্গে ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, "কত ঐতিহ্য রয়েছে কোপাইয়ের ৷ আমরা কত খেলা করেছি, পিকনিক করেছি । আর এখন শুনছি কোপাই দখল করে রিসর্ট হচ্ছে ৷ ভাবা যায় । সরকার কী করছে । এই অন্যায় বন্ধ হওয়া উচিত ।"
স্থানীয় বাসিন্দা নিমাই ঘোষ ও পরিবেশপ্রেমী তাপস মল্লিক বলেন, "চরম অন্যায় চলছে । দুর্নীতিগ্রস্তরা এক হয়েছে । শাসকদল সব জানে । অবিলম্বে এটা বন্ধ হওয়া উচিত ।"
রাজ্যের অর্থ ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এ বিষয়ে বলেন, "যদি অন্যায় হয় এখানকার বিধায়ক, সভাধিপতি আছেন, বিষয়টি তাঁরা দেখবেন ।"
আরও পড়ুন: