রারই, 8 জুন : আশাতীত সাফল্য আসেনি নির্বাচনে । নিজে পদত্যাগও করতে চেয়েছিলেন । দিদির ধমকও খেয়েছেন । কিন্তু, দমেননি । ফের একবার সংগঠন চাঙ্গা করতে স্বমহিমায় অনুব্রত মণ্ডল । গতকালই বিরোধীদের হুমকি দিয়েছিলেন, "হাত-পা ভেঙে দেব ।" আজ বললেন, "কী করে জিততে হয় আমাদের জানা আছে ।" সেইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বীরভূমে সব আসনে না জিতলে দল করব না ।
চড়াম চড়াম থেকে গুড় বাতাসা, বোম মারুন থেকে পাঁচনের বাড়ি- ডায়লগে এমনিতেই হিট অনুব্রত । কাজেও করে দেখান । পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একাধিক আসন জিতিয়েছেন । লোকসভাতেও দুই আসনে জয় এসেছে তৃণমূলের । তবে, রেজ়াল্ট আগের থেকে খারাপ । তাই, একটু 'হতাশ' অনুব্রত । তবে, কর্মীদের সামনে হতাশা তুলে ধরতে চাইছেন না । প্রতিদিন বৈঠক করছেন । সংগঠনের কাজকর্ম সারছেন । তাঁর টার্গেট যে 2021 ।
আজ মুরারইয়ের ভাদিশ্বর মোড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ধিক্কার মিছিল হয় । পরে একটি সভা হয় । সেখানে অংশ নেন অনুব্রত । তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, নতুন কোনও রসায়ন তৈরি হচ্ছে ? অনুব্রত বলেন, "বোলপুর লোকসভায় একটি বিধানসভায় সামান্য ভোটে আমি পিছিয়ে আছি । ওটা আমি 2021-এ ঠিক করে দেব । সুতরাং, কোনও রসায়ন নয় । কী করে জিততে হয় আমাদের জানা আছে ।"
রাজনৈতিক মহলের মত, বীরভূমে BJP-র প্রভাব বাড়ছে । যদিও তা ধর্তব্যের মধ্যে আনছেন না অনুব্রত । বলছেন, "বীরভূমে কোথায় BJP আছে আমার জানা নেই । গতকাল সাঁইথিয়ায় মিটিং করেছি । সাংবাদিকরা তো ছিল । কত লোক হয়েছিল দেখেছেন তো ? আমি আবার বলছি । দল করতে নিষেধ নেই । কিন্তু ঝামেলা করলে তো ছাড়ব না । দল করার অধিকার সকলের আছে । ওরাও করবে ।"
তিনি আরও বলেন, "বীরভূমে বিরোধী দল বলে এখনও কেউ নেই । এটা হচ্ছে ছাগলে ধান খাওয়ার মতো । জমির মালিক না থাকলে ছাগল ঢুকে যেমন সাইড দিয়ে ধান খেয়ে ফেলে, এখানেও সেরকম হয়েছে । জমির মালিক ছিল না । তাই নির্বাচনে এরকম হয়েছে । 2021-এ ঠিক করে দেব । 2021-এ বীরভূমে 11-তে 11 না করতে পারলে দল করব না ।"
এর আগেও অবশ্য অনুব্রত দল ছাড়ার কথা বলেছিলেন । সেবার বলেছিলেন, আসানসোলে বাবুল জিতলে দল ছাড়ব । পরে অবশ্য বাবুলই জেতেন । তখন ডিগবাজি খেয়ে অনুব্রত বলেন, "রাজনীতিতে অনেক কিছুই বলতে হয় ।" এবারও অবশ্য তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বললেন, "বীরভূম, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদের আসন (অনুব্রতর দায়িত্বে থাকা) না জিতলে দল করব না ।"
সভা থেকে জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, "আপনারা যা চাইবেন তা পাবেন । উন্নয়ন দাঁড়িয়ে থাকবে না । উন্নয়ন আবার হবে । আমি 1 ঘণ্টা 25 মিনিটে বোলপুর থেকে মুরারইতে ঢুকে গেলাম । এটা চিন্তা করা যায় । উন্নয়নের জন্য এটা সম্ভব হয়েছে । আমার ওপর 14টা বিধানসভার দায়িত্ব আছে । আমি জিতে দেখাব । আমি হারতে জানি না । মানুষ উন্নয়নের স্বার্থে ভোট করবে ।"